“ঘটে যা ঘটুক তোমার জীবনে - বল ধন্য যীশু” Whatever happens in life let Jesus be glorified.


 জীবনে যা-কিছুই ঘটুক না কেন, বাঁচি-মরি আমরা প্রভুরই !!

“কারণ আমাদের মধ্যে কেহ আপনার উদ্দেশ্যে জীবিত থাকে না, এবং কেহ আপনার উদ্দেশে মরে না। কেননা যদি আমরা জীবিত থাকি, তবে প্রভুরই উদ্দেশে জীবিত থাকি; এবং যদি মরি, তবে প্রভুরই উদ্দেশ মরি। অতএব আমরা জীবিত থাকি বা মরি, আমরা প্রভুরই। কারণ এই উদ্দেশ্যে খ্রীষ্ট মরিলেন ও জীবিত হইলেন, যেন তিনি মৃত ও জীবিত উভয়েরই প্রভু হন।” রোমীয় ১৪:৭-৯ পদ 

“অথবা তোমরা কি জান যে, তোমাদের দেহ পবিত্র আত্মার মন্দির, যিনি তোমাদের অন্তরে থাকেন, যাঁহাকে তোমরা ঈশ্বর হইতে প্রাপ্ত হইয়াছ? আর তোমরা নিজের নও, কারণ মূল্য দ্বারা ক্রীত হইয়াছ। অতএব তোমাদের দেহে ঈশ্বরের গৌরব কর।” ১করিন্থীয় ৬:১৯-২০ পদ 

পবিত্র শাস্ত্রের এই বাণীগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনে যা-কিছু হোক না কেন, ঘটুক না কেন, আমরা জীবিত থাকি আর মরি, আমরা প্রভুরই, প্রভুর গৌরবে আমরা। 

এটাই সত্য যে খ্রীষ্টিয়ান হিসাবে আমরা বেঁচে থাকতে খ্রীষ্টকে বাদ দিয়ে জীবনযাপন করতে পারি না।
জীবনে তাঁর সাথেই আমাদের বেঁচে থাকতে হয়; মরনেও তাঁকে সাথে নিয়েই।
খ্রীষ্টিয়ান হিসাবে বেঁচে থাকার জন্য আমরা টেবিলে সাজানো নানান পদের খাবারের উপর জীবনটা ছেড়ে দেই না।
খ্রীষ্টিয় জীবনে বেঁচে থাকার জন্য খাবারদাবার কখনো সেই মানদণ্ড হতে পারে না।
কিন্তু বাস্তবতা হলো আমরা খ্রীষ্টের উপর জীবনটা উজার করে দেই, তিনি আমাদের বেঁচে থাকার জীবনের পুষ্টি।
এটাই হলো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
দিন আসছে, সে দিন খুব কাছেই, যে দিনে আমাদের বেঁচে থাকায় যা-কিছু করেছি তার হিসাব দিতে হবে।

আমরা যদি বাঁচি আমরা প্রভুতেই বাঁচি, . . 
তাহলে কেন আমরা এখনো জীর্ণাবস্থার রোগব্যাধিপূর্ণ এই পৃথিবীতে আছি?
জীবনের উদ্দেশ্য কী, খ্রীষ্টিয় জীবনের লক্ষ্য কী?

এ প্রশ্নের উত্তর সহজ।

জীবনের উদ্দেশ্য হলো যেন .. আমরা সেই বীজ (ঈশ্বরের বাক্য) বপন করি।
মানুষের অনুর্বর শুষ্ক হৃদয়ের হালবাহক আমরা, আমরা এই অন্ধকার জগতের জ্যোতি, এই অরুচিকর বিস্বাদ জগতে আমরা স্বাদযুক্ত লবনস্বরূপ যাতে জীবন হয় উপভোগ্য, অমৃত মধুর!

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খ্রীষ্টের গৌরব করতে আমরা এখানে।
আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কর্ম করতে আমরা এখানে এবং খ্রীষ্টের সহকর্মী হতে আমরা এখানে!!
আর আমরা যদি মরি, আমরা খ্রীষ্টেতে মরি।

জীবনের অনেক সময়ে অনেক কিছুতে আমরা সাহায্য করতে পারছি না, তবুও লক্ষ্য করে দেখছি কীভাবে মৃত্যু ধেয়ে আসছে।
অনেকের জন্য মৃত্যু ধীরে ধীরে, অনেকের মরণ খুব তারাতারি।
অল্প বয়সেই হোক আর অনেক বয়সেই হোক, মৃত্যু হচ্ছেই।
অনেকে মারা যান বিনা যন্ত্রণায়, অনেকে মারা যান প্রচণ্ড যন্ত্রণায়, বহু কষ্টে আর ধুকেধুকে।

রোমীয় ১৪:১২ পদে লেখা আছে :
“আমাদের প্রত্যেক জনকে ঈশ্বরের কাছে আপন আপন নিকাশ দিতে হইবে।”

আমরা আমাদের ফেলা আসা দিনগুলোর কথা চিন্তা করি -
আমরা কেমন কর্ম করছি, কেমন আচরণ করছি, কীভাবে ব্যবসা চালাচ্ছি, কেমন চাকুরী করছি, কী বলছি, কী করছি, কী ভাবছি, কীভাবে বেঁচে আছি, যার সমস্ত কিছু নিয়ে একদিন ঈশ্বরের সম্মুখীন হতে হচ্ছে আর জীবনের হিসাব দিতে হচ্ছে।
এই চিন্তাই আমাদের ভাবিয়ে তোলে, ভাবতে অন্তরটা হুহু করে উঠে!

আমরা খ্রীষ্টিয়ানরা যদি ঐরকম কিছু ভাবি তাহলে মনে হবে আমরা ওভাবে ঐসব কিছুতে আর প্রভাবিত হবো না যা আমরা কমবেশি করে থাকি।
তবুও আমরা হবো আন্তরিক নম্র শান্ত ভদ্র, ভালোবাসবো, ক্ষমা করার ইচ্ছা করবো।

বাইবেলের ঐ কথাগুলো আমাদের যা স্বরণ করিয়ে দেয়, যা কিনা জগত এসব বিষয় তলিয়ে দেখে না আর আমাদের বিষয়ে বুঝতেও পারে না যে আমরা কার জন্য কী করছি।
আমাদের সমস্ত কিছু ঈশ্বরকে নিয়েই কিন্তু আমাদের নিজেদের বিষয়ে নয়।
আমাদের সমস্ত কিছুতে ঈশ্বরের সম্মান ও তাঁর গৌরব বয়ে আনে।

“যে কেহ আমার নামে আখ্যাত, যাহাকে আমি আমার গৌরবার্থে সৃষ্টি করিয়াছি, আমি তাহাকে নির্মাণ করিয়াছি, আমি তাহাকে গঠন করিয়াছি” যিশাইয় ৪২:৭ পদ

“সেই যে প্রজাবৃন্দকে আমি আমার নিমিত্ত নির্মাণ করিয়াছি, তাহারা আমার প্রশংসা প্রচার করিবে” যিশাইয় ৪৩:২১ পদ

এতক্ষণে যা বলা হলো আপনি যদি এসব বিশ্বাস না করেন, আমি আমার বিশ্বাসে বলছি, আপনাকে অবশ্যই একদিন ঈশ্বরের সম্মুখীন হবার সুযোগ হবে এবং তাঁকে আপনার খ্রীষ্টেতে জীবনযাপন না থাকার কৈফিয়ত দিতে হবে।
আপনার নিজের জন্য নিজেকে ওকালতি করতে হবে!!

পাপীদের মনে রাখতে হবে . . আমরা প্রভু ঈশ্বরের দেওয়া খ্রীষ্ট যীশুতে নতুন জীবন গ্রহণ করতে পারি আর লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষদের আমাদের সাথে একত্র করতে পারি। আমেন!!

হয়তো-বা ভেবেভেবে অবাক হচ্ছেন যে কখন কীভাবে আর কী অবস্থায় মারা যাবেন।
আর এও হয়তো ভাবছেন যে মানুষদের আপনার যা-কিছু বলার, যা-কিছু করার তার জন্য এখনো হাতে যথেষ্ট দিন পড়ে আছে।
আর এও হয়তো ভাবছেন তাদের কথাও শোনার জন্য আমার এখনো অনেক দিন পড়ে আছে।
আপনি নিশ্চয় অনেকের চরম পরিণতি দেখেছেন যাদেরকে বলতে সুযোগ নেননি যা আপনার আগেই তাদেরকে বলার প্রয়োজন ছিল, কিন্তু আপনার প্রিয় মানুষটি চলে গেলেন।

ঈশ্বর শুধু আমাদের জীবন নিয়ন্ত্রণই করেন না কিন্তু কীভাবে আমরা মারা যাই, কখন মারা যাই তাও!

জন ক্যালভিনের চিন্তা : “যার জন্য আমরা বেঁচে থাকি আর জীবনযাপন করি আর মৃত্যুবরণ করি তা আমদের জানানো হয়েছে।
সেজন্য যদি তিনি জীবনে বারবার দুঃখ বেদনা দীর্ঘায়িত করেন, আমরা আমাদের সময়ের আগে ত্যাগ করতে চাইবো না।
কিন্তু তিনি যদি আমাদের জীবনের মূখ্য সময়ে হটাৎ স্মরণ করেন, আমরা সব সময়ই আমাদের চলে যাবার জন্য প্রস্তুত থাকব।”

“আমরা যদি ঈশ্বরকে ভালোবাসি ও তাঁর পরিকল্পনা অনুসারে চলি, তবে জানি যে আমাদের জীবনে যা কিছু ঘটে, তা আমাদের মঙ্গলের জন্যই ঘটে।” রোমীয় ৮:২৮ পদ। 

কারণ . . “. . সদাপ্রভু বলেন, আমি তোমার পক্ষে যে সকল সঙ্কল্প করিতেছি, তাহা আমিই জানি; সেই সকল মঙ্গলের সঙ্কল্প, অমঙ্গলের নয়, তোমাদিগকে শেষ ফল ও আশাসিদ্ধ দিবার সঙ্কল্প” যিরমিয় ২৯:১১ পদ।

সাধু পৌলে কথা . . “অনেক ক্লেশের মধ্য দিয়ে আমাদিগকে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করিতে হইবে” প্রেরিত ১৪:২২ পদ।

জীবনে যা-কিছুই ঘটুক না কেন, বাঁচি-মরি আমরা প্রভুরই !!
“ঘটে যা ঘটুক তোমার জীবনে - বল ধন্য যীশু” 

ঈশ্বরের আশির্বাদে থাকুন!!

Comments

Popular posts from this blog

উপবাস - বাইবেলের আলোকে উপবাস

প্রতিমা পূজা এমনকি মূর্তি সম্পর্কে বাইবেল কী বলে? What does the Bible says about idolatry or even image?

ঈশ্বর কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?