ঈশ্বর কি মারা গেছেন?

 “ঈশ্বর কি মারা গেছেন?

যীশুই ঈশ্বর আর তিনি মারা গেলেন, তার মানে কি আপনাদের ঈশ্বর মারা গেছেন?”
যীশু ক্রুশে মারা গেলে তো ঈশ্বর মারা গেলেন?”
এমন প্রশ্নের সম্মুখীন কি আপনি কখনো হয়েছেন?
কীভাবে এমন প্রশ্নের উত্তর আপনি দিলেন?
উত্তরটি নির্ভর করে আমরা কীভাবে মরা অর্থাৎ মৃত্যু শব্দের অর্থ বুঝতে পারি তার উপর।
মরে যাওয়া মানেই আমাদের অস্তিত্ব চলে যাওয়া নয়।
মৃত্যু হলো বিচ্ছেদ।
দৈহিকভাবে মৃত্যু হলো প্রাণ-আত্মা দৈহিক দেহ থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া।
তাই, সে অর্থে হ্যাঁ, ঈশ্বর মারা গিয়েছিলেন, কারণ যীশু মানবরূপে ঈশ্বর ছিলেন এবং যীশুর প্রাণ-আত্মা তাঁর দেহ থেকে পৃথক হয়েছিলেন।
“সিরকা গ্রহণ করিবার পর যীশু কহিলেন, ‘সমাপ্ত হইল’ পরে মস্তক নত করিয়া আত্মা সমর্পণ করিলেন।” যোহন ১৯:৩০ পদ)।
যাহোক, যদি “মৃত্যু” দ্বারা আমরা “অস্তিত্বের অবসান” অর্থাৎ অস্তিত্বের শেষ বুঝাই, তাহলে, না, ঈশ্বর মারা যাননি।
সে অর্থে ঈশ্বরের “মৃত্যু” হওয়ার অর্থ হলো তিনি অস্তিত্ব নিবৃত্ত করেছেন, এবং পিতা বা পুত্র বা পবিত্র আত্মা কেউই অস্তিত্বহীন হবেন না।
পুত্র, ত্রিত্বের দ্বিতীয় ব্যক্তি, দেহ ত্যাগ করেছিলেন তিনি অস্থায়ীভাবে পৃথিবীতে বাস করেছিলেন, কিন্তু তাঁর ঐশ্বরিক প্রকৃতি মরেনি, আর হতেও পারেনি।
যীশু সত্যই ঈশ্বর এবং সত্যিকারের মানুষ।
তিনি ১০০% মানুষ এবং তিনি ১০০% ঈশ্বর ছিলেন।
তাঁর শারিরীকভাবে দেহ মারা যাওয়ায়; তাঁর মাংসিক হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায় আর তিনি তাঁর আত্মা সমর্পণ করলেন (পাঠ করুন: মথি ২৭:৫০ পদ)।
যীশু শারীরিকভাবে মারা যান, কিন্তু তিনি আধ্যাত্মিকভাবে বেঁচে ছিলেন।
যীশু ক্রুশে ঝুলে থাকা অবস্থায় সেই বিশ্বাসী চোরের (দুষ্কর্মকারীর) প্রতি তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি পালন করেছিলেন - তিনি এবং ঐ চোর দু’জনেই পরমদেশে গিয়েছিলেন, শারীরিকভাবে নয়, আত্মায়।
(পাঠ করুন: লূক ২৩:৪৩ পদ)।
যীশ ক্রুশের উপর শারীরিকভাবে মারা যান, যেন সকলের দেখতে সহজ হয়
(পাঠ করুন: যোহন ১৯:৩২-৩৫ পদ)
তবে আত্মিক মৃত্যুর বিষয়টিও আছে।
যীশু যখন ক্রুশে ঝুলেছিলেন, তিনি আমাদের পক্ষে মৃত্যু সহ্য করেছিলেন, মৃত্যু ভোগ করেন।
যদিও তিনি ঈশ্বর, তবুও তিনি পাপীদের পাপের বোঝা বহনের কারণে পিতার কাছ থেকে সাময়িক বিচ্ছেদের যন্ত্রণা ভোগ করেছিলেন।
তিন ঘন্টা সারা দেশে অন্ধকারের ছেয়ে গেল আর এরপর যীশু চেচিঁয়ে বলে উঠলেন,
“এলোই এলোই লামা শবক্তানী” অর্থাৎ ঈশ্বর আমরা, ঈশ্বর আমার, তুমি কেন আমায় পরিত্যাগ করিয়াছ” (পাঠ করুন: মার্ক ১৫:৩৪ পদ)।
তাই, যীশুর এই ক্রুশে মৃত্যুর ঘটনায় কী বলা যায় যে যীশুও আত্মিকভাবে “মারা” গিয়েছিলেন?
আবার এই যীশুর এই মৃত্যুতে শুধুমাত্র তাঁর মানব প্রকৃতি ছিল যা ঈশ্বর থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল, তাঁর ঐশ্বরিক প্রকৃতি নয়।
ঈশ্বরের “মৃত্যু” হয়নি।
সমস্ত মানুষেরা একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারে . .
“আমার প্রাণ/আত্মা যখন আমার শারীরিক দেহ ছেড়ে চলে যাবে তখন এর কী হবে?
এটাইতো জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
আমরা যীশুর সাথে তাঁর ঘটনায় দেখেছি, আমাদের আত্মারা আমাদের দেহ ত্যাগ করে কোথাও বিচরণ করবে।
আমরা হয় যীশু খ্রীষ্টের সাথে অনন্তকাল কাটাতে স্বর্গে তাঁকে অনুসরণ করব, না হয় আমাদের “বাহিরের অন্ধকারে” অনন্তকাল কাটাতে নরকে যাব যেখানে ক্রন্দন আর দন্ত ঘর্ষণ।
(পাঠ করুন: মথি ৮:১২ পদ)।
অন্য কোনো বিকল্প নাই, অন্য কোনো পথ নাই, অন্য কোনো চয়েজ নাই, তৃতীয় কোনো ব্যবস্থা নাই।
ক্রুশে যীশুর মৃত্যু সকলের জন্য সেই পথ প্রদান করেছে যে যারা যখনই তাঁকে বিশ্বাস করবে তারা নিশ্চিতভাবে জানতে পারবে যে তাদের প্রাণ-আত্মা অনন্তকালের জন্য কোথায় থাকবে।
যীশু খ্রীষ্টের মৃত্যু আমাদের বর্তমান এখানে এবং স্বর্গে উভয় ক্ষেত্রেই আধ্যাত্মিক জীবন প্রদান করেছে।
“আর যিনি মৃতগণের মধ্য হইতে যীশুকে উঠাইলেন তাঁহার আত্মা যদি তোমাদের মধ্যে বাস করেন, তবে যিনি মৃতগণের মধ্য হইতে খ্রীষ্ট যীশুকে উঠাইলেন, তিনি তোমাদের অন্তরে বাসকারী আপন আত্মা দ্বারা তোমাদের মর্ত্য দেহকেও জীবিত করিবেন।
রোমীয় ৮:১১ পদ।
আমেন! আমেন!! আমেন!!!

Comments

Popular posts from this blog

উপবাস - বাইবেলের আলোকে উপবাস

প্রতিমা পূজা এমনকি মূর্তি সম্পর্কে বাইবেল কী বলে? What does the Bible says about idolatry or even image?

ঈশ্বর কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?