বায়োলজিক্যাল দিক থেকে পুরুষের থাকে বীর্য আর নারিদের থাকে ডিম্ব।
অবিবাহিত মরিয়ম তিনি তাঁর গর্ভে একটি শিশু ধারণ করেছিলেন পুরুষের বীর্য ছাড়াই।
স্বামী ও স্ত্রীর শারীরিক যৌন মিলনে থাকে প্রচণ্ড কামনা আর এটাই ঈশ্বরের পবিত্র পরিকল্পনা মানুষের বংশ বৃদ্ধির জন্য।
কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে নর-নারির এমন মিলনে থাকে নৈতিক বিকৃত মনভাব, বিকৃতরুচি , ভ্রষ্টাচারিতা, নষ্ট চরিত্র, থাকে দুশ্চরিত্রতা এমনকি ধর্ষণের মনোভাবও থাকে, আর এভাবেই তাদের উভয়েরই অজান্তে একটি শিশুর গর্ভধারণ হয়ে জন্ম হয়।
আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট মানুষের এমন সব কামনায় উভয়ের শারীরিক মিলনে এমনকি নৈতিক বিকৃত, ভ্রষ্টাচার, বিকৃতরুচি, নষ্ট চরিত্র আর দুশ্চরিত্রে জন্মহওয়া থেকে . . তিনি সম্পূর্ণভাবে নিষ্কলঙ্ক, পবিত্রতায় জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেভাবে জীবনযাপনও করেছেন।
হ্যাঁ, আমাদের যীশু মানুষের এসব কামনা থেকে তিনি জন্মাননি।
খ্রীষ্টের জন্ম ছিল অনন্য - বায়োলজ্যিকাল পিতা ছাড়া অন্য যে-কোনো শিশুর জন্ম হওয়ার মতো তিনি জন্ম নেয়নি।
আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট সুপারন্যাচরল অর্থাৎ অতিপ্রাকৃত বাস্তব নিয়মের বহির্ভূত গর্ভাবস্থায় ছিলেন। তিনি যেকোনো পুরুষ বীর্য ছাড়াই পবিত্র আত্মায় গর্ভধারণ হয়েছিলেন।
মরিয়ম সর্বশ্রেষ্ঠ সর্বোচ্চ শক্তির মাধ্যমে তাকে আচ্ছাদিত করা হয়েছিল, যার ফলে একটি পবিত্র সন্তানের জন্ম হয়েছিল যিনি আদমের কাছ থেকে পাপ প্রকৃতির উত্তরাধিকার অর্জন করেননি।
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট, নারি-পুরুষের ঐ ধরণের কোনো সম্পর্কে নয়, তিনি সম্পূর্ণ আলাদাভবে জন্মগ্রহণ করেছেন যেন নিষ্কলঙ্ক, পবিত্র ও শুদ্ধ জীবনযাপন করেন ও করতে পারেন।
মেষশাবক যীশু খ্রীষ্টের ছিল নির্দোষ, অমূল্য এবং বিশুদ্ধ রক্ত।
তাঁর কখনই পাপেপূর্ণ চিন্তা ছিল না জগতের মানুষের মতো।
তাঁর কখনই পাপজনিত কথাবার্তা ছিল না জগতের মানুষের মতো।
তিনি কখনই পাপজনিত কোনো কর্ম করেননি জগতের মানুষের মতো।
কারণ . . যীশু কখনো পাপ জানেন নাই,
কারণ . . যীশু কোনো পাপ করেন নাই,
কারণ . . যীশুর মধ্যে কোনো পাপ নেই।
আদমের পাপের মাধ্যমে সমস্ত মানবজাতি পাপে জড়িত।
স্ত্রীলোকে নয় কিন্তু পুরুষের পাপের আচরণ বা বৈশিষ্ট্য আসে।
যদিও যীশুর মানবীয় দেহ ছিল কিন্তু পাপবিহীন।
কারণ . . তাঁর ছিল পবিত্র পিতার বৈশিষ্ট্য, কিন্তু জগতের কোনো পিতার নয়।
কারণ . . তাঁর দেহে ছিল ঈশ্বরের রক্ত (মরিয়ম গর্ভ হইয়াছে- পবিত্র আত্মা হইতে)
কারণ . . তিনি হলেন পবিত্র।
নর-নারিতে জন্ম হওয়া সমস্ত মানুষ বহন করছে আদমের রক্ত।
“অতএব যেমন এক মনুষ্য (আদম) দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু সমুদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল” রোমীয় ৫:১২,১৮ পদ
যীশু খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের যে-কোনো বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন ব্যতীরেকে, কোনো পাপ করা ছাড়াই, পাপের মতো কোনো কার্য বা সেরকম কোনো চিন্তা ছাড়াই বেঁচে থাকার ক্ষমতা তাঁর ছিল।
যীশুর মানুষের পাপের জন্য পরিশোধের ক্ষমতা তাঁর ছিল।
যীশু পাপী মানুষের জন্য তিনি তাঁর নিজের যে রক্ত ঝরিয়েছিলেন তা ছিল ঈশ্বরের পবিত্র রক্ত, কোনো মানুষের কলঙ্কিত রক্ত নয়।
পাপের আচরণ বা পাপের বৈশিষ্ট্য পিতার মধ্য দিয়ে চলে আসে।
আমাদের প্রভুর কোনো জাগতিক পিতা ছিল না।
কিন্তু যীশু পবিত্র আত্মায় একজন কুমারী নারিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সে কারণে তিনি মানুষ ছিলেন।
তবুও পাপের কোনো বৈশিষ্ট্যে তিনি ছিলেন না।
মরিয়ম ছিলেন কুমারী যখন যীশু খ্রীষ্ট তাঁর গর্ভ ধfরণে ছিলেন,
মরিয়ম ততদিন পর্যন্ত কুমারী ছিলেন যতদিনে যীশু খ্রীষ্ট জন্মগ্রহণ করেন।
মরিয়ম পবিত্র আত্মায় শিশু যীশুকে ধারণ করেন।
এর অর্থ কি? আপনি ভেবে দেখুন . .
আমাদের মুক্তিদাতা কি মানবীয় কোনো পিতার বির্যে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বে কি তিনি . .
. . আমাদের মুক্তিদাতা হতে পারতেন?
যীশু খ্রীষ্ট কি যোষেফ ও মরিয়মের শারীরিক মিলনে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বে কি তিনি . .
. . আমাদের ‘ইম্মানুয়েল’ (আমাদের সহিত ঈশ্বর) হতে পারতেন?
যীশু খ্রীষ্টের সেই কুমারী জন্ম হওয়া আমাদের বুঝতে পারা এবং বিশ্বাস করাটা কি গুরুত্বপূর্ণ নয়?
এখন কেউ যদি যীশু খ্রীষ্টের এসব ঘটনা বিশ্বাস না করে থাকেন,
কিংবা প্রভুর কুমারী জন্ম না হয়ে থাকে?
তাহলে আমাদের কোনো . . ঈশ্বরমানব আর থাকলো না,
আমাদের কোনো . . মুক্তিদাতা আর থাকলো না,
আমাদের পাপের ক্ষমার কোনো . . আশা আর থাকলো না,
আমাদের পাপের প্রায়চিত্বের জন্য . . পবিত্র রক্ত আর থাকলো না।
যীশুর জন্ম ঠিক যেন . . বিস্ময়করই ছিল না,
যীশুর জন্ম ঠিক যেন . . অবিশ্বাস্যই ছিল না,
যীশুর জন্ম ঠিক যেন. . আপ্রত্যাশিতভাবেই ছিল না,
যীশুর জন্ম ঠিক যেন . . আশ্চর্যভাবেই ছিল না,
যীশুর জন্ম ঠিক যেন. . সৌভাগ্যজনকই কেবল ছিল না, . .
কিন্তু তিনি . . কুমারী গর্ভে জন্মেছিলেন !!
যীশুর জন্ম ঠিক যেন . . নিখুঁত, পবিত্র, নিষ্কলঙ্কভাবে কেবল গর্ভধারণই হয়নি, . .
কিন্তু তিনি . . কুমারী গর্ভে জন্মেছিলেন !!
এতেই প্রমাণ হয় যে . . তিনি পাপবিহীন ছিলেন।
সম্রাট পিলাত যীশুকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
“আমি ত ইহার কোনো দোষ পাইতেছি না” যোহন ১৮:৩৮ পদ
যীশু নিজেই চ্যালেন্স করলেন,
“তোমাদের মধ্যে কে আমাকে পাপী বলিয়া প্রমাণ করিতে পারে” যোহন ৮:৪৬ পদ।
শিষ্যেরা যীশুর সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছেন,
“যিঁনি পাপ জানেন নাই, তাঁহাকে তিনি আমাদের পক্ষে পাপস্বরূপ করিলেন, যেন আমরা তাঁহাতে ঈশ্বরের ধার্মিকতাস্বরূপ হই” ২ করিন্থীয় ৫:২১ পদ
শিষ্যেরা যীশুর সম্পর্কে প্রচার করেছেন,
“কিন্তু তিনি (যীশু) সর্ববিষয়ে আমাদের ন্যায় পরীক্ষিত হইয়াছেন, বিনা পাপে” ইব্রীয় ৪:১৫ পদ।
শিষ্যেরা যীশুর সম্পর্কে আলোচনা করেছেন,
“তিনি পাপ করেন নাই, তাঁহার মুখে কোন ছলও পাওয়া যায় নাই” ১ পিতর ২:২২ পদ
“এবং তাঁহাতে (যীশুতে) পাপ নাই” ১ যোহন ৩:৫ পদ।
জগতের এযাবতকালের ধর্মগুরুদের দিয়ে কী হবে? . . পাপীর পরিত্রাণ হবে কি??
মরিয়মকে দিয়ে কী হবে? . . পাপীর পরিত্রাণ হবে কি??
সাধু ব্যক্তিদের দিয়ে কী হবে? . . পাপীর পরিত্রাণ হবে কি??
পালকদের দিয়ে কী হবে? . . পাপীর পরিত্রাণ হবে কি??
রেভারেন্ডদের দিয়ে কী হবে? . . পাপীর পরিত্রাণ হবে কি??
পুরাহিতদের দিয়ে কী হবে? . . পাপীর পরিত্রাণ হবে কি??
রাব্বিদের দিয়ে কী হবে? . . পাপীর পরিত্রাণ হবে কি??
কারণ . .
প্রভু যীশু ছাড়া কারো কাছে পরিত্রাণ নেই, মানুষ তাদের উদ্ধারের জন্য যে নাম ধরে ডাকবে (যীশু বিনা) আকাশের নীচে এমন আর কোনো নাম নেই।
“আর অন্য কাহারও কাছে পরিত্রাণ নাই, কেননা আকাশের নীচে মনুষ্যদের মধ্যে দত্ত এমন আর কোন নাম নাই, যে নামে আমাদিগকে পরিত্রাণ পাইতে হইবে” প্রেরিত ৪:১২ পদ।
তাইতো যীশু নিজের সম্পর্কে প্রেরিতশিষ্য থোমাকে বলেছিলেন . . যে . . আমিই পথ - হ্যা, আমিই সত্য ও জীবন। আমার মাধ্যমে না গেলে কেউ পিতা ঈশ্বরের কাছে যেতে পারে না।
“আমিই পথ ও সত্য ও জীবন, আমা দিয়া না আসিলে কেহ পিতার নিকটে আইসে না” যোহন ১৪:৬ পদ
বন্ধুগণ, আমি জোড়ালোভাবে আবারো বলি,
মানুষের প্রচণ্ড কামনায় শরীরিক মিলনে এমনকি নৈতিক বিকৃত মনোভাব , ভ্রষ্টাচার, বিকৃতরুচি, নষ্ট চরিত্র আর দুশ্চরিত্রে, ধর্ষণে একটি শিশুর গর্ভধারণ হওয়া ও তার জন্মহওয়া থেকে . . আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট সম্পূর্ণভাবে নিষ্কলঙ্ক, পবিত্রতায় জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেভাবে জীবনযাপনও করেছেন।
১ পিতর ১:১৮,১৯ পদের ব্যাখ্যায়,
মেষশাবক যীশু খ্রীষ্টের ছিল নির্দোষ, নিষ্পাপ, নিখুঁত, নিষ্কলঙ্ক, অমূল্য, বহূমূল্য, কলঙ্কহীন এবং বিশুদ্ধ রক্ত।
প্রিয় বন্ধুগণ, চিন্তা করে দেখুন, ভাবুন, বিবেচনা করুন যে আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট . .
. . তিনি কখনও পাপেপূর্ণ চিন্তা করেন নাই,
. . তিনি কখনই পাপজনিত কথাবার্তা বলেন নাই,
. . তিনি কখনই পাপজনিত কোনো কর্ম করেন নাই,
. . কারণ তিনি “কখনো পাপ জানেই নাই”
. . কারণ তিনি “কোনো পাপ করেন নাই”
. . কারণ “তাঁর মধ্যে কোনো পাপ নাই”
আর এ কারণেই তিনি আমাদের পাপের অপরাধের জন্য শাস্তি ভোগ করতে পেরেছিলেন।
যার জন্য আমাদের আর কোনো পশুবলি, কোরবানির প্রয়োজন হয় না।
তিনি আমাদের পরিবর্তে, আমাদের বদলে, তাঁর আমাদের বিবেচনায়, আমাদের কারণে তিনি ক্রুশে জীবন দিতে আত্ম-উৎসর্গ করেছেন।
আবারো বলি, . . শিশু যীশুর রক্ত মানুষের রক্ত নয়, কিন্তু পবিত্র ঈশ্বরের, যেন তাঁর উৎসর্গকৃত এই পবিত্র রক্তে পাপীর পাপ ধৌত হয়।
“কেননা রক্তের মধ্যেই শরীরের প্রাণ থাকে” লেবীয় ১৭:১১ পদ
“রক্তসেচন ব্যতিরিকে পাপমোচন হয় না” ইব্রীয় ৯:২২ পদ।
“ঈশ্বরের সেই মণ্ডলীকে পালন কর, যাহাকে তিনি নিজ রক্ত দ্বারা ক্রয় করেছেন” প্রেরিত ২০:২৮ পদ।
প্রভু যীশুর মাধ্যমে যদি এই রকম করা না হতো . .
. . আমাদের আর কোনো . . আশা থাকতো না,
. . আমাদের আর কোনো . . ক্ষমা থাকতো না,
. . আমরা এখনো . . পাপের মধ্যে থাকতাম,
. . আমরা এখনো . . নরকের পথেই থাকতাম,
. . আর আমরা এখনো . . খ্রীষ্টবিহীন অবস্থায় চিরদিনের জন্য এভাবেই চলতে থাকতাম।
আমাদের যে-কোনো পথ বা অবলম্বনের থেকে যীশু খ্রীষ্টের পথ উচ্চে এবং তাঁর চিন্তা আমাদের চিন্তার থেকেও উপরে।
যীশুর এই মানবজন্ম মানুষের প্রতি ঈশ্বরের প্রেম ও করুণার এক অভিনব নিদর্শন।
আদম-হবার পাপের ফলে ঈশ্বরের সঙ্গে মানুষের বন্ধন ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল, স্বর্গদুয়ার হয়েছিল বন্ধ।
এই অসহায় অবস্থা থেকে মানুষকে মুক্ত করার জন্যই ঈশ্বর মুক্তিদাতারূপে তাঁর পুত্র যীশুকে পাঠালেন।
মূলত ঈশ্বরই এই পৃথিবীতে নেমে এলেন দেহ ধারণে।
পাপের বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতেই যখন যীশুর এই আগমন, তাই এই জন্মবার্তা গোটা মানবজাতির জন্য এক আনন্দ বার্তা।
পরিশেষ বলি যে, খ্রীষ্টের জন্ম সময়মত হয়েছিল “কিন্তু কাল সম্পূর্ণ হইলে ঈশ্বর আপনার নিকট হইতে আপন পুত্রকে প্রেরণ করিলেন” গালাতীয় ৪:৪ পদ।
পৃথিবীতে তাঁর প্রবেশে আমাদের ক্যালেন্ডার বদলে গিয়েছে।
খ্রীষ্টর জন্ম উদ্দেশ্যমূলক ছিল।
খ্রীষ্টের আগমনের কারণটি নিঃসন্দেহজনক।
আমেন! আমেন !! আমেন !!!
Comments