কীভাবে আমরা যীশুর রক্তে পাপ থেকে শুচি হই

How our sins are taken away by the Blood of Jesus (Chapter 3). The Blood of Jesus, written by William Reid.

“ঐ দেখ ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লয়ে যান” যোহন ১:২৯ পদ। যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ে সাধু যোহনের এই কথার মম্মার্থ আমরা আমাদের জ্ঞানে ও বিশ্বাসে উপলদ্ধি করতে পারি। সাধু যোহনের এই সাক্ষে আমাদের অন্য কোনোভাবে প্রকাশ করেনি যে একজন মুক্তিদাতাকে “যিনি ইতিমধ্যে জগতের পাপভার তুলে নিয়েছেন” কিন্তু এই বাক্যে বুঝানো হয়েছে ‘স্বয়ং যীশু খ্রীষ্টকে’ - “যিনি জগতের পাপভার লয়ে যান।” এ কথার সহজ অর্থ হলো, যীশু এ কাজের জন্য ঈশ্বরের মনোনিত, যিঁনি জগতের পাপভার তুলে নেবার জন্য এ জগতে এসেছিলেন। আমরা এ ক্ষেত্রে তাকে সমর্থন করতে পারি, যখন তিনি বলেন যে, “কিন্তু পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করতে মনুষ্যপুত্রে ক্ষমতা আছে” মথি ৯:৬ পদ। তিনি তাঁর নিজের ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব সম্পর্কে বলেছেন যে “স্বর্গে ও পৃথিবীতে সমস্ত কর্তৃত্ব আমাকে দত্ত হয়েছে” - মথি ২৮:১৮ পদ। যীশুই একমাত্র আর সমস্ত প্রয়োজনের সর্ব্বোচ্চ, কারণ কেবলমাত্র তাকেঁই এই গৌরবময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, “পাপভার তুলে নেবার সকল কর্তৃত্ব একমাত্র তারঁই রয়েছে। জগতের সবাই ঈশ্বরের সম্মুখে পাপী, “কেননা সকলেই পাপ করেছে” রোমীয় ৩:২৩ পদ; আর ঈশ্বরের সুসমাচার হলো এই, যখন এ জগতের একজনও অনুভব করে যে, সে পাপী এবং সে যদি সোজা ঈশ্বরের মেষশাবক-এর সঙ্গে যুক্ত হয় আর নিজের নিজের পাপের কথা অকুন্ঠ চিত্তে প্রকাশ করে, তার সমস্ত ভাবনার ভার তাঁর উপর ফেলে দেয় আর সে যদি তার পাপ থেকে মুক্ত হবার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করে, তখন সে খুঁজে পায় যীশুই হলেন সেই ব্যক্তি যিনি একাধারে তার পাপ ক্ষমা করার অধিকারী আর অন্যধারে তিনিই পারেন মানুষের পাপভার তুলে নিতে আর এ ক্ষেত্রে মানুষের পাপ মুক্তির ক্ষমতা শুধুমাত্র “তাঁর ক্রুশের রক্ত দ্বারা” (কলসীয় ১:২০ পদ) ক্রীত, কারণ “পশ্চিম দিক্ থেকে পূর্ব যেমন দূরবর্তী, তিনি আমাদের হইতে আমাদের অপরাধ সকল তেমনি দূরবর্তী করিয়াছেন” গীতসংগিতা ১০৩:১২ পদ।
আমাদের আগেকার পাপের জন্য এক্ষেত্রে আমাদের নিজের কোনো প্রায়শ্চিত্তের বা নিজেদের কোনো সচেষ্ট প্রয়াসেরও কোনো প্রয়োজন নেই, কিন্তু যীশু সেচ্ছায় আমাদের সকল পাপভার তুলে নিচ্ছেন, আর তিনি আমাদের তাঁর নিজস্ব প্রচেষ্টাকে আমাদের জন্য দান করছেন, যাতে আমরা স্বর্গ স্থিত গৌরবময় স্থানে অংশী হতে পারি, যদি কিনা আমরা সবাই একমাত্র তাঁকে আমাদের সমস্ত বিশ্বাস ও আস্থা প্রদান করি ও আমাদের মুক্তি গ্রহণ করি।

কেউ যদি এভাবে বলে যে, ‘বেশ ভালো কথা, আমি যীশুর কাছে যাব, আর তাঁর দয়া-অনুগ্রহ চাইব আর বলব, ‘যদি আমি বিনষ্ট হয়ে যাই, যদি আমি পাপে ক্ষয় হয়ে যাই’। না, এ ধরনের অন্তর নিয়ে তাঁর কাছে যাবার কারোর প্রয়োজন নেই, কারণ এ ধরনের মনোভাব, তাঁর সমস্ত ক্ষমতা সম্পর্কে দ্বিধার সৃষ্টি করে, জগতের সকল পাপের প্রায়শ্চিত্ত যে ইতিমধ্যে তিনি তাঁর পবিত্র জীবনে ঈশ্বরের মেষশাবক হিসাবে পূরণ করেছেন, সে সম্বন্ধে আশংকা উপস্থিত হয়।

যীশু স্বয়ং বলেছেন, “কারণ ঈশ্বর জগতকে এমন প্রেম করলেন যে, আপনার একজাত পুত্রকে দান করলেন, যেন, যে কেউ তাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়” (যোহন ৩:১৬ পদ)। এ সকল “ঈশ্বরের সত্য বাক্য” (প্রকাশিত বাক্য ১৯:৯ পদ), তাই বন্ধুগণ, এখনও কি আপনাদের মনে এতটুকু দ্বিধা কিংবা অনিশ্চয়তার অবকাশ রয়েছে যে আপনি “যদি বিনষ্ট হইতে হয়, হব” ইষ্টের ৪:১৬ পদ। এক্ষেত্রে আপনার উচিত এমন চিন্তার অধিকারী হওয়া যা সুসমাচারে ঈশ্বরের গৌরবার্থে লেখা রয়েছে, তাতে আস্থা স্থাপন করা; ‘তা হলো এই, ঈশ্বর জগতকে এতো ভালোবাসেন, যে তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে সকল পাপীর জন্য প্রদান করলেন, আর তিনি আমাকে আশ্বাস দিচ্ছেন, বিনষ্ট হৃদয় পাপী হিসাবে যদি আমি তাকে বিশ্বাস করি, আমি আর কখনোই বিনষ্ট হব না, কিন্তু অনন্ত জীবনের অধিকারী হব; আমি তাঁর বাক্যে বিশ্বাস করব এবং বিবেচনা করব যে, যদি ঈশ্বর তাঁর প্রিয় পুত্রকে আমাদের জন্য দিলেন, যখন আমরা পাপী ছিলাম তা হলে তাঁর পুত্রের মৃত্যুরূপ প্রায়শ্চিত্তের মধ্য দিয়ে, তিনি নিশ্চয় মুক্তভাবে আমাদের জন্য তাঁর ক্ষমা ও ধার্মিকতা, অনুগ্রহ ও গৌরব সব দেবেন আর যদি, তাঁর নিজস্ব ধারা অনুযায়ী তাঁর অনুগ্রহের যে বৃহৎ আহŸান, আমি নিশ্চিন্তে তাঁর অসীম ভালোবাসায় নিজ হৃদয় তাঁেক সমর্পন করতে পারি, খ্রীষ্ট যীশুতে আমার সব বিশ্বাস স্থাপন করতে পারি, তাহলে বিনষ্ট হবার কোনো সম্ভাবনাই আমার নেই কারণ ঈশ্বর আর আমাকে আমার পাপের জন্য শাস্তি প্রদান করবেন না। কারণ তিনি তাঁর সত্য বাক্যে সেই আশ্বাস, সেই অনুগ্রহ আমার জন্য দান করেছেন, “তাঁর পুত্র যীশুর রক্ত আমাদিগকে সমস্ত পাপ থেকে শুচি করে” (১ যোহন ১:৭ পদ)।

পিতা ঈশ্বর পাপীদের এতো ভালোবাসেন যে তিনি তাঁর পুত্র যীশুকে তাদের নিমিত্ত এ জগতে পাঠালেন, তিনি ক্রুশীয় মৃত্যুবরণ করলেন। যীশু ও মানুষকে এতো ভালোবাসলেন যে, নিজে তিনি নিরাপরাধ হয়েও মানুষের পাপের জন্য মরলেন এবং সব মানুষদের মুক্তির পথ খুলে দিলেন। পবিত্র আত্মাও পাপী মানুষদের ভালোবেসে ঈশ্বরের অসীম ভালোবাসার কথা প্রকাশ করলেন আমাদেরই জন্য, ঈশ্বর স্বয়ং তাঁর পুত্রের মধ্য দিয়ে এ জগতে নিজেকে প্রকাশ করলেন, জগতের সকল মানুষের মুক্তির জন্য। যদি আপনি, হে দ্বিধাগ্রস্থ হৃদয়, আপনি কি এখনো সম্মত নন, যে যীশুর মধ্য দিয়ে ঈশ্বর মানুষের জন্য যে স্বর্গীয় বিধানকে আপনার সম্মুখে উপস্থিত করেছেন, “কে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি ঈশ্বর নন” সেই পিতা ঈশ্বর যিনি, তাঁর পুত্রকে আমাদের মুক্তির নিমিত্ত এ জগতে পাঠালেন এবং পুত্র যীশু তাঁর পিতার বাধ্য হয়ে, তাঁকে সন্তুষ্ট করলেন, তাঁর পবিত্র জীবনের বিনিময়ে, সকল মানুষের পাপভার নিজ স্কন্ধে ধারণ করলেন, ‘যেন আপনি ক্ষমা পান, সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হন, শান্তি, অনুগ্রহ এবং পবিত্র জীবনের অধিকারী হন, যেন ঈশ্বরের অসীম ভালোবাসার বন্ধনে যুক্ত হন, যা সমস্ত জ্ঞানের অতীত, যা আপনার হৃদয়কে উদ্দীপনা করে, আত্মিক গ্রহনীয়তা বাড়ায় এবং যা আপনাকে তারঁ কাছে কাদাঁয় “পিতা” (গালাতীয় ৪:৬ পদ) বলে সম্বোধন করতে আগ্রহী করে, খ্রীষ্টের ভালোবাসার প্রভাব আপনি অনুভব করবেন, আপনার জীবন হবে শুধুমাত্র তাঁরই প্রশংসা, গৌরবের জন্য ‘যিনি আমাদের জন্য মরলেন ও পুণরুত্থিত হলেন‘।

এভাবেই আমি একজন পাপীর মুক্তির পথকে বণর্না করলাম, “কেননা দূতগণ দ্বারা কথিত বাক্য দৃঢ় হল” ইব্রীয় ২:২ পদ, কারণ এ কথার গুঢ় অর্থ এই যে, ‘তারা সকলে আনীত হবে, যীশু খ্রীষ্টের কাছে‘ কারণ যীশুই হলেন সেই স্বর্গ থেকে আগত মেষশাবক যিনি সবার পাপভার নিজে তুলে নেন, আমি এখন এ সম্পর্কে একটি উদাহরণ তুলে ধরছি : একদিন অ্যার্বাডিন রেলওয়ে ষ্টেশনের প্ল্যাটফর্মে যখন দাঁড়িয়ে ছিলাম, লক্ষ্য করলাম একটি গাড়ী অ্যার্বাডিন থেকে লন্ডনে যাবার জন্য অপেক্ষা করে আছে। গাড়ীটির দরজাগুলো খোলা ছিল, মুটেরা যাত্রীদের মালপত্র গাড়ীর ছাদে তুলে দিচ্ছিল, অল্প কিছু সংখ্যক লোক গাড়ীতে প্রবেশ করছিল গাড়ীর অন্য কম্পার্টমেন্টে। তাদের প্রত্যেককে দেখে মনে হচ্ছিল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা যেন টিকিট-অফিসে ঢুকতে পারে, যেখানে ইংল্যান্ড যাবার জন্য টিকিট বিক্রি হচ্ছে, তারপর টিকিট কেটে হুড়োহুড়ি করে ব্যাগ-ল্যাগেজ সমেত গাড়িতে উঠে পড়েছে, যে যার সিটে বসে পড়েছে, গুছিয়ে বসছে, যাত্রার জন্য।

তাদের টিকিট কাটার এ ব্যস্ততা, প্রস্তুতি, দৌড়াদৌড়ি এবং যে যার আসনে বসে আসন্ন যাত্রার আনন্দ, সঠিক গাড়ীতে ঠিকমত বসতে পারার তৃপ্তি এবং আত্মবিশ্বাস আমি লক্ষ্য করছিলাম, এদের মধ্য থেকে কেউ-ই ঐ গাড়ী থেকে বের হয়ে আসছিল না বরং আসন্ন যাত্রার উত্তেজনায় পরস্পর একজন অন্যজনকে দেখে জিজ্ঞেস করছিল, “আমি কি ঠিক বসেছি? আমি কি ঠিক বসেছি?”।

এমনকি আমি কোনো যাত্রীকে ঐ নির্দিষ্ট গাড়ীতে ওঠার ব্যাপারে দ্বিধান্বিও হতে লক্ষ্য করিনি, কারণ ঐ গাড়ীটি নির্দিষ্ট ছিল শুধুমাত্র লন্ডনের যাত্রীদের জন্য, ট্রেনের একটি স্পেশাল বগি হিসাবে। আমি ভাবছিলাম, হয়তো এ শহরে প্রায় আশি হাজার লোকের বাস, কিন্তু এ গাড়ীটি মাত্র বিশজন যাত্রীর বসার ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু কেউ-ই এ নিয়ে কোনো রকম কথাবার্তা বলছে না। এ ট্রেন দিনের মধ্যে বার-কয়েক এ শহর ছেড়ে অন্যত্র যায়, যাত্রী নিয়ে, কিন্তু শুধু মাত্র এই নির্দিষ্ট গাড়ীটি, অল্প কিছু সংখ্যক যাত্রী নিয়ে লন্ডন যায়। নিদিষ্ট দিনে এটি লন্ডনে যায়, যে দিনটির কথা আমি এখানে উল্লেখ করছি, আমি লক্ষ্য করলাম যে গাড়ীটির মধ্যে প্রশস্ত জায়গা এতো রয়েছে যে, একজন যাত্রীর জন্য এক একটি কর্ম্পাপ্টমেন্ট পড়ে রয়েছে। গাড়ীটি এ শহরের এবং আশেপাশের গ্রামের সব বাসিন্দাদের জন্য অথচ এর মধ্যে মাত্র কয়েকটি সীমিত আসন রয়েছে লন্ডল যাত্রীদের জন্য এবং দিনের পর দিন গাড়ীটি এভাবেই লন্ডনগামীদের পৌছে দেয়।

ঈশ্বর, তাঁর অপরিমেয় জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দ্বারা ঠিক এমনিভাবেই এ জগতে হারিয়ে যাওয়া মানুষদের জন্য এমনি এক বন্দোবস্ত করেছেন। তিনি আমাদের জন্য এমনি একটি অনুগ্রহরূপ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছেন, যাতে যতবেশী সংখ্যক মানুষ স্বর্গে বসবাসের জন্য বহন করেত পারেন তাই করেছেন, এ মহাবিশ্বের এক সুন্দর নগর হলো সেটি, যারা তাঁর এই মহৎ ব্যবস্থার শরীক হতে চায়, ইচ্ছা করে, তারা সে নগরের বাসিন্দা হতে পারে।

আমরা প্রচারকরা, যখন আপনাদেরকে পবিত্র সুসমাচার থেকে এ সম্পর্কে প্রচার করি, তার অর্থ দাড়ায় এর মধ্য দিয়ে আমরা আপনাদেরকে ন্যায্যতা ধার্মিকতা এবং বিশ্বস্থতার যে বুকিং অফিস রয়েছে ঈশ্বরের রাজ্যে, সেখানে যে গাড়ীটি অপেক্ষামান, তাতে যাতে আপনারা বসবাস সুযোগ পান, আসন পান, তারই জন্য আমরা আহ্বান জানাই। “পাপময়তা থেকে মুক্ত হয়ে এক গৌরবময়” জীবনের জন্য এ আহŸান। যখনই আপনি এ ধরনের আহŸান শোনেন, মুক্তির এ বার্তা আপনার কর্নকুহুরে প্রবেশ করে, তখন আপনার মন দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে এ প্রশ্ন না করুক যে, ‘এ আহ্বান কি আমার জন্য? কারণ ঐ রেলগাড়ীটিতে যেমন টিকিট প্রাপ্ত প্রত্যেকে গাড়ীটির যাত্রী হবার যোগ্যতাসম্পন্ন, সেখানে যেমন টিকিট প্রাপ্ত কোনো যাত্রীকে তার নৈতিক চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করা হয়নি, ঠিক তেননি আপনিও যখন ঈশ্বরের প্রদত্ত অনুগ্রহ রূপ ষ্টেশনে আসেন, উপযুক্ত সময়ে, যে সময়টি “এই মুহূর্ত” - “দেখ এখন সুপ্রসন্নতার সময়; দেখ এখন পরিত্রানের দিবস” (২করিন্থীয় ৬:২ পদ) - আপনি মুক্তির এ ট্রেনটি খুঁজে পাবেন, যেটি আপনাকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত এবং এক্ষেত্রে আপনি এ যাত্রার অংশীদার হবেন শুধুমাত্র এ জন্য, এ জন্য আপনি এখানে বসবার অনুমতি পাবেন, কারণ আমাদের মুক্তিদাতা খ্রীষ্ট যীশু এ গাড়ীটির সিট আপনার জন্য কেটে রেখেছেন, তিনি নিজ প্রাণ দিয়ে এ মহামূল্যবান আসনটি কিনেছেন, এ ব্যবস্থার মতো এতো উত্তম ব্যবস্থা আর নেই। সহজ ব্যবস্থা আর নেই, কারণ দেখুন, এ জন্য আপনাকে কিছু দিতে হচ্ছে না।

এ রেলওয়ে-ষ্টেশনে আসার জন্য আপনার পকেটে কোনো টাকা-পয়সা না থাকলেও চলবে, ট্রেনটি ঠিকমত, ঠিক সময়ে ছাড়বে কি না সে বিষয়েও চিন্তিত হবার কোনো অবকাশ নেই। আপনি শুধু একজন বন্ধুর সৌজন্যে এ মূল্যবান গাড়ীটিতে আসন পেয়েছেন, যে বন্ধু আপনাকে ষ্টেশনে বসে বলে দিচ্ছে - ‘আমি তোমার জন্য টাকা দিয়ে টিকিট কেটে দিয়েছি; এ কথা শুনে, আপনার এ অনুভুতি ছাড়া অন্য কিছুই মনে হবে না যে, যাক, আমার জন্য টিকিট হয়েছে, এ আত্ম-তৃপ্তি আপনাকে ঈশ্বরের অনুগ্রহের ষ্টেশনে আসতে ভরসা জোগাবে। সহজেই আপনি আসতে পারবেন, কারণ আপনি জানেন এ বিধানে, সুসমাচারের মাধ্যমে আপনি জেনেছেন, যীশু খ্রীষ্ট আপনার জন্য এ ট্রেনের টিকিট ইতিমধ্যে কেটে ফেলেছেন, তাই আপনি বিশ্বাস এবং দ্বিধাহীন চিত্তে এ ট্রেনে গিয়ে বসতে পাবেন এবং হতে পারেন সেই শাশ্বত জীবনের অধিকারী, নয় কি?

যদি আমরা সুসমাচার সম্পর্কে জানি এবং নিজেদেরকে পাপমুক্ত মানুষ হিসাবে ভাবি, তবে আমাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে যে, যীশুই হলেন আমাদের পাপ বহনকারী, কারণ খ্রীষ্টের ক্রুশারোহণই হলো সুসমাচারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় এবং এ সত্যই সুসমাচারকে সমৃদ্ধ করেছে। সাধু পৌল এ বিষয়ে এতটাই নিশ্চিত ছিলেন যে, খ্রীষ্টকে তিনি সুসমাচারে অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত করেছেন, খ্রীষ্ট ছাড়া পৌলের লেখনী কিংবা কোনো বাক্যই মধুরতম হয়নি। এটা লক্ষনীয় যে, পৌল সমগ্র সুসমাচারে তার লেখনীর মধ্য দিয়ে “যীশু” নামটি পাচঁশতবার উচ্চারণ করেছেন। “যীশু” ছিলেন তাঁর ধ্যানের প্রধান লক্ষ্য এবং তাঁর হৃদয়ের সবচেয়ে অমূল্যধন যা তাঁর লেখনীর মধ্য দিয়ে খ্রীষ্টের নামে বেরিয়ে এসেছে। তিনি নিজে অনুভব করেছিলেন যে, খ্রীষ্ট ঈশ্বরজাত ‘কিন্তু তাঁর থেকেই তোমরা সেই খ্রীষ্ট যীশুতে আছ, যিনি হয়েছেন আমাদের জন্য, ঈশ্বর থেকে জ্ঞান-ধার্মিকতা ও পবিত্রতা এবং মুক্তি‘‘- (১করিন্থীয় ১:৩০ পদ), তিনি প্রভু যীশুকে এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর গৌরব করেছেন, যাদের উদ্দেশ্যে তার লেখনী ছিল, তাদের কাছে অত্যন্ত দৃঢ়তা সহকারে অন্য কিছু নয়, শুধুমাত্র খ্রীষ্টের এ বিষয়টি প্রচার করেছেন, লিখেছেন, “কেননা আমি মনে স্থির করেছিলাম , তোমাদের মধ্যে আর কিছুই জানব না, কেবল যীশু খ্রীষ্টকে এবং তাঁকে ক্রুশে হত বলেই জানব!” (১করিন্থীয় ২:২ পদ)। এই বিশ্বাস ক্রুশে হত খ্রীষ্টের মধ্যে দিয়েই গড়ে উঠেছিল, তাই নয় এ ছিল পৌলের এক দিব্য দৃষ্টি, মূল্যবান স্বপ্ন : যারা এ স্বপ্ন, এ দৃষ্টি, এ বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে চলতে চায়, ঈশ্বর তাদের প্রত্যেককে জাগ্রত করুন।

Comments

Popular posts from this blog

উপবাস - বাইবেলের আলোকে উপবাস

প্রতিমা পূজা এমনকি মূর্তি সম্পর্কে বাইবেল কী বলে? What does the Bible says about idolatry or even image?

ঈশ্বর কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?