ধর্ম কোনটি সঠিক

আমরা জানি এ পৃথিবীতে মোশি এসেছিলেন, যীশু এসেছিলেন, এছাড়াও আরো অনেক নবিদের কথা জানি যারা এসেছেলেন, আবার জানা যায় অনেক পয়গম্বর ও গুরুদের কথা।
এদের প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট কোনো বাণী ছিল, তাদের প্রচার ছিল।

যেমন বলা যায় যে মোশির প্রচারের বিষয়বস্তু ছিল সেই দশটি বিশেষ আজ্ঞা যা ঈশ্বর দিয়েছিলেন ইস্রায়েল সন্তানদের শিক্ষা দিতে যেন তারা সেসব আজ্ঞা পালনে বাধ্য থেকে ঈশ্বরের সান্নিধ্যে আসতে পারে।

মোশি কিন্তু পরবর্তীতে তাঁরই মতনই আর একজন অতি মহাপুরুষ উদয় হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন।
তার এই পূর্বাভাসকে আপনি সেই মহাযাজক বলেন আর মহানবী-ই বলেন, তিনি সরাসরি সেই যীশুকেই উল্লেখ করেছিলেন।

যীশু পৃথিবীতে এসে মোশির সেই কথার অর্থপ্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেছেন, . . 
“তোমরা শুনেছ এই কথা বলা হয়েছে, ‘ব্যভিচার কোরো না।’ কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ কোনো স্ত্রীলোকের দিকে কামনার চোখে (লালসার চোখে, কুনজরে) তাকায় সে তখনই মনে মনে তার সংগে ব্যভিচার করল।”
তিনি বলেছেন, আমরা যদি ভাইয়ের উপর রাগ করি, আমরা বিচারের দায়ে পড়ব।
তিনি আরো বলেছেন যে, . . 
“লোকে যত অনর্থক কথা বলে, বিচারের দিনে তার প্রত্যেকটির কথার হিসাব দিতে হবে”

যীশু খ্রীষ্ট শিক্ষা দিয়ে একথা বলেছেন যে, আমরা প্রত্যেকে মোশির মাধ্যমে দেওয়া ঈশ্বরের আদেশ বা আজ্ঞাগুলো লঙ্ঘন করেছি।
আমাদের মধ্যে এমন কে না কামভাবে বা কুনজরে কোনো নরীর দিকে তাকায়নি?
ঈশ্বরকে অগ্রাহ্য করা হলো আত্মিকভাবে ব্যভিচার।
নিজের শরীরের মর্যাদা নষ্ট করা শারীরিক ব্যভিচার।
ঈশ্বরের দেওয়া দশটি আদেশের একটাতে বলা আছে ব্যভিচার কোরো না।
ব্যভিচার হলো নিজের বিরুদ্ধে করা জঘন্য একটা পাপ।
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট বলেন যে, যদি কামভাবে, লালসার চোখে, কুনজরে কোনো নারীর দিকে তাকানো হয়, তখনই মনে মনে তার সঙ্গে ব্যভিচার করা হলো।
ব্যভিচারের এই সূক্ষ্ম ব্যাখ্যায় কত-না সাবধানে থাকা প্রয়োজন।
    
পবিত্র বাইবেল যে যদি আমরা কাউকে কোনোভাবে সামান্যতমও ঘৃণা করি না কেন, আমরা মনে মনে হত্যা করি।
যদি আমরা কাউকে মিথ্য বলে থাকি অথবা কোনো কিছু চুরি করি, তাহলে আমরা সেই মিথ্যাবাদীদের ও চোরদের দলে পরি।

তাহলে বিচারের দিনে দোষীসাব্যস্ত হওয়া থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আমাদের কী করা উচিৎ?
কীভাবে আমরা নরকের নরকযন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাব?
আমাদের কি সৎ জীবনযাপন করা উচিৎ?
না, এতে কোনো সাহায্য হবে না।
এ জন্যে যে, যদি আমি একটা দিনে কাউকে হত্যা করি আর তারপরে বাকি জীবনটা সৎভাবে কাটাই, তবুও আমি ঐ একটা খুনের জন্য সারাজীবন একজন হত্যাকারি বা খুনী হিসাবেই থেকে গেলাম।
যদি আমি মিথ্যা বলি, চুরি করি, তবে আমি চোরের দলের থেকে কোনো অবস্থাতেই কোনো ভালো কাজে বা ভালো কিছুতে সময় কাটিয়ে আসল অবস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারি না, চোর বা মিথ্যাবাদীর নাম বা খেতাব থেকেই যায়।

কোনো ব্যক্তি সে তার খারাপ কাজ করে, এমনকি আইনত কোনো দণ্ডনীয় অপরাধ করে এখন না-হয় তিনি সাধু সেজেছেন, কিন্তু সঠিক ন্যায্য বিচারে তিনি কি কোনো অসচ্চরিত্রতা, খুনিদের বা কোনো কলঙ্কিত ধর্ষকদের দল থেকে নিরপরাধ বলে ঘোষণা করতে পারবেন? 

মানুষ চিরকালের জন্য বিচারে দায়গ্রস্ত আর ঈশ্বরের ব্যবস্থানুসারে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতেই হবে।
আমরা সবাই ঈশ্বরের বিধি-বিধানের বিরুদ্ধে পাপ করায় দোষী হয়েছি, তাই কোনোক্রমেই আর ধার্মিক জীবন হয় না। 
এরকম দোষী অবস্থায় প্রার্থনার মাধ্যমে ও ভালো কাজের মাধ্যমে কলঙ্কিত অপরাধ মুছে ফেলা যায় না। ধুঁয়ে মুছে পরিষ্কার করতে আমাদের এমন এক রক্ষাকর্তা প্রয়োজন যার কিনা আমাদের পাপগুলো ধুয়ে মুছে ফেলতে ঈশ্বরের থেকে পাওয়া সেই ক্ষমতা তার আছে।

যীশু খ্রীষ্ট পৃথিবীতে উদয় হওয়া অন্যান্য সবার চেয়ে সর্বোত্তম ও অতুলনীয়।
তিনি দাবি করেছেন যে পাপ ক্ষমা করার সেই ক্ষমতা তাঁর আছে।
তিনি বলেছেন যে তিনি জগতের পাপের জন্য মৃত্যুবরণ করতে এই পৃথিবীতে নেমে এসেছেন, যা-কিনা এই পৃথিবীতে আসা অন্য কোনো নবি কিংবা গুরুদের কখনই ছিল না।

আমরা প্রত্যেকে পবিত্র ঈশ্বরের আদেশ বা আজ্ঞা লঙ্ঘন করেছি।
প্রত্যেকেটা মানুষই হারানো মানুষের মতো হারিয়ে গেছে।
প্রত্যেকেই স্বভাবত ঈশ্বরের সাথে শত্রুতা আছে।

গীতসংহিতা ১৪:২-৩ পদে লেখা আছে
“সদপ্রভু স্বর্গ হইতে মনুষ্য-সন্তানদের প্রতি নিরীক্ষণ করিলেন; দেখিতে চাহিলেন, বুদ্ধিপূর্বক কেহ চলে কি না, ঈশ্বরের অন্বেষণকারী কেহ আছে কি না। সকলে বিপথে গিয়াছে, সকলেই বিকারপ্রাপ্ত হইয়াছে; সৎকর্ম করে, এমন কেহই নাই, এক জনও নাই” 

আমাদের নিজেদের মধ্যে ভালো বলতে কিছুই নেই যাতে আমরা পবিত্র ঈশ্বরের অনুগ্রহ দয়া ও আশির্বাদ পাওয়ার যোগ্য হতে পারি, এমনকি তাঁর জন্য এমন ভালো কিছু করতেও পারি না যাতে তিনি আমাদের সমর্থন করবেন বা তা পছন্দ করবেন।
সব মানুষই ঈশ্বরের কাছে দোষী হয়ে আছে আর এ জন্যে আমরা অনন্ত বিচারে দায়বদ্ধ আর সেই পবিত্র ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা আমাদের রক্ত দাবি করে।
ঈশ্বরের ব্যবস্থা লঙ্ঘন করার ভয়ঙ্কর শাস্তি হলো মৃত্যু আর অনন্ত চিরকালর জন্য নরকযন্ত্রণা ভোগ।
কিন্তু আমাদের এই হারানো অবস্থা এবং আমাদের এই অবস্থা থেকে মুক্তি অসম্ভব হওয়ায় পবিত্র ঈশ্বর নিজেই মানুষের সমস্ত কিছুর মিটমাট করতে যাকিছু প্রয়োজন তিনি তা করেছেন।

যাহোক, এতক্ষন যাকে যীশু খ্রীষ্ট ও নবি যীশু বলে জানা গেলে, তিনিই হলেন ‘মুক্তিদাতা প্রভু যীশু খ্রীষ্ট’, যিনি আমাদের পাপ তিনি নিজেই বহন করেছেন, ক্রুশে নিজেকে বলি দিয়ে নিজের রক্ত ঝরিয়ে আমাদের জন্য জরিমানা পরিশোধ করেছেন।
আমাদের এই পাপীদের জন্য তাঁর নিজের রক্ত ঝরাতে নিজেই বলি হলেন।
পাপের জন্য সম্পূর্ণ তিনি আমাদের শাস্তি বহন করে আমাদের জন্য ঈশ্বরের প্রেম ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন।
তারপর তিনি মৃত্যু থেকে স্বশরীরে উঠেছেন, নিজেই মৃত্যুকে পরাজিত করেছেন।
আর এখন যারা পাপ থেকে মনপরিবর্তন করেন, অনুশোচনা করেন আর পাপ থেকে মুক্তির জন্য যীশু খ্রীষ্টকে একমাত্র মুক্তিদাতা ও প্রভুরূপে গ্রহণ করেন তারা তাদের পাপের অপরাধ থেকে চিরকালের মুক্তি পান।
তিনি সকলের জন্য একবারই ও সবকিছুর জন্য পাপচ্যুত করেছেন।
যারা তাঁর উপর আস্থা রাখেন, তাঁর উপর ভরসা করেন এবং তাঁরই উপর নির্ভর করেন ঈশ্বর ঠিক তখনই তাকে পরিত্রাণ (অনন্ত জীবন) দান করেন।

প্রভু যীশু খ্রীষ্ট বলেছেন,
“আমিই সেই পথ, সেই সত্য ও সেই জীবন। আমার মধ্য দিয়ে না গেলে কেউই পিতার কাছে যেতে পারে না।”
দেখতে শুনতে অনেক ধর্মের ধর্ম রয়েছে।
কিন্তু একমাত্র একজন, একজনই মুক্তিদাতা আছেন।
একমাত্র তাঁকে ছাড়া আমাদের শাস্তিভোগ করতে হবে, এমন কোনো বিষয় নয় যে আমরা কী বিশ্বাস করি বা কাকে অবলম্বন করি।
ঈশ্বরের কাছে যেতে প্রভু যীশু খ্রীষ্ট-ই একমাত্র পথ বা উপায়।
“পরিত্রাণ আর কারও কাছে পাওয়া যায় না, কারণ সারা পৃথিবীতে আর এমন কেউ নেই যার নামে আমার পরিত্রাণ পেতে পারি।” অন্য এমন আর কেউ মুক্তিদাতা নেই। “যারা খ্রীষ্টের দেওয়া শিক্ষার সীমা ছাড়িয়ে যায় এবং সেই শিক্ষায় স্থির থাকে না তাদের অন্তরে ঈশ^র নেই।” ২য় যোহন ৯ পদ।

খ্রীস্টিয় বিশ্বাস কোনো ধর্ম পালনের জন্য ধর্ম নয়, এটা পরিত্রাণের একমাত্র উপায়, এটা পবিত্র ঈশ্বরের সংগে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপনের একমাত্র উপায় আর যদি ধর্ম-ই বলতে হয় তাহলে এটা আত্মিক। আমেন!!!

খ্রীষ্ট আমার পাপ বহন করে ক্রুশে রক্ত ঝরিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
তাঁর পবিত্র রক্ত পাপের অনুকুলে সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ করেছেন আর তিনি স্বশরীরে মৃত্যু থেকে উত্থাপিত হয়েছেন।
পরিত্রাণের প্রয়োজন খ্রীষ্টের উপর আমি আমার বিশ্বাসে আমি এই সাক্ষ্যই দেই।

ঈশ্বরের বাক্য খুবই সহজভাবে প্রকাশ করে,
“ঈশ্বর মাংসে প্রকাশিত হইলেন” ১তীমথিয় ৩:১৯ পদ, কেজেভি বাইবেল)।
 যীশু খ্রীষ্ট নিজের অস্তিত্বের কথা বলেছেন,
“. . আমি আছি”  (যোহন ৮:৫৮ পদ);
 সৃষ্টিকতা একজন মানুষ হয়ে মানুষের মধ্যে বাস করলেন,  
“আদিতে বাক্য ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বরের সহিত ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বর ছিলেন। তিনি আদিতে ঈশ্বরের কাছে ছিলেন। সকলই তাঁহার দ্বারা হইয়াছিল, যাহা হইয়াছে, তাহার কিছুই তাঁহা ব্যতিরেকে হয় নাই” . . আর সেই বাক্য মাংসে মূর্তিমান হইলেন, এবং আমাদের মধ্যে প্রবাস করিলেন, আর আমরা তাঁহার মহিমা দেখিলাম, যেন পিতা হইতে আগত একজাতের মহিমা; তিনি অনুগ্রহে ও সত্যে পূর্ণ” যোহন ১:১-৩ পদ এবং ১৪ পদ।
 যীশু খ্রীষ্ট পাপ ক্ষমা করেন, 
“তাহাদের বিশ্বাস দেখিয়া তিনি (যীশু) কহিলেন, হে মনুষ্য, তোমার পাপ সকল ক্ষমা হইল” (লূক ৫:২০-২১ পদ
 অল্প কথায়, সেই পুত্র (ঈসা) এবং পিতা (খোদা-পাক) হলেন এক।
“আমি ও পিতা, আমরা এক” (যোহন ১০:৩০ পদ)

প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তাঁর পৃথিবীতে থাকাকালিন সেসব  ধর্মকর্মে নির্ভরশীল লোকদের বলেছেন যারা তাঁর ঐশ্বরত্বকে অস্বীকার করেছেন, অগ্রাহ করেছে, . . 

“এই জন্য তোমাদিগকে বলিলাম যে, তোমরা তোমাদের পাপাসমূহে মরিবে; কেননা যদি বিশ্বাস না কর যে, আমিই তিনি, তবে তোমাদের পাপসমূহে মরিবে”  যোহন ৮:২৪ পদ।

অনেকে শান্তির ধর্ম বলে দাবি করেন, তবে প্রেম না থাকলে শান্তির ধর্ম হয় না।
যীশু খ্রীষ্ট প্রেম প্রকাশ করেছেন, আর তিনি আমাদের সবাইকে ভালোবাসতে আদেশ দিয়েছেন। আমেন!

আমি আবারো বলি . .
খ্রীষ্টিয়ানিটিকে শুধু ধর্ম বললে ভুল হবে এটা পরিত্রাণের উপায়, ঈশ্বরের সংগে একমাত্র সুসম্পর্কের উপায় যা তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমেই হয়েছে।

যীশু খ্রীষ্ট বহু ধর্মের ভীরে তিনি নতুন করে আর কোনো নতুন ধর্ম স্থাপন করতে আসেননি, তিনি এসেছেন বিভ্রান্ত বিচ্ছিন্ন দলদের সত্যের পথ দেখাতে, তিনি বলেছেন
“আমিই পথ, ও সত্য, ও জীবন; আমা দিয়া না আসিলে কেহ পিতার নিকটে আইসে না” (যোহন ১৪:৬ পদ)।  আমেন !! 



Comments

Popular posts from this blog

উপবাস - বাইবেলের আলোকে উপবাস

প্রতিমা পূজা এমনকি মূর্তি সম্পর্কে বাইবেল কী বলে? What does the Bible says about idolatry or even image?

ঈশ্বর কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?