মণ্ডলীতে মহিলা পাস্টর/পালক কি বাইবেল ভিত্তিক?


মহিলা পাস্টর/পালক সম্পর্কে খ্রীষ্টিয়ানদের মধ্যে তর্ক হতে দেখা যায়।
হ্যাঁ সেজন্য এর স্পষ্ট উত্তর খুবই প্রয়োজন।

বিতর্ক শেষ করার জন্য এ বিষয়ে ঈশ্বরের ইচ্ছা কী তা প্রমাণ করার উপায় আছে।

রোমীয় ১২:২ পদে বলে,
“আর এই যুগের অনুরূপ হইও না, কিন্তু মনে নূতনীকরণ দ্বারা স্বরূপান্তরিত হও, যেন তোমরা পরীক্ষা করিয়া জানিতে পার, ঈশ্বরের ইচ্ছা কি; যাহা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ।”

ইফিষীয় ৫:১৭ পদ,
“এই কারণ নির্বোধ হইও না, কিন্তু প্রভুর ইচ্ছা কি, তাহা বুঝ।”

“যদি সরল অর্থ সাধারণ জ্ঞানে বুঝতে পারা যায়, তাহলে অন্য কোনো অর্থের সন্ধান করবেন না তাতে সবকিছু ফালতু বা অর্থহীন হয়ে যায়।” (If the plain sense makes common sense, seek no other sense lest it all becomes nonsense)

“তোমার বিশ্বাসগুলোকে বিশ্বাস কর এবং সন্দেহগুলোকে সন্দেহ কর। কখনো তোমার সন্দেহগুলোকে বিশ্বাস করো না এবং বিশ্বাসগুলোকে সন্দেহের চোখে দেখো না” (Believe your beliefs and doubt your doubts. Never commit the blunder of believing your doubts and doubting your beliefs)

আজকের প্রশ্ন হলো, মণ্ডলী পরিচালনায় পাস্টর কিংবা পরিচারক পদে মহিলাদের অবস্থান কি বাইবেল ভিত্তিক?

বাইবেলের নির্দেশ অনুযায়ী উত্তর হলো . .  না। 

ঈশ্বরের সাধারণ দৃষ্টিতে পরিবার (ঘরসংসার) এমনকি মাণ্ডলিক ভূমিকায় নেতৃত্ব দেবার পরিকল্পনা হলো পুরুষের উপর। 

১ করিন্থীয় ১১:৩ পদ,
“কিন্তু আমার ইচ্ছা এই, যেন তোমরা জান যে, প্রত্যেক পুরুষের মস্তকস্বরূপ খ্রীষ্ট, এবং স্ত্রীর মস্তকস্বরূপ পুরুষ, আর খ্রীষ্টের মস্তকস্বরূপ ঈশ্বর” 

ইফিষীয় ৫:২২-২৫ পদ,
“নারীগণ, তোমরা যেমন প্রভুর, তেমনি নিজ নিজ স্বামীর বশীভূত হও। কেননা স্বামী স্ত্রীর মস্তক, যেমন খ্রীষ্টও মণ্ডলীর মস্তক; তিনি আবার দেহের ত্রাণকর্তা; কিন্তু মণ্ডলী যেমন খ্রীষ্টের বশীভূত, তেমনি নারীগণ, সর্ববিষয়ে আপন আপন স্বামীর বশীভূত হউক। স্বামীরা, তোমরা আপন আপন স্ত্রীকে সেইরূপ প্রেম কর, যেমন খ্রীষ্টও মণ্ডলীকে প্রেম করিলেন, আর তাহার নিমিত্ত আপনাকে প্রদান করিলেন” 

মণ্ডলীতে পালকীয় চরিত্র, বৈশিষ্ট্য এবং যোগ্যতার জন্য পুরুষের পরিচালনা আর পুরুষের নেতৃত্বের দাবি করা হয়েছে।

১ তীমথিয় ৩:১-৭ পদ
“এই কথা বিশ্বসনীয়, যদি কেহ অধ্যক্ষপদের আকাঙ্ক্ষাী হন, তবে তিনি উত্তম কার্য বাঞ্ছা করেন। অতএব ইহা আবশ্যক যে, অধ্যক্ষ্য অনিন্দনীয়, এক স্ত্রীর স্বামী, মিতাচারী, আত্মসংযমী, পরিপাটী, অতিথি সেবক এবং শিক্ষাদানে নিপুন হউন; মদ্যপানে আসক্ত কিম্বা প্রহারক না হন, কিন্তু ক্ষান্ত, নির্বিরোধ ও অর্থলোভ-শূন্য হন, আপন ঘরের শাসন উত্তমরূপে করেন, এবং সম্পূর্ণ ধীরতা সহকারে সন্তানগণকে বশে রাখেন; কিন্তু যদি কেহ ঘর শাসন করিতে না জানে, সে কেমন করিয়া ঈশ্বরের মণ্ডলীর তত্ত্বাবধান করিবে? তিনি নূতন শিষ্য না হউন, পাছে গর্বান্ধ হইয়া দিয়াবলের বিচারে পতিত হন। আর বহিঃস্থ লোকদের কাছেও ‍উত্তম সাক্ষ্যপ্রাপ্ত হওয়া তাঁহার আবশ্যক, পাছে তিরষ্কারে ও দিয়াবলের জালে পতিত হন”

বাইবেলের এই ১ তীমথিয় ৩:১-৭ পদে কোনোভাবেই বলা হয়নি যে কেউ যদি অধ্যক্ষ/তত্ত্বাবধায়ক হতে চায় তবে তার একটির বেশী স্বামী তার থাকবে না, বরং বলা হয়েছে একটির বেশী স্ত্রী তার থাকবে না।অর্থাৎ পুরুষকেই উল্লেখ করা হয়েছে। 

তীত ১:৫-৬ পদ,
“আমি তোমাকে এই কারণে ক্রীতীতে রাখিয়া আসিয়াছি, যেন যাহা যাহা অসম্পূর্ণ, তুমি তাহা ঠিক করিয়া দেও, এবং যেমন আমি তোমাকে আদেশ দিয়াছিলাম, প্রত্যেক নগরে প্রাচীনদিগকে নিযুক্ত কর; যে ব্যক্তি অনিন্দনীয় ও কেবল এক স্ত্রীর স্বামী, যাঁহার সন্তানগণ বিশ্বাসী, নষ্টামি দোষে অপবাদিত বা অদম্য নয় (তাহাকে নিযক্তি কর)”

বাইবেলের এই তীত ১:৫-৬ পদে কোনোভাবেই বলা হয়নি যে তাদের যেন একটির বেশী স্বামী না থাকে, বরং বলা হয়েছে তাদের যেন একটির বেশী স্ত্রী না থাকে। অর্থাৎ পুরুষকেই উল্লেখ করা হয়েছে।

মণ্ডলীতে মহিলাদের দায়িত্ব, পরিচালনার ক্ষমতা এবং নেতৃত্ব নিষেধ।

১ করিন্থীয় ১৪:৩৪-৩৮ পদে নিষেধাজ্ঞা।
“যেমন পবিত্রগণের সমস্ত মণ্ডলীতে হইয়া থাকে, স্ত্রীলোকেরা মণ্ডলীতে নীরব থাকুক, কেননা কথা কহিবার অনুমতি তাহাদিগকে দেওয়া যায় না, বরং যেমন ব্যবস্থাও বলে, তাহারা বশীভূত হইয়া থাকুক। আর যদি তাহারা কিছু শিখিতে চায়, তবে নিজ নিজ স্বামীকে ঘরে জিজ্ঞাসা করুক, কারণ মণ্ডলীতে  স্ত্রীলোকের কথা বলা লজ্জার বিষয়। বল দেখি, ঈশ্বরের বাক্য কি তোমাদেরই নিকট হইতে বাহির হইয়াছিল? কিংবা কেবল তোমাদেরই কাছে আসিয়াছিল? কেহ যদি আপনাকে ভাববাদী কিংবা আত্মিক বলিয়া মনে করে, তবে সে বুঝুক, আমি তোমাদের কাছে যাহা যাহা লিখিলাম, সেই সকল প্রভুর আজ্ঞা। কিন্তু কেহ যদি না জানে, সে না জানুক।”

বাইবেলে এ বিষয়ে স্পষ্ট যে ঈশ্বর মহিলাদের মণ্ডলীতে কথা বলা, প্রচার করা নিষিধ করেছেন।

মাণ্ডলী সভায় যা শেখানো হচ্ছে, প্রচার করা হচ্ছে তাতে ঈশ্বর মহিলাদের প্রকাশ্যে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে নিষেধ করেছেন। কারণ, মহিলারা আসলে একটি নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করায় পুরো মণ্ডলীকেই শিক্ষা দিতে শুরু করতে পারেন, যেমন “বাইবেলে অন্য পদে কি অন্য শিক্ষা দেয় না?” অথবা, “এ শিক্ষাটা কি অন্য দিনে প্রচার করা যেত না, . . আমি বুঝতে পারছি না?” পূর্ণ মণ্ডলী সভায় যে বিষয়ে সূক্ষ্ম ও নিগূঢ় উপায় প্রচার করা হচ্ছে বা শেখানো হচ্ছে তার সাথে মহিলারা দ্বিমত পোষণ করছেন। মণ্ডলী সভায় প্রচার বা শিক্ষায় স্পষ্টতই অনেক দিকে নিয়ে আলোচনা করায় তাতে একমত না হওয়া ক্রোধ জাগিয়ে তুলতে পারে। সভায় তাদের অনেক কথা বলায় বা উল্টো শিক্ষা দেওয়ার পুরুষ ও নারী সমবেত সভায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় আর যা কখনো আধ্যাত্মিকভাবে নয়। 

৩৭ পদে বলে, 
“কেহ যদি আপনাকে ভাববাদী কিংবা আত্মিক বলিয়া মনে করে, তবে সে বুঝুক, আমি তোমাদের কাছে যাহা যাহা লিখিলাম, সেই সকল প্রভুর আজ্ঞা”। 

তিনি আগের পদে লিখেছেন যে মহিলারা মণ্ডলীতে নীরব থাকবে আর এখন পরের পদে বলেছেন যে এসব স্বয়ং প্রভুরই আদেশ। 

বাইবলে আরেকটি পদে একই শিক্ষা দেয়। 

১ তীমথিয় ২:১১-১৫ পদে
“নারী সম্পূর্ণ বশ্যতাপূর্বক মৌনভাবে শিক্ষা গ্রহণ করুক। আমি উপদেশ দিবার কিম্বা পুরুষের উপরে কর্তৃত্ব করিবার অনুমতি নারীকে দিই না, কিন্তু মৌনভাবে থাকিতে বলি। কারণ প্রথমে আদমকে, পরে হবাকে নির্মাণ করা হয়েছিল। আর আদম প্রবঞ্চিত হইলেন না, কিন্তু নারী প্রবঞ্চিত হইয়া অপরাধে পতিত হইলেন। তথাপি যদি আত্মসংযমের সহিত বিশ্বাসে, প্রেমে ও পবিত্রতায় তাহারা স্থির থাকে, তবে নারী সন্তান প্রসব দিয়া পরিত্রাণ পাইবে” 

মণ্ডলীতে নারীদের নেতৃত্ব দেওয়া নিষিদ্ধ বলে আদেশ করা আছে। মণ্ডলীতে মহিলাদের পরিচালনা বারণ করা হয়েছে।

১ তীমথিয় ২:১১-১৪ পদ
“নারী সম্পূর্ণ বশ্যতাপূর্বক মৌনভাবে শিক্ষা গ্রহণ করুক। আমি উপদেশ দিবার কিম্বা পুরুষের উপরে কর্তৃত্ব করিবার অনুমতি নারীকে দিই না, কিন্তু মৌনভাবে থাকিতে বলি। কারণ প্রথমে আদমকে, পরে হবাকে নির্মাণ করা হইয়াছিল। আর আদম প্রবঞ্চিত হইলেন না, কিন্তু নারী প্রবঞ্চিত হইয়া অপরাধে পতিত হইলেন।” 

বাইবেলে দু’টি কারণ দেখায় যে, কেন ঈশ্বর নারীদেরকে পুরুষদের শিক্ষা দিতে ও  প্রচার করতে নিষেধ করেছেন। 

প্রথমত : সৃষ্টির আদেশের কারণে।
“কারণ প্রথমে আদমকে, পরে হবাকে নির্মাণ করা হইয়াছিল।” 

দ্বীতিয়ত কারণটি হলো, নারি সহজেই সর্পের দ্বারা প্রতারিত হয়েছিল।
“আর আদম প্রবঞ্চিত হইলেন না, কিন্তু নারী প্রবঞ্চিত হইয়া অপরাধে পতিত হইলেন।” 

অর্থাৎ আদমকে নয় কিন্তু হবাকেই শয়তান ভুলিয়েছিল, আর তার ফলেই জগতে পাপ ঢুকেছিল।

নারীরা যখন নেতৃত্ব দেয় তখন ভ্রান্ত এবং প্রতারিত/প্রচঞ্চনার শিকার হতে পারেন যাকিনা সত্য নয়, আর তারা এমনই কিছুই অন্যদেরও বিশ্বাস করাতে পারে।  যেমন একটি দৃষ্টান্ত . . 

যিশাইয় ৩:১২ পদ 
“আমার প্রজাগণ! বালকেরা তাহাদের উপরে উপদ্রব করে, ও স্ত্রীলোকেরা তাহাদের উপরে কর্তৃত্ব করে। হে আমার প্রজা, তোমরা পথদর্শকেরাই তোমাকে ঘুরাইয়া লইয়া বেড়ায়, ও তোমার গমণের পথ নষ্ট করে।” 

বাইবেল অত্যন্ত স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছে যে বিশপ কিংবা পাস্টরদের (ডিকন/পরিচারকেরাও) পুরুষ হতে হবে - মহিলা নয়। 

১ তীমথিয় ৩:১-২ পদে বলে,
“এই কথা বিশ্বসনীয়, যদি কেহ অধ্যক্ষপদের আকাক্সক্ষা হন, তবে তিনি উত্তম কার্য বাঞ্ছা (বাসনা) করেন। অতএব ইহা আবশ্যক যে, অধ্যক্ষ্য অনিন্দনীয়, এক স্ত্রীর স্বামী . . ”  

১২ পদে আছে “পরিচারকেরা এক এক জন এক এক স্ত্রীর স্বামী হউন” 

এখন এতো কিছু জানার পরও কি কারোর অবাধ্য হওয়ার ইচ্ছা আছে? তাহলে এই একই স্পষ্ট বাক্যেই আপনার বিচার করবে। 

যোহন ১২:৪৮ পদ
“যে আমাকে অগ্রাহ্য করে, এবং আমার কথা গ্রহণ না করে, তাহার বিচারকর্তা আছে; আমি যে বাক্য বলিয়াছি, তাহাই শেষ দিনে তাহার বিচার করেবে।”

মহিলাদের প্রচার করার অনুমতি দেয় এমন মণ্ডলী সম্পর্কে ঈশ্বর কী মনে করেন? 

প্রকাশিত বাক্য ২:২০ পদ
“তথাপি তোমার বিরুদ্ধে আমার কথা আছে; ঈষেবেল নাম্নী যে নারী আপনাকে ভাববাদিনী বলে, তুমি তাহাকে থাকিতে দিতেছ, এবং সে আমারই দাসগণকে বেশ্যাগমন ও প্রতিমার কাছে উৎসৃষ্ট বলি ভক্ষণ করিতে শিক্ষা দিয়া ভূলাইতেছ।” 

মানুষকে শিক্ষা দেওয়া জন্য বিবেচনা করলে “পুরুষেরা” শিক্ষা দেয়। মহিলারা কেবল মহিলাদেরকে শিক্ষা দিতে পারে।

তীত ২:৪-৫ পদ 
“তাঁহারা যেন যুবতীদিগকে সংযত করিয়া তুলেন, যেন ইহার পতিপ্রিয়া, সন্তানপ্রিয়া, সংযত, সতী, গৃহকার্যে ব্যাপৃতা, সুশীলা ও আপন আপন স্বামীর বশীভূতা হয়, এইরূপে যেন ঈশ্বরের বাক্য নিন্দিত না হয়”

মহিলারা শিশুদের শিক্ষা দিতে পারে (উদাহরন: ২ তীমথিয় ১:৫ পদে লোয়ী ও উনীকী) আর কিনা একজন মহিলা (সাথে তার স্বামী) কোনো পুরুষের নিজের শিষ্যে যুক্ত থাকতে পারে (উদাহরন : প্রিষ্কিল্লা সাথে তার স্বামী আক্কিলা - প্রেরিত ১৮:২৬ পদ)।

যাহোক, জনসমাবেশে পুরুষের উপর কোনো মহিলা শিক্ষা দিতে পারেন না। “কর্তৃত্ব করিবার অনুমতি” (১ তীমথিয় ২:১২ পদ), এ কথার অর্থ এই নয় যে ক্ষমতা জব্দ করা হয়েছে, (পরক্ষভাবে সেই ক্ষমতা থাকে, যদি মণ্ডলীতে পুরুষের দ্বারা মহিলাকে বিশেষ কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়ে থাকে), তবে এর অর্থ পুরুষের উপর তার নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। মণ্ডলীর যে কোনো ঘটনা বা পরিস্থিতিতে দেওয়া নির্দেশনা বা পরিচালনার শর্তে নির্দেশ হলো - “জানিতে পার যে, ঈশ্বরের গৃহমধ্যে কেমন আচার-ব্যবহার করিতে হয়” (১ তীমথিয় ৩:১৫ পদ)।

একটি মজার ব্যাপার হলো যে কিছু কিছু ইভাঞ্জেলিক্যাল নারীবাদীরা এই পদগুলোকে প্রথম শতাব্দীর যিহুদী সংস্কাতির উপর ভিত্তি করে ব্যাখ্যা করতে চটপট। আর যখন কিনা লেখক নিজেই তার বিষয়টি প্রমাণ করার জন্য তার নিজেস্ব সংস্কৃতিকে পাশ কাটিয়ে তার কথা প্রমাণ করার জন্য সময়ের শুরুতে সেই আদিতে ফিরে গেলেন (আদিপুস্তক ২ এবং ৩ পদ)। 

পৌল দুইটি কারণ দিলেন যে মণ্ডলীতে পুরুষদের উপর কেন মহিলাদের পরিচালনা বা নেতেৃত্ব উচিত নয়।

পৌল কেন নারীদের মণ্ডলীতে পুরুষের নেতৃত্ব দেওয়া উচিত নয় তার দু’টি কারণ দিয়েছেন।  

১। সৃষ্টি কার্যকর অনুযায়ী (১৩ পদ)
“কারণ প্রথমে আদমকে, পরে হবাকে নির্মাণ করা হইয়াছিল।”

পৌল সৃষ্টির উদাহরণ টেনে দেখালেন যে তার শিক্ষা কোনো সাময়িক রীতিনীতি, বর্তমান ভাবধারা বা কৃষ্টি-সংস্কৃতিগত, আচরণগত পদ্ধতির উপরে নয়, বরং সৃষ্টির স্থায়ী ঘটনার উপর তার এই উপদেশ।

২। পতন (১৪ পদ)

মহিলারা সাধারণত বেশী আবেগপ্রবণীত হয় (পুরুষের থেকে তারা বেশী প্রভাবিত বা অনুভূতিপ্রবণ) - বিশেষ ক্ষেত্রে শয়তানের দ্বারা তারা সহজেই প্রতারণায় শিকার হয়।

পুরাতন এবং নতুন নিয়মে নেতৃত্বের উদাহরণে ম-লীতে পুরুষ নেতৃত্বির প্রমাণ।

বাইবেলে প্রতিটি উদাহরণে পুরুষ হলেন “প্রাচীন ও অধ্যক্ষ্য (elder)।” উদাহরণ স্বরূপ, মোশী ইস্রায়েলদের জন্য পরিচালনা বা নেতৃত্বের সহায়তার জন্য ৭০ জন “প্রাচীন (seventy men of the elders of Israel)” মনোনীত করেছিলেন যারা ছিলেন পুরুষ (গণনাপুস্তক ১১:১৬ পদ)। আমরা এও জানি যে ১২ জন প্রেরিতশিষ্য, যারাও “প্রাচীন”রূপে কর্মরত অবস্থায় ছিলেন, তারা ছিলেন পুরুষ (লূক ৬:১৩ পদ)। আর যারা এই প্রেরিতদের সঙ্গে পরিচালিত হয়েছেন তারাও পুরুষ ছিলেন (বার্নবাস, সাইলাস, লূক, তিমথী, তিতাস ইত্যাদি)। নতুন নিয়মে স্থানীয় মণ্ডলীর দ্বারা যে সমস্ত প্রাচীন মনোনীত হয়েছিলেন তারা সবাই এক একজন পুরুষ ছিলেন (প্রেরিত ১৪:২৩; ২০:১৭; ১ তীমথিয় ৫:১৭; তীত ১:৫; যাকোব ৫:১৪; ১ পিতর ৫:১ পদ)। নতুন নিয়ম এইসব মণ্ডলীগুলোতে কোনো মহিলাদের নেতেৃত্বের কোনো উদাহরণ বা কোনো দৃষ্টান্ত নেই।   

অনেকে তর্ক করতে পারেন : “ঈশ্বর কি দবোরা-কে ইস্রায়েলদের পরিচালনার জন্য নিযুক্ত করেননি (বিচারককর্তৃগণের বিবরণ ৪ অধ্যায়)?” হ্যা, যাই হোক না কেন, এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যনীয় যে ইস্রায়েল কোনো “মণ্ডলী” ছিল না এবং দবোরা কোনো “পাস্টর” ছিলেন না (তিনি একজন বিচারক ছিলেন)। দোবোরা একান্তে, গোপনে ভাববানী বলেছেন কিন্তু প্রকাশ্যে সর্বসমক্ষে নয়। এছাড়াও দোবোরা এমন সময় বাস করতে যখন কিনা “যাহার দৃষ্টিতে (every man) যাহা ভাল বোধ হইত, সে তাহাই করিত” (বিচারকর্তৃকগণের বিবরণ ১৭:৬ পদ; ২১:২৫ পদ)।  বিচারকর্তৃকগণের বিবরণে লোকদের এমন দৃষ্টান্তে পরিপূর্ণ যে যাদের ভূমিকা, কর্তব্য, ব্যবহার, আচরণ, আদবকায়দা আর শিষ্টাচার যাকিনা নিত্য একান্তই প্রয়োজনীয় ছিল তা নিয়মাত্মক অর্থাৎ স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল না।

পৌল, গালাতীয় ৩:২৮ পদে কি বলেননি যে খ্রীষ্টেতে “নর ও নারী আর হইতে পারে না (পুরুষও নেই, নারীও নেই)।” 

হ্যা, পৌল কিন্তু পুরুষ ও নারীর পার্থক্য বা স্বতন্ত্রতা অস্বীকার করেননি, তিনি বলেছেন যে ঈশ্বর যেভাবে প্রত্যেকে রক্ষা করেন, পরিত্রাণ করেন সেক্ষেত্রে এর মধ্যে কোনো ভিন্নতা নেই, কোনো তফাত নেই। 

সমস্যাটি ক্ষমতার কোনোটিতে নয়, তবে একটিও কি নতুন নিয়মের যোগ্যতার সাথে খাপ খায় (কিছু কিছু মহিলা খুব স্পষ্টভাষী হতে পারেন, তবে এটি সমস্যাটির সিদ্ধান্ত নেয় না)। বিষয়টি জনসাধারণের গ্রহণযোগ্যতার কোনোটিতে নয়, তবে ঈশ্বর কি মণ্ডলীতে নারী শাসনকে গ্রহণ করেন যেমনটি তাঁর বাক্যে প্রকাশ করা হয়েছে (সমাজ বলতে পারে এটি ঠিক আছে, কিন্তু বাইবেল তা বলে না)। সমস্যাটি সাংস্কৃতিক অর্থাৎ মানুষের কৃষ্টি/সংস্কৃতিতে নয় কিন্তু বাইবেলভিত্তিক (সময়, কাল, যুগ এবং সমাজ পরিবর্তন হতে পারে, কিন্তু ঈশ্বরের  আদর্শ, নীতিগুলোর পরিবর্তন হয় না)। প্রসঙ্গটি জনপ্রিয়তার জন্য নয়। (অনেকেই হয়তো এখন পালকীয় পদে মহিলারা পূরণ করছেন, কিন্তু বুঝতে হবে যে এটি ঈশ্বরের উদ্দেশ্য নয়; কিন্তু কোনো কিছুর ব্যাপকতায়, প্রসার লাভ করায় কখনোই এর সঠিকতা মাপার কাঠি হিসাবে ব্যবহার হয়নি)। এ প্রসঙ্গে পুরুষের কোনো অহংকার নয় যেমন নারী অপেক্ষা পুরুষ শ্রেষ্ঠ আর এই বিশ্বরস পুরুষ পোষণ করে আছে, আর সেই অনুযায়ী পুরুষ কাজ করেন বরং পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য ঈশ^রের প্রতিষ্ঠিত ভূমিকার প্রতি বিশ্বস্ত হওয়া।  

ঈশ্বর তিনি তাঁর বাক্যের সত্যতা কখনোই অস্বীকার করবেন না, পরষ্পরবিরোধী বা বিপরীত কিছুই করবেন না। তিনি তাঁর পবিত্র শাস্ত্রকে অমান্য করতে বা ভঙ্গ করতে কাউকে পরিচালনা করবেন না। ঈশ্বর কখনোই একজন নারীকে পাস্টর হিসাবে মণ্ডলীতে আহ্বান করবেন না! তবে হ্যাঁ, কীভাবে তা জানি? কারণ তাঁর বাক্য এরকমই নিষেধ করেছেন। ঈশ্বর আমাদেরকে খ্রীষ্টিয়ান নারী দিয়েছেন যাদের হৃদয় অন্তরে আছে নম্রতা, স্থিরতা, পবিত্রতা, আত্মসংযম এবং পরিতৃপ্ততার গুণ যেন তাকে ঈশ্বরে র দেওয়া ভূমিক ও কর্তব্য ইচ্ছাকৃতভাবে এবং খুশি মনে বশ্যতা স্বীকার করেন আর তাকে দেওয়া ঈশ্বরের দানগুলো ব্যবহার করেন এবং তাঁর পথে ও তাঁর ইচ্ছায় পারদর্শিতা লাভ করেন। 

মহিলাদের পাস্টর হওয়া এবং তাদের প্রচারের বিষয় বেশ উত্তপ্ত বিতর্ক হতে দেখা যায়, কারণ হলো মানুষ হয় ঈশ্বর যা বলেছেন সে সম্পর্কে অজ্ঞ, না হয় তারা জানেন আর ঈশ্বর যা স্পষ্টভাবে বলেছেন তার বিরুদ্ধে তারা বিরোধিতা করছে।

বন্ধুগণ, যীশু ঈশ্বর পুত্র, মাংসে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। তিনি ক্রুশে তাঁর নিজের দেহ আপনার (পুরুষ ও নারীর) পাপ বহন করতে পৃথিবীতে এসেছিলেন। তিনি তাঁর মহা মূল্যবান রক্ত দান করে আপনার সমস্ত পাপ থেকে আপনাকে শুদ্ধ করার জন্য। তিনি তৃতীয় দিন অত্যন্ত গৌরবে ও বিজয়ী হয়ে উত্থাপিত হয়েছেন, এবং আপনার (পুরুষ ও নারীর) পাপ থেকে তাঁর কাছে ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করছেন। 


Comments

Popular posts from this blog

উপবাস - বাইবেলের আলোকে উপবাস

প্রতিমা পূজা এমনকি মূর্তি সম্পর্কে বাইবেল কী বলে? What does the Bible says about idolatry or even image?

ঈশ্বর কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?