“বাইবেলে বর্ণিত কোরবানির নিগুঢ়তত্ব”
“ঐ দেখ খোদার মেষশাবক, যিনি মানুষের সমস্ত গুনাহ্ দূর করেন” (৪র্থ সিপারা, ইউহোন্না ১:২৯ আয়াত)
বন্ধুগণ,
ইঞ্জিল শরীফ অনুসারে ঈসা মসিহ্-ই হলেন সেই মেষশাবক, কিন্তু কোন্ সেই মেষশাবক?
এ হলো সেই মেষশাবক যার বিনিময়ে হযরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর পুত্রের জীবন রক্ষা হয়েছে।
হযরত ইব্রাহিম (আঃ) বলেছিলেন, মেষশাবক খোদা-ই যোগাবেন।
আমাদের রক্ষার জন্য একটি মহা-কোরবানি হয়েছিল।
সেই কোরবানির মেষ খোদা নিজেই যুগিয়েছেন।
ঈসা মসিহ্ নিজেই তাঁর জীবনকে কোরবানি হিসাবে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং তিনি তা করেছিলেনও।
কিন্তু যেভাবে তিনি (ঈসা মসিহ্) স্বেচ্ছায় নিজ প্রাণ দিয়েছিলেন সেই একইভাব আপন ক্ষমতা বলে তিনি তাঁর প্রাণ ফিরিয়েও নিয়েছিলেন।
তিনি আবার জীবিত হয়ে উঠলেন।
তাঁর পুনরুত্থানই প্রমাণ করে যে, তাঁর মৃত্যু পরাজয় ছিল না।
জীবনকে কোরবানি দেবার মধ্য দিয়ে ঈসা মসিহ্ হযরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণীকে পূর্ণ করেছিলেন যা তাঁর বংশধরদের উদ্দেশ্যে করেছিলেন।
বহু বছর আগেই সেই বাণীতে তিনি বলেছিলেন, . .
“খোদা নিজেই কোরবানীর সেই মেষ যোগাবেন।”
ইনি সেই মেষশাবক যিনি মানুষের গুনাহের বোঝা বহন করেন।
তাঁর সেই জীবন কোরবানি আজও মানুষকে তাদের গুনাহ্ থেকে নাজাত দান করতে সমর্থ, কারণ তা মৃত নয় বরং জীবিত ও শাশ্বত।
আমি আবারও বলছি . .
ঈসা মসিহ্ ছিলেন কোরবানি জন্য খোদার প্রদানকৃত উপযুক্ত একটি মেষশাবক (ভেড়ার বাচ্চা)।
যিনি ছিলেন নিখুঁত নিষ্কলঙ্ক পবিত্র এবং কোরবানি হওয়ার জন্য ৩৩ বছরের উপযুক্ত বয়সের।
তিনি নিজেই কোরবানি হওয়ার জন্য উপযুক্ত মেষ, ইমাম এবং মহান মহা-ইমাম।
তিনি এমনই উপযুক্ত মহান “মহা ইমাম ছিলেন, যিঁনি পবিত্র, দোষশূন্য ও খাঁটি, অহিংসুক, বিমল, তিনি গুনাহ্গার মানুষের চেয়ে আলাদা, এবং খোদা তাঁকে আসমানের চেয়েও উপরে তুলেছেন।” (১৯শ সিপারা : ইবরানী ৭:২৬ আয়াত)
তিনি নিজেই আমাদের পক্ষে আমাদের জন্য চুড়ান্তভাবে কোরবানি হয়েছিলেন যেন আমাদের আর বারবার কোনো নিম্ন পশু কোরবানীর অর্থাৎ পশু জবাই করার প্রয়োজন না হয়।
তিনি ছিলেন মহান মহা-ইমাম।
পুরানো ধারায় ইমামদের একমাত্র এবং সবচেয়ে বড় কাজ ছিল বনি-ইস্রায়েলদের আনিত পশু উৎসর্গ করার জন্য আনিত পশু জবাই দেওয়া।
ঈসা মসিহ্ নিজেই কোরবানির উপযুক্ত মেষশাবক ছিলেন আর তিনি নিজেই কোরবানি হওয়ার জন্য একমাত্র মহান মহা-ইমাম ছিলেন।
তাই তিনি তাঁর নিজেকে কোরবানির উৎসর্গের মাধ্যমে সেই ইমামের কর্মটিও নিজেই সমাপ্ত করেছেন।
তাই এখন আর কোনো ইমাম নাই আর প্রয়োজন হয় না যে বারবার পশু জবাই দেবে যা পুরানো ধারায় ঐ সেই ইমামদের কর্ম ছিল।
ঈসা মহিস্-ই কোরবানির মেষশাবক এবং কোরবানি দেওয়ার জন্য পবিত্র মহা-ইমাম ছিলেন।
এই কোরবানির রক্ত কোনো ছাগের বা গোবৎসের রক্ত নয় কিন্তু খোদার যোগান দেওয়া মেষশাবকের রক্ত যা চিরন্তন অর্থাৎ অনন্ত কালের জন্য মুক্তি/নাজাত এনেছে।
এই মেষশাবক, ভেড়ার বাচ্চার রক্ত কতো সুনিশ্চিতভাবে আমাদের অর্থহীন/প্রাণহীণ আচার-অনুষ্ঠান থেকে মুক্তি দেয় যার দ্বারা আমরা জীবন্ত খোদার আরাধনা করতে সক্ষম হই।
আমরা শুধু তওবা করে, মন ফিরিয়ে সেই কালভেরির দিকে দৃষ্টি দেই এবং সেই মহা কোরবানি এবং সর্বপ্রধান মহান মহা-ইমামের কর্মকে বিশ্বাস করি।
আমেন! আমেন !! আমেন !!!
১৯ সিপারা : ইবরানী ৯:১১-২৮ আয়াত পর্যন্ত পাঠ করলে এর গুরুত্ব জানা যাবে।
Comments