আজ কি আপনি নিজেকে ভাগ্যবান Lucky মনে করেন? আমি ভাগ্যবান নই, আমি ভাগ্যকে বিশ্বাস করি না, আমি ঈশ্বরের, আমি ঈশ্বরের আশির্বাদের পাত্র।


২০২০ সালে নভেম্বর মাসে সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল থেকে বের হবার সময় একজন নার্স আমাকে বলেছিলেন, “You are Lucky Sir, আপনার ভাগ্যটা ভালো”, আমি তাকে উত্তর দিলাম, “I am not Lucky, I am Blessed, I don't believe in Luck, I believe Lord Jesus Christ, Amen !!

Luck/Lucky কিংবা unlucky, Good luck, bad luck এর অর্থ অনেকভাবে করা যায় যেমন সৌভাগ্য, সৌভাগ্যবান, ভাগ্যবান, ভাগ্যক্রমে, ভাগ্যচক্রে, ভাগ্যগুণে, ভাগ্যজয়ী, ভাগ্যদোষে, ভাগ্য পরিক্ষা, ভাগ্যিস, ভাগ্যের ফের, ভাগ্যের বিধান, জূয়া, অদৃষ্ট, ভাগ্য ভালো, কপাল ভালো, কপাল জোরে, কপাল ভাঙ্গা, কপালের দোষে, নিয়তি, দৈব, অভাগা, হতভাগ্য, হতভাগা, ভাগ্যহীন, দুর্ভাগ্যক্রমে, দুর্ভাগ্য/দুর্ভাগা, সৌভাগ্যক্রমে, বরাতজোরে ইত্যাদি ইত্যাদি, এমনকি ভাগ্যদেবতাকেও উল্লেখ হয় এতে।
সৌভাগ্য, দুর্ভাগ্য, ভাগ্যহীন, ফাঁটাকপাল, এমনকি ভাগ্য (Luck) এ সবকি আপনার পিছে পিছে থাকে - এসব আসলেই কি আপনার ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করে? এ সব আসলেই কি ফলে?
আমাদের দেশে অনেকেই তাবিজকবজ, কবিরাজ, গোনক, ঝাড়ফুক, তুকতাককে বিশ্বাস করেন। কোনো না কোনো কিছু একটাতে বিশ্বাস করেন যা তাদের ভাগ্য/কপাল খুলে দেবে বলে মনে করেন। এসব অলৌকিক অন্ধ বিশ্বাসে তারা মনে করেন যে তাদের ভালো হবে, ফাঁড়া কেটে যাবে, সুস্থ্য হয়ে উঠবে, মুশকিল আসান হবে। বাইবেলের দৃষ্টিতে কি এসব গ্রহণ করা যায়? আমরা কি এভাবে ভাগ্য দেবতার (god of fortune - দৈব্য, ভাগ্য, অদৃষ্ট, বরাত, বিধি, কপাল, নিয়তি, জ্যেতিষী) নামে কারোর “সৌভাগ্য”, ভাগ্য ভালো হওয়াটা কামনা করতে পারি? আমরা কি এই ভাগ্য দেবতার শিকারি? অনেকে যেমন ভাগ্য দেবদেবীতে বিশ্বাসী।
আমাদের দেশের অনেকেরই এমন এক সময় আসে যখন তারা ভাগ্যটার উপর ছেড়ে দেয় আর বলে ভাগ্যে যা হবার তাই হবে। তারা এও বলেন, ভাগ্যের লিখন খণ্ডানো যায় না।
ভাগ্য, Luck-টা কী আসলে?
ভাগ্যের ধারণাটা কিংবা দৈব, অদৃষ্ট, বরাত, বিধি, কপাল, নিয়তি, সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য কখনোই একচেটিয়া সভ্য মানুষের ঐতিহ্যের নয়। যদিও আমরা এ সব মানব ইতিহাসে যুগ যুগ ধরে চলে আসতে দেখছি।
আমরা অনেক সময় এমন সব কথাও শুনতেও পাই যে “চাকরিতে তোমার ভাগ্যটা ভালো হোক”, “পরিক্ষায় তোমার সৌভাগ্য কামনা করি।” যদিও অনেকে ভালো কোনো ঘটনা বা ভালো কাজের ফলের আশায় এ সব ভাব প্রকাশে ভালো বোধ করেন। আসলে কোনো ভাগ্যে বিশ্বাসে নয়, তবে অন্যেরা অনেকে ভাগ্যের ধারণা অত্যন্ত গুরুতরভাবে, সাংঘাতিকভাবে নেয়।
অনেকে ভাগ্যের উপর বিশ্বাসে কোনো ক্ষতি হয় না বলে মনে করে থাকেন। যেমন শুনেছি কোনো একটা তারা (নক্ষত্রের) উপর আশা করা, ঐ দিকে কিছু নিক্ষেপ করা, ভালোভালো আশা করা, কিছু হালকা সস্তা অলংকার, ক্ষুদ্র মনোহারী সামগ্রী সংগ্রহ করেন কিংবা পরী, পরীর গল্প, পরীর ন্যায় (সুন্দর, কোমল) এ ধরণের রূপকথায় মন দেয়, এছাড়াও অনেক কিছুতে। কিন্তু এখন এ বিষয়ে বিশেষ জোর দিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন।
যুগ যুগ ধরে আমাদের সমাজে ভাগ্য/Luck একটা দেবদেবীর মতো হয়ে গেছে। ভাগ্য দেবতা (god of fortune) বলে আছেন কেউ এমন বিশ্বাস অনেকেরই। আপনার নিয়তি, অদৃষ্ট, দুর্ঘটনা, সুস্থ্য হওয়া, পরিক্ষা, চাকুরি খোঁজা, বেতন বৃদ্ধি, সংসারের শান্তি, কাউকে বশ করা, এমনকি শনি-মঙ্গলবার ঘর থেকে বের হতে চাইলে ভালোভাবে গন্তব্যে পৌছিবার মতো ভাগ্যের বিষয়গুলো মানুষের জীবনে একটা সমাধানের মতো একটা বিশ্বাসের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। মানুষেরা বিশ্বাস করেন যে ভাগ্য/Luck সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখে আর এর প্রমাণ হয় বিভিন্ন লোকদের জন্য বিভিন্ন রকমের সুযোগের যোগানে। এ বিষয়ে আলোচনার প্রয়োজন। চিন্তা করে দেখুন যে অনেকে 13 নম্বারটা পছন্দ করেন না। এই 13 নম্বারটা অনেকের কাছে একটি কুফা, এই 13 নম্বারটা অনেকে দুর্ভাগ্য মন্দভাগ্য মনে করে (unlucky 13)। তবে অনেকেরই তো এ তারিখে জন্ম হয়, জন্মদিন হয়, ভালো কাজও হয়, এদিনে অনেক সুখবর তো আসে।
যাহোক বন্ধুগণ বাইবেলে কোনো ভাগ্য Luck বলে কিছু নেই
বাইবেলে আমরা দেখতে পাই যে ভাগ্যের উপর বিশ্বাস করার মতো কোনো কিছুই নাই এখানে। দশ আজ্ঞার প্রথম আজ্ঞাতে, ঈশ্বর ঘোষনা করেছেন “আমার সাক্ষাতে তোমার অন্য দেবতা না থাকুক” (যাত্রাপুস্তক ২০:৩ পদ), অর্থাৎ এমনকি এই ভাগ্য দেবতাও নয় (god of fortune)। ঈশ্বরের এই আদেশে মনোযোগ দিয়ে দেখলে আমরা জানতে পারবো যে আমাদের জীবনে বাইবেলের ঈশ্বর থেকে অর্থাৎ তাঁর উপরে উচ্চ কোনো কিছুই গুরুত্বপূর্ণ নাই, তাঁর অগ্রাধিকারে কিছুই নাই! প্রথম আদেশটি আমাদের সর্তক করে দেয় যে কোনো প্রকার ধর্ম সম্বন্ধীয় কিংবা দার্শনিকতা, জগতের চিন্তাধারা/মত একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরের থেকে আমাদের জীবনে কিছু করে কিংবা অন্য কোনো কিছুর উপর নির্ভর করতে যা আমাদের জীবনে এই তালগোল পাকানো জগত শিক্ষা দেয় সেই সমস্ত কিছু গ্রহণ না করতে একেবারেই সতর্ক করে।
যেমন অনেকেই করেন, রং-বেরঙের মাটির কাঠের, মেটালের এবং পাথরের তৈরি করা দেবতারে প্রতিকৃতি আকা বা রূপদান করা একেবারে ও চরম বোকামী। আপনি দেখবেন যে আজকাল ইয়াং জেনারেসনদের মধ্যে অনেকে তাদের গলায় কালো শুতায় কিছু বস্তু ঝোলানো থাকে, এসব দেখতে উচু উচু শিংয়ের রামছাগলের মতো দেখতো কিম্বা অদ্ভূত কিছুর মূর্তি থাকে, আপনি অনেক সময় বুঝতে পারবেন না এসব কী, আর দেখবেন তারা সময় সময় এটাকে চুমু দেয় ভাগ্য অনুকূলে থাকার জন্য। যাহোক আদিকালের বাইবেলের জাতি ইস্রায়েল এবং যিহূদীদের তৈরি করা যেমন মেকি জাল করা দেবদেবী যিহূদীদের ভূমির বহু জায়গায় করা হতো। দেখুন যিরমিয় পুস্তকের ২:২৭-২৮ পদে ”বস্তুতঃ তাহারা কাষ্ঠকে বলে, তুমি আমার পিতা; শিলাকে বলে, তুমি আমার জননী; তাহারা আমার প্রতি পৃষ্ঠ ফিরাইয়াছে, মুখ নয়; কিন্তু বিপদকালে তাহারা বলিবে, ‘তুমি উঠ, আমাদিগকে নিস্তার কর’। কিন্তু তুমি আমার জন্য যাহাদিগকে নির্মাণ করিয়াছ, তোমার সেই দেবতারা কোথায়? তাহারাই উঠুক, যদি বিপদকালে তোমাকে নিস্তার করিতে পারে; কেননা হে যিহূদী, তোমার যত নগর, তত দেবতা।” ২৮ পদটি আবারো দেখুন “. . যদি বিপদকালে তোমাকে নিস্তার করিতে পারে।” ঈশ্বর তাদের এবং আধুনিক মানবজাতির অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন (২৮ পদ তুলনা করুন)। আজও আমাদের লোকেরা এখনো অর্থহীন আর অকাজে আর নিজেদের রক্ষার জন্য প্রাণহীন, জড় ও নীরস কিছুতে নির্ভর করছেন যেমন - কিছু হাতিয়ারের মতো বস্তু সংগ্রহ, অর্থ এমনকি ক্রুশে শক্তি দেখতে সত্য সত্যই মূর্তি দর্শন করেন, স্পর্শ করেন কপালে ছোঁয়ান, ধর্মীয় সভা স্থানের মাটি, গাছের ছাল, পানি, কাঠ, পাথর ব্রোঞ্জে, অদ্ভুত কিছুতে এবং সৌভাগ্যের আকর্ষণে বা সেরকম কোনো জাদুমন্ত্রে এখনো তারা এসবে শিকারী।
ভাগ্যকে নির্ভর করায় ঈশ্বরের প্রতি মানুষের এই প্রত্যাখানে তিনি তাদের থেকে দুঃখ পাচ্ছেন। তাদের তৈরি এই সমস্ত অদৃষ্ট কিছুর কাছে খাবার/ফলমূল, অর্থকড়ি, পশুপাখি উৎসর্গ করে বলছেন ‘সৌভাগ্য’ good luck আর নিয়তি/অদৃষ্ট। যিশাইয় ৬৫:১১ পদ “কিন্তু তোমরা যাহারা সদাপ্রভুকে ত্যাগ করিতেছ, আমার পবিত্র পর্বত ভুলিয়া যাইতেছ, ভাগ্য (দেবের) জন্য মেজ সাজাইয়া থাক, এবং নিরূপণী (দেবীর) উদ্দেশে মিশ্র সুরা পূর্ণ করিয়া থাক।”
আদৌ কোনো ভাগ্য-ই নাই
অনেকে বলে থাকেন, “আমি জানি ভাগ্যের কোনো অস্তিত্ব নাই, কিন্তু সৌভাগ্য আছে!” হয়তো তারা মেনে নিচ্ছেন যে তা সত্বেও ভাগ্য থাকতেও পারে - কিংবা তারা জানেন না যে কারোর ভালো আকাঙ্ক্ষা করাটা, কাউকে মঙ্গল ও শুভ কামনা করাটা যে কীভাবে করতে হয়। তারা সাধারণভাবে বলতে পারেন যে, তুমি “ভালো করো (do well)” বা তোমার জন্য “শুভকামনা রইল (all the best)”। কিংবা তারা ঈশ্বরের দিকে লক্ষ্য রেখে বলতে পারেন, “ঈশ্বর তোমার সহায় হউন” কিংবা “ঈশ্বর তোমাকে আশির্বাদ করুন” (ঠিক যদি কিনা তিনি সত্যিকারেরই তা-ই চেয়ে থাকেন)।
তা সত্ত্বেও, সমস্ত শক্তি ও ক্ষমতা ঈশ্বরের সাথে, ভাগ্যের (ভাগ্য দেবতার/god of fortune) কাছে নয়। বাইবেল আমাদের সেরকমই বলে : “ঊর্দ্ধদিকে চক্ষু তুলিয়া দেখ, ঐ সকলের সৃষ্টি কে করিয়াছ? তিনি বাহিনীর ন্যায় সংখ্যানুসারে তাহাদিগকে বাহির করিয়া আনেন, সকলের নাম ধরিয়া তাহাদিগকে আহ্বান করেন; তাঁহার সামর্থের আধিক্য ও শক্তির প্রাব্যল্য প্রযুক্ত তাহাদের একটাও অনুপস্থিত থাকে না। হে যাকোব, তুমি কেন কহিতেছ, হে ইস্রায়েল, কেন তুমি বলিতেছ, আমার পথ সদাপ্রভু হইতে লুক্কয়িত, আমার বিচার আমার ঈশ্বর হইতে সরিয়া গিয়াছে? তুমি কি জ্ঞাত হও নাই? তুমি কি শুন নাই? অনাদি অনন্ত ঈশ্বর, সদাপ্রভু, পৃথিবীর প্রান্ত সকলের সৃষ্টিকর্তা ক্লান্ত হন না, শ্রান্ত হন না; তাঁহার বুদ্ধির অনুসন্ধান করা যায় না।” (যিশাইয়া ৪০:২৬-২৮ পদ)
আমাদের জীবনের কোনো ঘটনায় luck অর্থাৎ ভাগ্য কথাটি বলায় কোনো ক্ষতি হয় না বলে অনেকে সেরকম বুঝাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু পিতা ঈশ্বর তাঁর মানুষদের জন্য অভিমান করছেন। তিনি আমাদের সবাইকে ভালোবাসেন এবং আমাদের প্রত্যেকের ভবিষ্যতের সমস্ত কিছুতে ভালো চাইছেন, তিনি সবার মঙ্গল চাইছেন কারণ তিনি মঙ্গলময় ঈশ্বর, তিনি মঙ্গল করেন, তিনিই আমাদের ভবিষ্যচিন্তা করেন। ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে আমরা কোনো মিথ্যা ও কল্পকাহিনিতে, আর প্রচলিত ঐসব কথায় যা আমরা যেকোনো কিছুর উপর নির্ভর করতে ঐ দিকে যাবো না, কিন্তু ঈশ্বরকে। আমাদের সমস্ত কিছু যা আছে তা শেষ পর্যন্ত ঈশ্বরের থেকে আসে। একমাত্র নির্ভরযোগ্য নিশ্চয়তা যা আমাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত থাকে আমাদের সৃষ্টিকর্তার সাথে সম্পর্ক থাকায়, আর এতে না কোনো অলক্ষুণে, অশুভ ভাগ্য, ভাগ্যে মঙ্গল কামনা, জ্যোতিষী কিংবা জাদুটেনায় নয়, এমনকি পরী, বামন ভুতপ্রেতে নয়, কচ্ছপ, মাছ, মন্ত্রতন্ত্রেও নয়, কোনো ভাগ্য দেবতায় নয়।
ঈশ্বর সব সময়ই ভাগ্যকে হটিয়ে দেন, ভাগ্যকে পরাজিত করেন, ভাগ্যক দূরে সরিয়ে দেন।
ঈশ্বর আমাদের বুঝাতে চাইছেন যে আমরা যেন কখনই আমাদের আরাধনা তাঁর কোনো সৃষ্টি বস্তুর প্রতি না করি যা তিনি সৃষ্টি করেছেন, বরং এসব আমাদের জীবনে আশির্বাদের উৎস হিসাবে বিবেচনা করুন। সেই সৃষ্টিকর্তাকে আরাধনা করুন - কখনই তাঁর সৃষ্টিকে নয়। তিনিই একমাত্র অলৌকিক্ কাজকর্মকারী ঈশ্বর যিঁনি ঈশ্বরের রাজ্য আশির্বাদ করেন, আশা করেন আর অনন্ত জীবনের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতায় ব্যবস্থা করেন।
এ পৃথিবীতে রংধনু, জল-স্রোত, জলপ্রপাত/ঝরনা, নদী, গাছ, লতাপাতা, ফল, ফুল, নক্ষত্র আর অন্যান্য বাকী সৃজনশীল সৃষ্টি আমাদের জন্য উপভোগ করতে আর এসবে বসবাসের জন্য একটি চমৎকার আর সুন্দর পরিবেশ হিসাবে ব্যবহার করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে এ সব বপন করা হয়েছে। আমরা সৃষ্টির কোনো দিকটার দিকে মাথা নত করি না, এ সব কিছুর কাছে প্রার্থনা করি না বা এ সবকে অনুরোধ করি না। প্রকৃতির কাছে প্রার্থনা করার কিছুই নাই, এ সব আমাদের মতো তারাও সৃষ্ট।
তাহলে আপনি কোথায় আপনার আস্থা, বিশ্বাস আর আশা রাখছেন? বিষয়টি আমাদের প্রত্যেকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
আমাদের জন্য ঈশ্বরের চূড়ান্ত পরিকল্পনা আর তাঁর আকাঙ্ক্ষা হলো আমরা তাঁর অনন্ত পরিবারের আর তাঁর রাজ্যে বেঁচে থাকি।
“প্রিয়তমেরা, এখন আমরা ঈশ্বরের সন্তান; . . আমরা জানি, তিনি যখন প্রকাশিত হইবেন, তখন আমরা তাঁহার সমরূপ হইব; কারণ তিনি যেমন আছেন, তাঁহাকে তেমনি দেখিতে পাইব” (১যোহন ৩:২ পদ)।
এই উদ্দ্যেশেই আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে! এর সাথে ভাগ্যে (ভাগ্য দেবতার god of fortune) এর কোনো সম্পর্ক নাই! ভাগ্যের কথা টেনে মঙ্গল কামনা করা, সৌভাগ্যের ইঙ্গিত বহন করা, তারা/নক্ষত্রে, সূর্যপুজায় শুভেচ্ছা বা মোমবাতি/আলো প্রবাহিত করার সময় এই শুভ কামনা করাকে কেবল আমাদের স্রষ্টার সাথে আমাদের সম্পর্ক একদিকে কাত করে দেওয়া হলো, তাঁর দিকে আড়চোখে ট্যারাচোখে তাকিয়ে তাঁকে অবজ্ঞা করা হলো, তাঁর আশির্বাদকে কলুষিত করা হলো আর আপনার দ্বারা শয়তান জিতে গেল। শয়তান সব সময়ই চাইছেন যেন আপনি ঈশ্বরের আশির্বাদকে মনে না রাখেন কিন্তু ভাগ্যদেবতাকে স্মরণ করেন। ঈশ্বরের প্রতি কী সাংঘাতিক বিশ্বাসঘাতকতা!! সবকিছুই পিতা ঈশ্বর করেন, ভাগ্যের কোনো দেবতায় নয়।
আশির্বাদের একটি উৎস আছে। ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশে একটি উপায় আছে। একটি ত্যাগ রয়েছে যা আমাদের ব্যক্তিগত পাপের শাস্তি সরিয়ে দেন, সেই প্রভু যীশু খ্রীষ্ট। আমেন !!
একমাত্র ঈশ্বর সেই সত্য উৎস - ভাগ্য দেবতায় নয়!!
পাঠ করুন : সাধু দায়ূদের ঈশ্বরের প্রতি আর্তনাদ . .
“আমার মুখের বাক্য ও আমার চিত্তের ধ্যান তোমার দৃষ্টিতে গ্রাহ্য হউক, হে সদাপ্রভু, আমার শৈল, আমার মুক্তিদাতা” (গীতসংহিতা ১৯:১৪ পদ)।
“যাহারা আমার ধার্মিকতায় প্রীত, তাহারা আনন্দধ্বনি করুক, আহ্লাদিত হউক, নিত্য নিত্য বলুক, সদাপ্রভু মহিমান্বিত হউন, যিনি নিজ দাসের কুশলে প্রীত” (গীতসংহিতা ৩৫:২৭-২৮ পদ)।
“তুমি সদাপ্রভুতে আপনার ভার অর্পণ কর; তিনিই তোমাকে ধরিয়া রাখিবেন, কখনও ধার্মিককে বিচলিত হইতে দিবেন না” (গীতসংহিতা ৫৫:২২ পদ)।
“আইস, আমরা প্রণিপাত করি, প্রণত হই, আমাদের নির্মাতা সদাপ্রভুর সাক্ষাতে জানু পাতি। কেননা তিনিই আমাদের ঈশ্বর, আমরা তাঁহার চরাণির প্রজা ও তাঁহার হস্তের মেষ। আহা! অদ্যই তোমরা তাঁহার রব শ্রবণ কর!” (গীতসংহিতা ৯৫:৬,৭ পদ)
“তিনি আপন প্রজাদের কাছে মুক্তি পাঠাইয়াছেন; তিনি চিরকাল তরে আপন নিয়ম স্থির করিয়াছেন; তাঁহার নাম পবিত্র ও ভয়াবহ” (গীতসংহিতা ১১১:৯ পদ)।
“উহাদের প্রতিমা সকল রৌপ্য ও স্বর্ণ, মনুষ্যের হস্তের কার্য” (গীতসংহিতা ১১৫:৪ পদ)
বলুন “ঈশ্বরের আশির্বাদ” আমেন ! আমেন !! আমেন !!!

Comments

Popular posts from this blog

উপবাস - বাইবেলের আলোকে উপবাস

প্রতিমা পূজা এমনকি মূর্তি সম্পর্কে বাইবেল কী বলে? What does the Bible says about idolatry or even image?

ঈশ্বর কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?