মৃত্যুর পরে কোথায় ?

নিশ্চিতভাবে জানার জন্য পাঠ করুন।
আপনি যতবার কোনো মৃত ব্যক্তির মুখ দেখেছেন, ততবার হয়তো শুনতে পেয়েছেন “জীবিত অবস্থায় তিনি অনেক কষ্টভোগ করেছেন তাই এই মৃত্যুই তার জন্য এখন অনেক ভালো। এখন তিনি চিরশান্তিতে আছেন, কষ্ট চিরতরে দূর হলো, আর কখনো জগতের কষ্টভোগ করতে হবে না”

প্রিয় পাঠক, ঐ ব্যক্তি মৃত্যুর পরে পরলোকে চিরশান্তি ভোগ করবেন, যদি তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় তার মন পরিবর্তন করে যীশু খ্রীষ্টকে তার প্রভু এবং মুক্তিদাতারূপে গ্রহণ করে থাকেন ও পবিত্র আত্মায় নতুন জন্মপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন তবেই তার মৃত্যুর পরে চিরশান্তির সেই স্বর্গ নিবাসী হওয়ার বিষয়টি সঠিক বিবেচনা করা যায়। সাধু পৌল যেমন খ্রীষ্টিয়ানদের বলেছেন যে, “. . . আমরা সর্বদা সাহস করিতেছি, জানি যে, যত দিন আমরা এই দেহে নিবাস করিতেছি, আমরা প্রভু হইতে দূরে প্রবাস করিতেছি; (কেননা আমরা বিশ্বাস দ্বারা চলি, বাহ্য দৃশ্য দ্বারা নয়) আমি বলি, আমরা সাহস করিতেছি, আর দেহ হইতে দূরে প্রবাস ও প্রভুর নিকট উপস্থিত হওয়া অধিক বাঞ্ছনীয় জ্ঞান করিতেছি” ২করিন্থীয় ৫:৬-৮ পদ। সেই মৃত ব্যক্তিটি যদি অনাত্মিকতায় অর্থাৎ ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্কবিহীন, পাপে লিপ্ত অবস্থায় মারা গিয়ে থাকেন, তাহলে তার যাতনা সবেমাত্র শুরু হলো। দ্বিতীয়ত এই হারানো অর্থাৎ ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্কবিহীন (অনাত্মিক) লোকটির প্রাণ তার দেহ ত্যাগ করে অনন্তকালের জন্য আগুনে জ্বলতে সরাসরি সেই নরকে  গিয়েছে। “সেখানে (নরকে) তাদের কীট (মাংস-খেকো পোকা) মরে না, আর আগুনও নিবে না।” মার্ক ৯:৪৮পদ। “দুষ্টেরা পাতালে (নরকে) ফিরে যাবে, আর সেই সব জাতিরাও যারা ঈশ্বরকে ভুলে যায়” গীতসংহিতা ৯:১৭ পদ। এক ধনী লোক নরক থেকে কেঁদে বলেছে “কালক্রমে, ঐ কাঙ্গালটি মরিয়া গেল, আর স্বর্গদূতদের দ্বারা অব্রাহামের বক্ষস্থলে পৌঁছালো : সেই ধনবান্ও মরিল, ও কবরপ্রাপ্ত হইল; আর পাতালে (নরকে), যাতনার মধ্যে, সে চক্ষু তুলিল, আর দূর হইতে অব্রাহামকে আর তাঁহার বক্ষস্থলে লাসারকে (কাঙ্গালকে) দেখিতে পাইল। আর সে ক্রন্দন করিল আর বলিল, পিতঃ অব্রাহাম, আমার প্রতি দয়া করুন, আর লাসারকে পাঠাইয়া দিউন, সে যেন তাহার অঙ্গুলির অগ্রভাগ জলে ডুবায়, আর আমার জিহ্বা শীতল করে; কারণ এই অগ্নিশিখায় আমি যন্ত্রণা পাইতেছি” লূক ১৬:২২-২৪ পদ।

হয়তো তখন অনেকের ঐ সেই মৃত ধনী ব্যক্তির মৃত মুখ দেখা সম্ভব হয়েছিল, যখন ধর্মীয় আচার ব্যবস্থায় ঐ মৃত ব্যক্তির কবর দেবার আয়োজন চলছিল, আর হয়তো অনেকেই বলেছিল যে এই মৃত ব্যক্তিটি এখন শান্তিতে আছেন, তার আর কখনো জগতের রোগ ব্যাধি, যাতনা, দুঃখ কষ্ট ভোগ করতে হবে না। তাদের ঐসব ধারণা বা কথাগুলোতে কতই না ভুল ছিল। যদিও অনেকে সেই মৃত দেহের সামনে সুন্দর সুন্দর কথা বলেছিল কিন্তু তার প্রাণ তখন নরকের কূপে নরকযন্ত্রণায় আর্তনাদ করছিল। অনাত্মিক অর্থাৎ ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্কবিহীন ব্যক্তির যন্ত্রণা তার মৃত্যুতেই শেষ হয়ে যায় না। তারা অনবরত পুড়ছে শত কোটি বৎসরের অনন্ত চিরকালের জন্য। যদি আপনি ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্কবিহীন (অনাত্মিক) ও পাপাসক্ত হয়ে থাকেন এবং ঐ একই অবস্থায়  মারা  যান, আপনিও ঠিক ঐ ধনী ব্যক্তির মতো ঐ একই অবস্থায় চিরকালের জন্য কষ্ট ও অসহ্য যন্ত্রণাভোগ করতে নরকে জ্বলবেন।

আপনি হয়তো এখন প্রশ্ন করতে পারেন যে কি ধরনের পদক্ষেপ নিলে এই নরকের অনন্ত ভয়ংকর যাতনা থেকে রক্ষা পাব? উত্তর ঠিক সেই একটাই যা যীশু নীকদীমকে দিয়েছিলেন। “যীশু উত্তর করিলেন আর তাঁহাকে বলিলেন, সত্য, সত্য, আমি তোমাকে বলিতেছি, কোন মানুষের পুনরায় জন্ম না হইলে, সে সেই ঈশ্বরের রাজ্য দেখিতে পায় না” যোহন ৩:৩ পদ।  আপনি যেমন শারীরিক দেহ নিয়ে জন্মেছেন, তেমনি স্বর্গের দ্বারে পৌঁছাতে হলে আপনার অবশ্যই আত্মায় জন্ম হতে হবে। কেমন করে তা সম্ভব? যীশুকে আপনার নিজের একমাত্র মুক্তিদাতারূপে গ্রহণেই তা সম্ভব! কেননা যীশু তাঁর নিজের বিষয়ে আমাদের বলেছেন যে,“আমিই সেই পথ, সেই সত্য ও সেই জীবন। কিন্তু আমা দিয়া বিনা, সেই পিতার নিকটে মানুষ আসিতে পারে না।” যোহন ১৪:৬ পদ।

এই পৃথিবীতে আরেকটি দিন বেঁচে থাকার প্রতিশ্রুতি আপনাকে দেওয়া হয়নি। আগামীকাল আপনার জন্য অনেক দেরী হয়ে যেতে পারে। আপনার এই হারানো অর্থাৎ বিচ্ছিন্ন, ঈশ্বরবিহীন জীবনের মঙ্গলের জন্য ঠিক এখনই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপযুক্ত সময়। “কেননা তিনি বলেন, উপযুক্ত সময়ে আমি তোমার কথা শুনিয়াছি আর পাপ হইতে উদ্ধার পাইবার দিনে আমি সাহায্য করিয়াছি।” দেখ, এখনই উপযুক্ত সময়, আজই উদ্ধার পাইবার দিন” ২করিন্থীয় ৬:২ পদ।
আপনার দেহে এখনো জীবন আছে, ঠিক এখনই কি আপনার পাপ থেকে মন-পরিবর্তন করে যীশু খ্রীষ্টকে আপনার প্রাণের মুক্তির জন্য আপনার অন্তরে আহ্বান করবেন না?

“যে কেহ প্রভুর নামে ডাকে, সে পরিত্রাণ পাইবে” রোমীয় ১০:১৩ পদ; “কিন্তু অনেকে যেমন তাঁহাকে গ্রহণ করিল, সেই সকলকে, যাহারা তাঁহার নামে বিশ্বাস করে তাঁহাদিগকে তিনি ঈশ্বরের সেই সন্তান হইবার অধিকার দিলেন”
যোহন ১:১২ পদ।

সিদ্ধান্ত আপনার। যখন আপনার মৃতদেহ কবর দেবার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে তখন আপনার প্রাণ কোথায় থাকবে? স্বর্গে না নরকে? আপনার সিদ্ধান্তের উপরেই তা নির্ভর করছে।

আপনার জীবন হয়তো একঘণ্টা পূর্ণ হবার আগেই শেষ হয়ে যেতে পারে এবং আপনার প্রাণ অনন্তকালের জন্য কোনো না কোনো স্থানে যেমন স্বর্গে অথবা নরকে যেতে পারে। আপনার জীবন অনন্তকাল স্বর্গে থাকার নিশ্চয়তার জন্য আপনি কি যীশু খ্রীষ্টকে প্রভু এবং মুক্তিদাতারূপে গ্রহণ করতে চান?

Comments

Popular posts from this blog

উপবাস - বাইবেলের আলোকে উপবাস

প্রতিমা পূজা এমনকি মূর্তি সম্পর্কে বাইবেল কী বলে? What does the Bible says about idolatry or even image?

ঈশ্বর কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?