যুবক-যুবতীরা কেন চার্চ বিমুখ?
এই লেখাটা ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা।
যুবক-যুবতীরা কেন চার্চ বিমুখ? এ ক্ষেত্রে চার্চের করণীয়:
আজ খ্রীষ্টিয়ান যুবক-যুবতীরা চার্চে আসতে চায় না, তারা চার্চ বিমুখ, চার্চের উন্নয়নমূলক কোনো কাজে তাদের আগ্রহ নেই, তারা মাণ্ডলিক যেকোনা কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখতে চাচ্ছে।
কেন তাদের এই অনিহা? এর ফলে কি খ্রীষ্টিয়ান সমাজে কোনো প্রভাব পড়তেছে?
এর প্রভাবে তাদের উপর আবার বহু প্রকার কু-প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। পত্রিকা খুললে দেখা যায় খ্রীষ্টিয়ান যুব সমাজ মদকতায় আসক্ত, নিজের ধর্ম বিশ্বাস বিসর্জন দিয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে কিংবা মেয়েকে নিজেদের মতো করে কিংবা পালিয়ে বিয়ে করছে। চুরি, করছে, খুন করছে, আরো কতনা খারাপ কাজ করছে।
কিছু কিছু যুবক যুবতীদের সাপ্তাহিক চার্চে আসার জন্য ডাকা হলে এমন ভাব করে, মনে হয় তাদেরকে কোনো খারাপ কাজে ডাকা হচ্ছে, এতে তারা একদম বিরক্ত।
কেন তারা চার্চ বিমুখ, কেন তাদের এই অনিহা? তাদের এই অনিহা খ্রীষ্টিয়ান সমাজপতিরা কি তা নিয়ে ভাবছেন? এর প্রতিকারের জন্য কি কোনো পদক্ষেপ নিতেছেন? এর জন্য কি পিতা-মাতা দায়ী? সব দায়ভার কি পরিবারের, চার্চের কি কিছু করার নেই?
একজন যুবক-যুবতীর নৈতিক-ধর্মীয় শিক্ষার প্রধান ও প্রথম ক্ষেত্র হলো পরিবার এবং খ্রীষ্টয় মণ্ডলী বা খ্রীষ্টিয় উপাসনালয়।
এ জন্য উভয়কে দোষারোপ করা যায়। পিতা-মাতা উদাসীনতা, অযত্ন, অতিরিক্ত ভালোবাসা/আল্লাদ, তাদের প্রতি খেয়াল না রাখা বা তাদের খোঁজ-খবর না রাখা, ছোট থেকে খ্রীষ্টিয় শিক্ষা না দেওয়া, শাসন না করা, তাদের অনেক কিছু জেনেও খারাপ কাজে উৎসাহিত করা, বারণ না করা, বাধা না দেওয়া, অতিরিক্ত আধুনীকায়ন, শাস্ত্রভিত্তিক নয় অর্থাৎ বাইবেল অনুযায়ী চলতে কোনো বাধানিষেধ নাই এমন সব চার্চ করা, ইত্যাদি ইত্যাদি পরিবারে ব্যর্থতা।
যাহোক কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যা খ্রীষ্টানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হয় যেমন . .
১। ডিডিটাল যুগে এনালগ পালক-পুরোহিত।
২। ঈশ্বরের প্রকৃত আহ্বানপ্রাপ্ত পালক/প্রচারক নয়, বরং বেতনভুক্ত আর শুধু চাকরির মনোভাবের পালক/প্রচারক।
৩। বাইবেল থেকে মনগড়া ব্যাখ্যা দেওয়া
৪। চার্চে আষাঢ়ে, অহেতুক, অবাস্ত আজগুবি গালগল্প করা।
৫। উপযুক্ত ও সঠিক গঠনমূলক বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকা
৬। চার্চে দলাদলি
৭। পালক-প্রচারকদের পরিবার চার্চ বিমুখ হওয়া।
৮। পাকল-প্রচারকদের প্রকৃত একাডেমিক শিক্ষা না থাকা
৯। বাইবেলের সঠিক ব্যাখ্যা উপস্থাপন করতে না পাওয়া।
১০। সময় উপযোগী প্রচার না করা ও শিক্ষা না দেওয়া।
১১। যুবদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা না করা।
১২। যুবদের কঠিন পরিস্থিতিতে পরামর্শ দানে বিরত থাকা।
১৩। পালক/প্রচারকদের কথার সঙ্গে কাজের মিল না থাকা।
১৪। পালক/প্রচারকদের ব্যাক্তিত্বিবান ব্যাক্তি না হওয়া।
১৫। পারিপাশি^ক অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা।
১৬। সময়ের সাথে উপযুক্তভাবে মানিয়ে না চলা।
এছাড়ও আরও কিছু কিছু সমস্যা রয়েছে।
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে নিজের ভালো পাগলেও বোঝে। যুবক-যুবতীদের উদ্দেশ্য করে বলতে হয়, অনেক হয়েছে, আর নয়, পবিত্র বাইবেল আমাদের এই শিক্ষা দেয়, “তোমরা কি জান যে, তোমাদের দেহ পবিত্র আত্মার মন্দির, যিনি তোমাদের অন্তরে থাকেন, যাঁহাকে তোমরা ঈশ্বর হইতে প্রাপ্ত হইয়াছ? আর তোমরা নিজের নও, কারণ মূল্য দ্বারা ক্রীত হইয়াছ। অতএব তোমাদের দেহে ঈশ্বরের গৌরব কর।” (১ করিন্থীয় ৬:১৯-২০ পদ)
তাই আমার যা ইচ্ছা তাই করতে পারি না, কারণ আমাদের দেহ হলো মন্দির, পবিত্র ঈশ^রের বাস, আমরা আমাদের দেহের মালিক নই, অনেক বেশী মূল্য দিয়ে আমাদের ক্রয় করা হয়েছে। তাই আমরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারি না, তবে ঈশ্বরের গৌরবের জন্য করি।
“অতএব, হে ভ্রাতৃগণ, ঈশ^রের নানা করুণায় অনুরোধে আমি তোমাদিগকে বিনতি করিতেছি, তোমরা আপন আপন দেহকে জীবিত, পবিত্র, ঈশ্বরের প্রীতিজনক বলিরূপে উৎসর্গ কর, ইহাই তোমাদের চিত্তসঙ্গত আরাধনা। আর এই যুগের অনুরূপ হইও না, কিন্তু মনের নূতনীকরণ দ্বারা স্বরূপান্তরিত হও; যেন পরিক্ষা করিয়া জানিতে পার, ঈশ^রের ইচ্ছা কি; যাহা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ” রোমীয় ১২:১-২ পদ।
(সংগ্রহিত)
Comments