মাটিতে নির্মাণ করা প্রাণবাযু প্রবেশ করানো সজীব মানুষের আজ মাটিতে তৈরি তার ভগবান।

সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর মাটির ধূলিতে মানুষ নির্মাণ করলেন, তার নাকে ফুঁ দিয়ে প্রাণবায়ু প্রবেশ করালেন, মানুষ সজীব প্রাণী হলো . .
আর এখন ঈশ্বরের এই 
সৃষ্ট মানুষই কিনা মাটির ধূলিতে কিংবা পাথর কেটে অথবা গাছ কেটে তার সৃষ্টিকর্তা ভগবানকে তৈরি করে, যার মধ্যে কোনো প্রাণ নেই।

আর খ্রীষ্টিয়ানদের মধ্যে অনেকে তাদের ধর্মীয় উৎসবকে সুভেচ্ছা জানায়, তাদের ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করেন।

ঈশ্বর আত্মা, আত্মায় আমাদের ঈশ্বরের আরাধনা।

যোহন ৪ অধ্যায়ের ২৩ পদে এমন লেখা আছে যে , প্রকৃত ঈশ্বরের আরাধনাকরীরা আত্মায় ও সত্যে পিতা ঈশ্বরের আরাধনা করবে, কারণ পিতা ঈশ্বর এমন আরাধনাকরীদের খোঁজেন।

আমরা শাস্ত্রপাঠ করে (আদিপুস্তক ১:২৬ পদ) জেনেছি যে,  ঈশ্বর তাঁর মত করে এবং তাঁর সঙ্গে মিল রেখে তিনি মানুষ নির্মাণ করলেন।

ঈশ্বর তাঁর গৌরবার্থে ও তাঁর প্রশংসা করার জন্য মানুষ সৃষ্টি করেছিলেন।

তিনি চেয়েছিলেন যেন মানুষ তাঁর সাদৃশ্যে এবং তাঁর প্রতিমূর্তিতে অর্থাৎ ছুরতে সৃষ্টি হয়।

পবিত্র বাইবেলে উল্লেখ নেই যে, অন্য আর কোনো জীবকে ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করা হয়েছিল।
এই সত্য শুধুমাত্র মানুষ সৃষ্টিতে।

“পরে ঈশ্বর আপনার প্রতিমূতির্তে তাহাকে সৃষ্টি করিলেন, পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে সৃষ্টি করিলেন”  আদিপুস্তক ১:২৭ পদ।

ঈশ্বর তাঁর মত করেই মানুষ সৃষ্টি করলেন।

প্রশ্ন থাকতে পারে তাহলে, ঈশ্বরের কি দৃশ্যমান কোনো শারীরিক আকৃতি তাঁর আছে?

উত্তর হলো “ঈশ্বর আত্মা”  (যোহন ৪:২৪ পদ) 

আত্মারূপে ঈশ্বরের কোনো দৈহিক গঠন নেই।

কখনো কখনো আমরা পবিত্র বাইবেলে ঈশ্বরের অলঙ্কারিক ব্যাখ্যা বা বর্ণনা আমরা পাই।

যেমন  “তাঁহার হস্ত এমন খাটো নয়।”
এখানে ঈশ্বরের কর্মকাণ্ড এবং আমাদের জন্য যে ঈশ্বরের চিন্তা করেন তা বুঝতে আমাদের সাহায্য করে, কিন্তু এটি তাঁর দৈহিক কোনো আক্ষরিক (হুবহু) বর্ণনায় নয়।


ঈশ্বরের যদি প্রকৃতপক্ষে কোনো দৈহিক আবরণ না থেকে থাকে,  তাহলে মানুষ অবশ্যই কোনো না কোনো ভাবে, অন্য কোনো উপায়ে তাঁরই মতো।

মানুষ কীভাবে ঈশ্বরের মতো?
মানুষের এক আত্মিক ব্যক্তিত্ব রয়েছে।


মানুষের মন বা অন্তঃকরণ রয়েছে।

যেহেতু ঈশ্বরের একটি মন আছে, তেমনি তিনি পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টির এক পরিকল্পনা করলেন, যার একটি মন থাকবে, যার দ্বারা সে ঈশ্বরকে জানতে, তাঁর ন্যায় চিন্তা করতে পারবে এবং তাঁর ন্যায় সিদ্ধান্তে উপনীত হবার ক্ষমতা তার থাকবে।

ঈশ্বরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইলেন এবং চাইলেন যেন মানুষও আত্মসচেতন হয়ে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করতে পারে।

ঈশ্বর মানুষকে একটি মন দিলেন, যেন তিনি মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারেন, মানুষের সঙ্গে সঙ্গ দিয়ে উপভোগ করতে পারেন, আর মানুষকে শিক্ষা দিতে চাইলেন যেন মানুষ এ জগতে ঈশ্বরের কাজ করতে পারে।

মানুষের অনুভূতি রয়েছে।
ঈশ্বরের একটি মন রয়েছে এবং তাঁর অনুভূতিও আছে।
ঈশ্বর প্রেম করেন অর্থাৎ ভালোবাসেন, (পাপ) ঘৃণা করেন, দুঃখ অনুভব এবং আনন্দ এবং সুখ উপভোগ করেন।
ঈশ্বরের অনুভূতি রয়েছে, তাই ঈশ্বর মানুষকে অনুভূতি দিয়ে সৃষ্টি করলেন।
ঈশ্বর মানুষকে প্রেম করেন, কিন্তু ঈশ্বর চাইলেন যেন মানুষও তাঁকে প্রেম করতে সক্ষম হয়।
এ কারণেই ঈশ্বর মানুষকে আবেগ, অনুভূতি এবং সজ্ঞান ভালোবাসাবোধ দিয়ে সৃষ্টি করলেন।

মানুষের ইচ্ছাশক্তি রয়েছে।
একটি মন এবং আবেগ ছাড়াও ঈশ্বরের এক ইচ্ছাশক্তি রয়েছে।
ঈশ্বরের কিছু করা বা না করার সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা রয়েছে।
ঈশ্বর মানুষকে আপন আপন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সৃষ্টি করলেন।
ঈশ্বর মানুষকে নিজের পছন্দ বা মনোনয়নের ক্ষমতা না দিয়েও সৃষ্টি করতে পারতেন।
তাহলে মানুষকে ঈশ্বরের হুকুম সরাসরি পালন করার উপযোগী করে সুতায় চালিত পুতুলের মতন করে সৃষ্টি করতে পারতেন।

তা সত্ত্বেও, ঈশ্বর মানুষকে এমনভাবে সৃষ্টি করলেন, যেন সে ঈশ্বরকে  প্রেম করতে এবং তাঁর আজ্ঞাবহ হতে নিজের ইচ্ছায় বাধ্য হয়।

ঈশ্বর আত্মা, আমাদের সত্যে ও আত্মায় ঈশ্বরের আরাধনা করতে হয়, ঈশ্বরের কোনো মূর্তি বানিয়ে নয়।

আত্মা ঈশ্বর যিঁনি মাটি দ্বারা মানুষ তৈরি করেছিলেন, এখন সেই সৃষ্ট মানষ সৃষ্টিকর্তাকেই মাটি দিয়ে তৈরি করেন তাঁর ভজনা করার জন্য।




Comments

Popular posts from this blog

উপবাস - বাইবেলের আলোকে উপবাস

প্রতিমা পূজা এমনকি মূর্তি সম্পর্কে বাইবেল কী বলে? What does the Bible says about idolatry or even image?

ঈশ্বর কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?