কী আশ্চর্য! যীশুকে সদগুরু বলায় যীশু তা মেনে নিতে পারেননি?

ঘটনাটা আমরা জানি বাইবেলে লেখা আছে - 
মার্ক ১০:১৭-১৮ পদ;
মথি ১৯:১৬-১৭ পদ।

তিনি কি সদ্গুরু নন্?
তিনি কি তাই নন্?
তিনি কেন বল্লেনআমাকে সৎ কেন বলিতেছ?”
তিনি কেন বল্লেন সৎ এক জন মাত্র আছেন
তিনি আবার বল্লেনএকজন ব্যতিরেকে সৎ আর কেহ নাই, তিনি ঈশ্বর
তাঁকে বুঝতে কি যুবকের ভুল ছিল?

প্রভু যীশু খ্রীষ্ট সেই যুবককে জানিয়ে দিলেনসৎ কেউ নাইএকজনও নাইএকমাত্র ঈশ্বর ছাড়া !!

সৎ + গুরু মিলেই তো সদ্গুরু।
সৎ মানে সত্য, প্রকৃত, যথার্থ, আদর্শ এমন এমন।
সদ্গুরু তিনি, যিনি জ্ঞানের উৎস, যিনি আত্মিকতায় মানুষকে জ্ঞান দান করেন।
সদ্গুরু যিনি প্রকৃত গুরু, অনন্তসত্তা। 
অনন্তসত্তা ছাড়া আর কেউ গুরু নন্ আর হতেও পারে না।

আমাদের সমাজে বিভিন্ন পণ্ডিত ব্যক্তিরা বিভিন্ন নামে, বিভিন্ন পোশাকে নিজেকে গুরু বা বাবা হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকেন।
অনেকে নিজের বংশ, বর্ণ, গুষ্ঠি, ধর্ম, গোত্র পদবির পরিচয়ে এক একজন গুরু হয়ে যান।

এই গুরু পরিচিত হতে গিয়ে তাদেরকে একটা ধর্মমত তৈরি করতে হয়, একটা সংগঠন গঠন করতে হয়, অদ্ভুত সব পোশাকের ব্যবহার করতে হয়।

সত্য কথা বলতে, এসব গুরুরা যারা নিজেদের সদ্গুরু মনে করেন তারা কুসংস্কার আর অদ্ভুত সব জ্ঞানে তারা অন্ধ আর মিথ্যা সংস্কারে জড়িয়ে থাকে।

তাদের জ্ঞানের বিকাশ ঘটাতে পারছে না, তারা সমাজকে সেরকম কিছু দিতেও পারছে না।

এদের অনুসারীরা ভালো ভালো চিন্তা থেকে, মুক্তচিন্তা থেকে, মানুষের আধুনিক চিন্তা থেকে এরা কুসংস্কারে জর্জরিত।

এসব সদ্গুরুদের অনুসারী শিষ্যেরা গুরুরা যা বলেন, যা করতে বলেন তার বাইরে আসতে পারে না।

সাধারণ মানুষেরা এসব গুরুদের আর তাদের অনুসারীদের কাছে বেমানান।

এসব গুরুদের নির্লজ্জ আচরণ, কথাবার্তা তাদের শিষ্যদের কাছে অমৃত বাণী।

উন্নত চিন্তা, সুস্থ্য বিবেচনা তাদের কাছ থেকে আশা করা যায় না।

একটা দৃষ্টান্ত আমি দেই যিনি তার ভক্তদের কাছেসদ্গুরুনামে পরিচিত।
যিনি নিজেকে পরিচয় দিয়েছেনঈশ্বরমানব
তিনি ভারতের বিতর্কিত স্বঘোষিত ধর্মগুরু রামপাল দাস।

ভক্তদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পুলিশ অনেক নাটকীয়তা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে গত ২০১৪ সালের এক রাতে তাকে গ্রেফতার করে।
এই সদ্গুরুর আশ্রম থেকে উদ্ধার করা হয় ভক্তের লাশ।

কিন্তু কে এই কথিতঈশ্বরমাবনবা সদ্গুরু রামপাল দাস?
তিনি কৃষক পরিবারে জন্মেছেন।

যাহোক তিনি জীবনে অনেক কিছু পেরিয়ে ১৯৯৫ সালে নিজেকেকবীরের অবতারবলে প্রচার শুরু করেন।

অবস্থায় তিনি তিনশো কোটি রুপির মালিক হন এই সদ্গুরু।
তার নামে ১২ একর জায়গা নিয়ে তার আশ্রম।
তা ২৫ লাখ অনুসারী শিষ্য।

যাহোক অনেক ঘটনায় এই সদ্গুরু খুনের দায়ে ১৮ মাস জেল খেটেছেন।
তাকে আবারো খুনের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়, তাকে এখনো হাজতে থাকতে হচ্ছে। 

এই হলো লাখ লাখ অনুসারীদের সদ্গুরুঈশ্বরমানব

পবিত্র বাইবেলের ধনী যুবক যীশুকে চিনতে পারেনি।

তিনি যীশুর কথা শুনেছেন।
যীশুর অনেক আশ্চর্য কাজের কথা শুনেছেন।
তিনি জগতের অনেক গুরুদের মতো যীশুকেও তাদের মধ্যে থেকে একজন গুরু হিসাবে মনে করেছিলেন।

যীশুকে সম্মান জানাতে গিয়ে সদ্গুরু বলে সম্বোধন করেছেন কিন্তু যীশুকে প্রভু বলে সম্বোধন করেনি, সে যীশুকে প্রভু বলে স্বীকার করতে পারেনি, সে প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে চিনতে পারেনি।

যীশু বুঝতে পেরেছিলেন যে যুবকটি জগতের অনেক তথাকথিত শ্বঘোসিত বহু গুরুদের সাথে তাঁকে সে মিলিয়ে ফেলেছে।

যীশুকে সে জগতের অনেক গুরুদের মধ্যে থেকে একজন সদ্গুরু মনে করেছে, কিন্তু জগতেতো কোনো গুরু- সৎ নন্, যীশু তো জগতে থাকা অন্যান্য গুরুদের মতো তিনি নন্।

যীশুকে যুবকটির এমন চিন্তায় সদ্গুরু সম্বোধন করার তিনি সন্তুষ্ট হতে পারেনি।

যীশু তাকে বুঝাতে চেয়েছেন যে তিনি জগতের অন্যান্য গুরুদের মতো কোনো একজন গুরু নন্ যাকে সৎ বলা যায় আর জগতে কোনো সদ্গুরুও নাই যেভাবে যুবকটি চিন্তা করেছিল।

তাই তিনি যুবককে বললেন আমাকে কেন সদ্গুরু বলছো, একজনই মাত্র সদ্গুরু আছেন - তিনি ঈশ্বর।

অর্থাৎ যুবকটির যীশুকে প্রভু বলা উচিত ছিল, তিনি ঈশ্বর।

অনেকে আবার যীশুকে বন্ধু বলেও সম্বোধন করেন।
অনেকে বন্ধু যীশু, বন্ধু যীশু বলে প্রার্থনা করেন।

অবশ্যই যীশু পাপীদের বন্ধু (মথি ১১:১৯ পদ)

ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদাকে মিত্র/বন্ধু বলেছেন (মথি ২৬:৫০ পদ)

কিন্তু কখনো কোনো শিষ্য যীশুকে বন্ধু বলে সম্বোধন করেনি।
অবশ্যই তিনি বন্ধু, আর বন্ধুর এক ব্যাখ্যাও আছে।

তবে তিনি প্রথমে আপনার প্রভু!!
তিনি আপনার প্রভু না হলে বন্ধু হতে পারেন না।

বন্ধুগণ, আমরা যীশুকে কী বলে সম্বোধন করছি?

তিনি কি আপনার প্রভু, যিঁনি ঈশ্বর!!

Comments

Popular posts from this blog

উপবাস - বাইবেলের আলোকে উপবাস

প্রতিমা পূজা এমনকি মূর্তি সম্পর্কে বাইবেল কী বলে? What does the Bible says about idolatry or even image?

ঈশ্বর কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?