নবিরা কী বলেছেন শুনুন . .
খোদার বিধি-বিধান আমাদের কাছে প্রকাশ করার জন্য, সামনে বিচার আসছে সে বিষয়ে সতর্ক করার জন্য এবং আমাদের নাজাত পাবার উপায় জানানোর জন্য খোদার থেকে তাঁর বার্তাবাহকদের আমাদের জন্য পাঠিয়েছেন।
যারা তাদের নিজেদের সতর্ক হওয়া সম্পর্কে লক্ষ্য করেন এবং খোদার দেওয়া নাজাত গ্রহণ করেন তারা খোদার বেহেশতে জিন্দেগী অর্থাৎ অনন্ত জীবন পায়।
কিন্তু যারা নবিদের কথা গুরুত্ব দেয় না বা তাদের কথা প্রত্যাখ্যান করেন তারা অনন্তকাল দোজখের আগুনে ধ্বংস হয়।
নবি মূসা তুর পাহাড় থেকে দশটি বিশেষ হুকুম নিয়ে নেমে এলেন যা কিনা খোদা তাকে দিয়েছেন।
এসব হুকুম প্রকাশ করে যে খোদা হলেন পাক খোদা এবং তিনি আমাদের কাছ থেকে আশা করছেন আর চাইছেন যেন আমরা তাঁর হুকুমের বাধ্য থেকে তা পালন করি।
খোদার দেওয়া সেসব হুকুমগুলো বিবেচনা করুন, একবার তা গুরুত্ব দিয়ে দেখুন - হিজরত ২০:৩-১৭ আয়াত।
১। আমার জায়গায় কোনো দেবতাকে দাঁড় করাবে না।
২। পূজার উদ্দেশ্যে তোমরা কোনো মূর্তি তৈরি করবে না।
৩। কোনো বাজে উদ্দেশ্যে তোমরা তোমাদের মাবুদ খোদার নাম নেবে না।
৪। বিশ্রামবার পবিত্র করে রাখবে এবং তা পালন করবে।
৫। তোমার পিতা-মাতাকে সম্মান করে চলবে।
৬। খুন কোরো না।
৭। জেনা/ব্যভিচার কোরো না।
৮। চুরি করো না
৯। কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষি দিয়ো না।
১০। লোভ করিও না।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে সত্য কথা বলতে হয় যে পাক-খোদার এসব হুকুম পালনে আমরা ব্যর্থ, অর্থাৎ ঠিক ঠিকভাবে পালন করতে পারছি না।
নবি হযরত দাউদ . . মানবজাতি সম্পর্কে জবুর শরীফ ১৪:৩ আয়াতে লিখেছেন,
“সবাই ঠিক পথ থেকে সরে গেছে, সবাই একসংগে খারাপ হয়ে গেছে; ভালো কাজ করে এমন কেউ নেই, একজনও নেই।”
সমস্ত নবিরা আমাদেরকে বলেছেন যে আমরা সবাই খোদার শরীয়ত বা তাঁর হুকুম ভঙ্গ করার কারণে দোষী এবং তাঁর গজব আমাদের উপরে প্রকাশ পায়।
নবি দাউদ জবুর শরীফ ৯:৭,৮ আয়াতে আরও লিখেছেন,
“মাবুদ চিরকাল রাজত্ব করেন; তিনি বিচারের সিংহাসন স্থাপন করেছেন। তিনি ন্যায়ভাবে দুনিয়ার বিচার করবেন, সৎভাবেই সব জাতিদের শাসন করবেন।”
বিষয়টি চিন্তা করে দেখুন. .
একজন পাক-খোদা যিঁনি আমাদের সমস্ত কর্ম, আমাদের সমস্ত কথা, আমাদের সমস্ত চিন্তা জানেন, আর এই সমস্ত বিষয়ে একদিন আমাদের বিচার করবেন।
জিন্দেগী জীবন (অনন্ত জীবন) কিংবা অনন্ত মৃত্যু দেওয়ার ক্ষমতা তাঁর আছে।
অনেকে বিশ্বাস করেন যে পাক- খোদা যখন আমাদের . . বিচার করার জন্য আসবেন,
তিনি আমাদের খারাপ খারাপ কাজের থেকে আমাদের ভালো ভালো কাজের গুরুত্ব দেবেন,
অর্থাৎ আমাদের খারাপ কাজগুলোর উপর ভালো কাজগুলো ওজন করে দেখবেন।
সঠিকভাবে যেদিকে ওজনে ভার হবে তাতেই বেহেস্ত কিংবা দোজোখে যাবার সিদ্ধান্ত হবে।
কিন্তু নবি ইশাইয়া কী বলেছেন, ইশাইয়া ৬৪:৬ আয়াতে শুনুন,
“আমরা প্রত্যেকে নাপাক লোকের মত হয়েছি আর আমাদের সব সৎ কাজ নোংরা কাপড়ের মত। আমরা গুনাহ্ বাতাসের মত করে আমাদের উড়িয়ে নিয়ে গেছে।”
খোদা-পাক হলেন ক-খোদা এবং তিনি একটি গুনাহ্ তাঁর সম্মুখে থাকতে দেন না।
ভালো ভালো কাজগুলো কখনো খারাপ খারাপ কাজগুলোকে বাতিল করে দেয় না।
আমাদের জন্য খোদার বেহেশতবাসী হতে হলে অবশ্যই শুদ্ধ ও নিষ্পাপ হতে হয়, আমাদের অবশ্যই নতুন হতে হয় আর নিষ্কলঙ্ক অন্তকরণ থাকতে হয়।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমরা নিজেরা নিজেদের কখনো শুদ্ধ, নিষ্পাপ, নিষ্কলঙ্ক করতে পারি না।
এই কারণে ঈসা সেই মসিহ্ (শান্তি/প্রশংসা/গৌরব ও শ্রদ্ধা/সম্মান তাঁর উপর বর্তুক)
পবিত্র ইঞ্জিলে (ইউহোন্না ৩:৩ আয়াত) স্পষ্টভাবে আমাদের শিক্ষা দেয় :
“ঈসা নীকদীমকে বললেন, আমি আপনাকে সত্যিই বলছি, নতুন করে জন্ম না হলে কেউ খোদার রাজ্য দেখতে পায় না।”
ঈসা এখানে আমাদের হৃদয়, মন, অন্তকরণ অর্থাৎ আমাদের মনোভাবের পরিবর্তনের কথা বলছেন।
আমাদের অন্তকরণ বা মনোভাব হলো স্বার্থপর (স্বার্থচিন্তা করে)।
আত্মগর্ব, আত্ম-অহংকারে ভরা, ঘৃণ্য এবং কামুক/লোলুপ।
কিন্তু যখন খোদার রূহ একজনের দিলে বা অন্তরে প্রবেশ করে, তাতে আত্মকেন্দ্রিকতা (অন্যের থেকে নিজেরটা বোঝা) থেকে খোদা-কেন্দ্রিভুত হতে পরিবর্তন ঘটে।
আমাদেরকে বাধ্য থাকতে, খোদার হুকুম বা শরিয়ত অনুসরণ করতে এবং আমাদের অন্যদের প্রতি প্রেম-ভালোবাসা স্থাপন করতে শক্তি দেওয়া হয়েছে।
২ করিন্থীয় ৫:১৭ আয়াতে, মসীহের একজন সাহাবি নতুন জন্মের পরিবর্তন সম্পর্কে বলেছেন।
“যদি কেউ মসীহের সংগে যুক্ত হয়ে থাকে তবে সে নতুনভাবে সৃষ্ট হলো। তার পুরানো সব কিছু মুছে গিয়ে সব নতুন হয়ে উঠেছে।”
কিন্তু প্রশ্ন হলো : কীভাবে একজনের পুনরায় জন্ম হতে পারে।
বিষয়টি স্পষ্ট যে আমরা আমাদের নিজেদের বদলাতে পারি না বা নিজেদের পরিবর্তন করতে পারি না।
ঈসা মসিহ্ হলেন, মসিহ্ (যিনি শান্তি, প্রশংসা, গৌরব এবং শ্রদ্ধা/সম্মান তাঁর উপর বর্তুক),
যিঁনি কিনা ইউহোন্না ১৪:৬ আয়াতে প্রশ্নের জবাব দিয়ে বলেছেন:
“আমিই পথ, সত্য আর জীবন। আমার মধ্য দিয়ে না গেলে কেউই পিতার কাছে যেতে পারে না।”
একমাত্র ঈসা-ই পারেন আমাদের পরিবর্তন করতে; কেবল তিনিই পারেন আমাদের নাজাত দিতে, রক্ষা করতে।
পবিত্র কিতাবুল মোকাদ্দসে (বাইবেলে) বর্ণিত কোনে নবি বা কোনো বার্তাবাহক আপনাকে শান্তি দিতে পারেন না এবং জয়ী হবার সন্ধান দিতে পারেন না।
প্রিয় বন্ধু, খোদা যিঁনি সবকিছু সৃষ্টি করেছেন, তিনি সত্যিকারে আপনাকে ভালোবাসেন এবং তিনি চান না আপনি দোজখে/জাহান্নামে বিনষ্ট হন।
কালভেরি ক্রুশের উপর আমাদের পাপের ঋণ পরিশোধ করার জন্য ঈসাকে পাঠিয়ে খোদা তাঁর প্রেম ও মহব্বত প্রমাণ করলেন।
খোদার কিতাবে লেখা আছে, . . রোমীয় ৫:৮ আয়াত।
“কিন্তু খোদা যে আমাদের মহব্বত করেন তার প্রমাণ এই যে, আমরা গুনাহ্গার থাকতেই মসীহ্ আমাদের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন”
এখনো সময় আছে আজই ঈসা মসীহ্কে ডাকুন তাঁকে আহ্বান করুন।
ঈসা প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, যারা তাদের গুনাহ্ স্বীকার করেন এবং ঈসার উপর এবং কালভেরিতে তার রক্ত ঝরানোর উপর আস্থা রাখেন, তাদের তিনি নাজাত দেন।
অনুগ্রহ করে এমন চিন্তা করবেন না যে আপনি এতো এতো গুনাহ্ করেছেন যে সেখানে থেকে নাজাত পাওয়া যায় না।
ইউহোন্না ৬:৩৭ আয়াত . .
“পিতা আমাকে যাদের দেন তারা সবাই আমার কাছে আসবে। যে আমার কাছে আসে আমি তাকে কোনমতেই বাইরে ফেলে দেব না।”
যারা সত্যিকারে তওবা করে অর্থাৎ অনুতপ্ত ও অনুশোচনা করে, মন ফিরায়ে ঈসার কাছে আসেন এবং যারা তাঁর উপর ঈমান আনেন, তিনি তাদের কাউকেই পরিত্যাগ করবেন না।
ইসাকে স্বীকার করা, বিশ্বাস করা এবং তাঁকে গ্রহণ করার অর্থ আপনার গুনাহের ক্ষমা পাওয়া ও জীন্দেগী জীবন লাভ করা।
আমিন!, আমিন!!, আমিন!!!
Comments