যীশু খ্রীষ্ট-ই ঈশ্বর - তাঁর ঐশ্বরত্ব

যীশু খ্রীষ্ট-ই একমাত্র যিনি সনাতন অর্থাৎ নিত্য, চিরবর্তমান এবং শাশ্বত

পবিত্র বাইবেল অনুযায়ী প্রমাণ হয় যে যীশু খ্রীষ্ট-ই ঈশ্বর। আমাদের সমাজ আজ শাস্ত্রের প্রকাশিত বাক্যের শেষ-কালীয় ঘটনাগুলোর খুব কাছেই। শয়তান আর তার অশুভ দুষ্ট ক্ষমতার শক্তি দিয়ে মানবতাকে প্রতারিত করতে সবকিছুই করছে আর মানুষদের সেই “জন্তু”-রূপে জানা সেই “মহাপ্রবঞ্চক” এর ভক্তিশ্রদ্ধা, পুজা-আরাধনা, প্রণিপাত ও ভজনা করিয়ে চলছে (প্রকাশিত বাক্য ১৩:১-১৮ পদ)। শয়তানের সব সময়ই ঈশ্বররূপে ভক্তিশ্রদ্ধা, প্রণিপাত, আরাধনা ও ভজনা পাওয়ার ইচ্ছা তার ছিল (যিশাইয় ১৪:১২ পদ; লূক ৪:৭ পদ), আর সামনে আসা মহা-ক্লেশের (Tribulation) সময় সে ঈশ্বরের মতো উপাস্য, আরাধ্য ও পূজারী হবে (২থিষলনীকীয় ২:৩-৪ পদ)। শয়তান বুঝতে পারছে যে মানুষের হৃদয়, মন ও অন্তর থেকে অবশ্যই তাকে প্রথমে সত্য ঈশ্বরকে সিংহাসনচ্যুত করতে হচ্ছে। আর তাই তাকে অবশ্যই যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বরত্বকে আক্রমন করতে হচ্ছে।

আজ দেখা যায় বিভিন্ন প্রকার দল, নতুন নতুন ভ্রান্ত দলের নতুন নতুন দর্শন, মত ও রীতিনীতি, নিত্য নতুন চিন্তার সমস্ত খ্রীষ্টবহির্ভূত ব্যক্তি আর দল যারা মণ্ডলীর মাধ্যমে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বরত্বের উপর আক্রমণ চলছে। এমনকি আধুনিক বাইবেলের নতুন নতুন অনুবাদে তাদের নিজেস্ব পদ্ধতীতে যীশু খ্রীষ্টের তাঁর ঈশ্বরত্বকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি কলেজ/ইউনিভাসিটিতেও এই বিশ্বাসের পক্ষে কোনো আলোচনা নাই। আপনি দেখুন কিং জেমস্ ভার্ষণ ইংরেজি বাইবেলে উল্লেখ আছে “God was manifest in the flesh” (1 Timothy 3:16 KJV) - বাংলায় এর অনুবাদ হতে হয় - ঈশ্বর মাংসে প্রকাশিত হলেন, অর্থাৎ ঈশ্বর মানুষ হিসাবে প্রকাশিত হলেন। কিন্তু দেখুন অন্যান্য বাইবেলে বলা হয়েছে “যিনি মাংসে প্রকাশিত হইলেন”। কিং জেমস্ ভার্ষন-এ স্পষ্টভাবে ‘God’ অর্থাৎ ঈশ্বর’ উল্লেখ থাকলেও পরবর্তীতে অন্যান্য বাইবেল অনুবাদে ঈশ্বর শব্দটি বাদ দিয়ে এর পরিবর্তে ‘যিনি’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি ঈশ্বর-ই রক্তমাংসে অর্থাৎ মানুষ হয়ে প্রকাশিত হয়েছেন যাকে যীশু বলা হয়েছে। ‘যিনি’ কথায় উল্লেখ করে ঈশ্বরের পরিচয় অস্পষ্ট হয়ে গেল। এভাবে আমরা জানি যে কতকগুলো ভ্রান্ত বিশ্বাসের দল যেমন Jehovah's Witnesses, Christadelphian, Mromons আমাদের দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে যারা যীশুর ঈশ্বরত্বকে স্বীকার করে না। তারা খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের বিভ্রান্ত করছে। 

যাহোক, আপনি নিজে এ বিষয়ে কী চিন্তা করেন? যীশু খ্রীষ্ট সম্পর্কে কী বিশ্বাস আপনি করেন? ঈশ্বরের বাক্যের সাথে আপনার বিশ্বাস কি সমর্থন দেয়? এটাই আসল আলোচনার বিষয় : বাইবেল কী বলে?

আমরা আপনাকে আপনার পবিত্র বাইবেল থেকে চ্যালেন্স করছি এবং আপনাকে যেসব বিষয় উপস্থাপন করছি তার উল্লেখযোগ্য সব বিষয়গুলো পরিক্ষা করে দেখুন। যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বরত্বকে অর্থাৎ তিনিই ঈশ্বর এর জন্য বাইবেলে বারোটি প্রমাণ দেওয়া হলো। আর এই বারোটি প্রমাণে দেখবেন যে খ্রীষ্ট-ই হলেন ঈশ্বর। অনুগ্রহপূর্বক আমাদের কথায় অন্য কিছু মনে করবেন না। আমাদের এই জগতটা প্রতারণা এবং প্রবঞ্চণায় ভরা কারণ অনেকেই আছেন যারা ঘটনা অনুসন্ধান না করে তারা যা শোনেন তাই বিশ্বাস করেন। আপনাকে আপনার নিজের বাইবেল অনুসন্ধান করার জন্য অনুরোধ করছি আর চাইছি যেন ঈশ্বরের বাক্যের সাথে আপনার নিজের একটা দৃঢ় বিশ্বাস গড়ে উঠুক।

১।    যীশু খ্রীষ্ট হলেন রক্তমাংসে দেহধারণ (মূর্তিমান) ঈশ্বর।

যিশাইয় ৭:১৪ পদকে উল্লেখ করে মথি ১:২৩ পদে বলে, “দেখ, সেই কন্যা গর্ববতী হইবে, এবং পুত্র প্রসব করিবে, আর তাঁহার নাম রাখা যাইবে ইম্মানুয়েল।” অনুবাদ করিলে ইহার অর্থ, ‘আমাদের সহিত ঈশ্বর।” এই দুই পদ অনুসারে যীশু ছিলেন “আমাদের সংগে ঈশ্বর”, যখন তিনি এই পৃথিবীতে চলাফেরা করেছেন। তিনি শুধু “আমাদের সংগে থাকার জন্য একজন নিযুক্ত” কিংবা ‘আমাদের সংগে ঈশ্বরের পুত্র’-ই ছিলেন না, তিনি ঈশ্বরও ছিলেন। যেমন ১তীমথিয় ৩:১৬ পদে উল্লেখ আছে, “ঈশ্বর মানুষ হিসাবে প্রকাশিত হলেন” (কিং জেমস  ভার্ষন বাইবেল )। যোহন ১:১৪ পদ আমাদের এমন বলে যে “আর সেই বাক্য মাংসে মূর্তিমান হইলেন, এবং আমাদের মধ্যে প্রবাস করলেন।” সখরিয় ১২:১০ পদে ঈশ্বর আমাদের বলে যে তিনি (ঈশ্বর) পাপীদের দ্বারা বিঁধবেন (বিদ্ধ হবেন) এবং প্রকাশিত বাক্য ১:৭ পদে উল্লেখ আছে যে যীশু খ্রীষ্ট তিনি নিজেই ভাববানি পূর্ণ করেছেন! পবিত্র বাইবেল উপস্থাপন করে যে যীশু খ্রীষ্ট একজন মহান ভাববাদী এবং একজন গুরু থেকেও অনেক অধিক। ঈশ্বরের বাক্য উপস্থাপন করে যে যীশু খ্রীষ্ট হলেন রক্তমাংসে গঠিত দেহধারণ ঈশ্বর। “ইনিই (যীশু) অদৃশ্য ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি, সমুদয় সৃষ্টির প্রথমজাত; কেননা তাঁহাতেই সকলই সৃষ্ট হইয়াছে” (কলসীয় ১:১৫ পদ)।

২।    যীশু খ্রীষ্ট হলেন অনন্ত/চিরকালস্থায়ী।

যোহন ১০:২৮ পদে যীশু বলেন, “আর আমি তাহাদিগকে অনন্ত জীবন দিই, তাহারা কখনই বিনষ্ট হইবে না, এবং কেহই আমার হস্ত হইতে তাহাদিগকে কাড়িয়া লইবে না।” যদি যীশু খ্রীষ্ট অনন্ত এবং চিরকালস্থায়ী না হতেন তাহলে কীভাবে তিনি “অনন্ত, চিরকালস্থায়ী জীবন” দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন?

ভাববাদীদের বাক্য : মীখা ৫:২ পদে উল্লেখ আছে যে যীশু খ্রীষ্ট হলেন “অনন্তকাল থেকে”, যা সম্পূর্ণভাবে গীতসংহিতা ৯৩:২ পদ এবং যিশাইয় ৬৩:১৬ পদে ঈশ্বর সম্পর্কে তাই বলে!

যোহন ৮:৫৮ পদে যীশু খ্রীষ্ট, ফরীশী অর্থাৎ একদল গোঁড়া যিহূদীদের বলেছেন, “. . . সত্য সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, অব্রাহামের জন্মের পূর্বাবধি আমি আছি।” “আমি আছি” শর্তটা হুবহু একই শর্ত যা ঈশ্বর যাত্রাপুস্তক ৩:১৪ পদে তাঁর নিজের সম্পর্কেই বলেন! যীশু পবিত্র বাইবেলের অনন্তকালস্থায়ী ঈশ্বর হওয়াটাই দাবি করেন।

৩।    যীশু খ্রীষ্টের রয়েছে ঐশ্বরিক (স্বর্গীয়) সব নাম বা খেতাব। 

আপনার নিজের জন্য এসব উল্লেখ করা পদগুলো দেখুন :

মথি ২২:৪১-৪৫ পদ, “আর ফরীশীরা একত্র হইলে যীশু তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, খ্রীষ্টের বিষয়ে তোমাদের কেমন বোধ হয়, তিনি কাহার সন্তান? তাহারা বলিল, দায়ূদের। তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, তবে দায়ূদ কি প্রকারে  আত্মার আবেশে তাঁহাকে প্রভু বলেন? তিনি বলেন - “প্রভু আমার প্রভুকে কহিলেন, তুমি আমার দক্ষিণে বস, যাবৎ আমি তোমার শত্রুগণকে তোমার পদতলে না রাখি।” অতএব দায়ূদ যখন তাঁহাকে প্রভু বলেন, তখন তিনি কি প্রকারে তাঁহার সন্তান?”

যীশু গীতসংহিতার ১১০:১ পদে, যীশু “প্রভু” হবার দাবি করেছেন। “সদাপ্রভু আমার প্রভুকে বলেন, তুমি আমার দক্ষিণে বস, যাবৎ আমি তোমার শত্রুগণকে তোমার পাদপীঠ না করি”

যোহন ২০:২৮ পদে থোমা যীশুকে “প্রভু আমার, ঈশ্বর আমার!” বলে সম্বোধন করায় যীশু তখন তাকে কোনো ধমক দেন নাই বা তাকে বলেন নাই ‘থোমা তুমি এ কী বলছ আমাকে? যীশু তাকে এ বিষয় কোনো সংশোধনও করে দেন নাই। যীশু কি তখন থোমাকে বলেছিলেন যে তিনি ঈশ্বর নন্? বরং এর পরিবর্তে যীশু তাকে তার কথায় সমর্থন জানিয়ে বলেছেন যে “তুমি আমাকে দেখিয়াছ বলিয়া বিশ্বাস করিয়াছ, ধন্য তাহারা, যাহারা না দেখিয়া বিশ্বাস করিল” (যোহন ২০:২৯ পদ)। যীশু থোমার কথা গ্রহণ করেছেন, তাকে সমর্থন জানিয়েছেন তার সম্বোধনে। যীশু তাঁর শিষ্য থোমাকে না বললেও থোমা আগে থেকেই প্রমাণে বিশ্বাস করেছিলেন যে তিনিই ঈশ্বর যিনি রক্তমাংসে জন্মগ্রহণে যীশু নামে পরিচিত, যিনি ইম্মানুয়েল (আমাদের সহিত ঈশ্বর)। যীশু হলেন ঈশ্বর আর তিনি এখানে থোমার এই বিশ্বাস করার দাবিটাকে সম্পূর্ণ সমর্থন করেছিলেন, সত্য বলে অনুমোদন করেছিলেন এবং সত্যায়িত করেছিলেন। তিনি এর পরে এও বলেছিলেন যে অন্যেরা যারা তাঁকে না দেখে একই বিশ্বাস করে তারাও ধন্য।

তীত ২:১৩ পদ আমাদের নিবেদন জানিয়েছে যেন আমরা আমাদের ঈশ্বর ও উদ্ধারকর্তা যীশুর অপেক্ষায় থাকি (২ পিতর ১:১ পদ দ্রষ্টব্য)। ইব্রীয় ১:৮ পদে পিতা ঈশ্বর যীশুর বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছেন, ‘কিন্তু পুত্রের বিষয়ে তিনি (ঈশ্বর) বলেছেন, “হে ঈশ্বর (O God), তোমার সিংহাসন অনন্তকালস্থায়ী; আর সারল্যের শাসনদণ্ডই তাঁহার রাজ্যের শাসনদণ্ড।” এখানে পিতা যীশুকে বলেছেন, “হে ঈশ্বর (O God)”, যা স্পষ্টই প্রকাশ করে যে যীশুই ঈশ্বর।

ভাববাদীদের বাক্য : যিশাইয় ৯:৬ পদে তিনি হলেন “বিক্রমশালী ঈশ্বর,” এবং “সনাতন (নিত্য, শাশ্বত চিরস্থায়ী) পিতা”

যোহন ১০:১১-১৪ পদে তাঁর নিজের কথা অনুযায়ী, গীতসংহিতা ২৩:১ পদ, গীতসংহিতা ৮০:১ পদ এবং যিহিষ্কেল ৩৪:১২ পদে তিনি হলেন “রাখাল”

ঈশ্বর হলেন “উদ্ধারকর্তা/মুক্তিদাতা” এই সত্য কথা রয়েছে, যিশাইয় ৪৩:৩, ৪৩:১১, ৪৫:১৫, ৪৫:২১ পদ, হোশেয় ১৩:৪ পদ, লূক ১:৪৭ পদ এবং ১তীমথিয় ৪:১০ পদ, এমনকি যীশু খ্রীষ্টকেও এই একই নাম বা খেতাব দেওয়া হয়েছে যা-কিনা লূক ২:১১ পদ, ফিলিপীয় ৩:২০ পদ, ২তীমথিয় ১:১০ পদে এবং ২পিতর ২:২০ পদে রয়েছে।

ঈশ্বর হলেন পাহাড় (শৈল) এই সত্য কথা রয়েছে দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৪, ৩২:১৫, ৩২:১৮, ৩২:৩০-৩১ পদ, ১শমূয়েল ২:২ পদ এবং গীতসংহিতা ১৮:৩১ পদ, এমনকি এই একই নাম বা খেতাব প্রভু যীশু খ্রীষ্টকেও দেওয়া হয়েছে যা-কিনা ১করিন্থীয় ১০:১-৪ পদ, ১পিতর ২:৭-৮ পদ এবং ৯:৩৩ পদে রয়েছে।

ঈশ্বর হলেন “আলো” যা গীতসংহিতা ২৭:১ পদ এবং ভাববাদীদের বাক্য : মীখা ৭:৮ পদে আছে এবং পরে যীশু হলেন “আলো” যোহন ১:৪-৯ পদ এবং যোহন ৮:১২ পদে আছে।

ভাববাদীদের বাক্য : যিশাইয় ৪৪:৬ পদে ঈশ্বর বলেন “. . . আমিই আদি, আমিই অন্ত, আমি ভিন্ন আর কোনো ঈশ্বর নাই।” প্রকাশিত কালাম ১:১৭,১৮ পদে খ্রীষ্ট বলেন, “ভয় করিও না, আমি প্রথম ও শেষ ও জীবন্ত . . . আমি যুগপর্যায়ের যুগে যুগে জীবন্ত।”

পবিত্র শাস্ত্রে অত্যন্ত স্পষ্ট: পুরাতন নিয়মের যীশু খ্রীষ্ট হলেন ঈশ্বর।

৪।    যীশু ঈশ্বরের সমান হবার দাবি করেন। 

যীশু বলেন “অতএব তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর; আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি, সেই সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও। আর দেখ, আমিই যুগান্ত পর্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।” (মথি ২৮:১৯-২০ পদ)।

যদি যীশু খ্রীষ্ট ঐশ্বরিক (ঈশ্বরত্ব) না হতেন, তাহলে কেন তিনি তাঁর নিজেকে পবিত্র ত্রিত্বে অংশীদার বলে গণ্য করলেন?

যীশু বলেন “. . . যে আমাকে দেখিয়াছে, সে পিতাকে দেখিয়াছে। তুমি কেমন করিয়া বলিতেছ, ‘পিতাকে আমাদের দেখাউন’?” যোহন ১৪:৯ পদ।

বাইবেল কখনো নির্দিষ্টভাবে লেখা হয় নাই যে, যীশু বলেছেন - ‘আমিই ঈশ্বর’ । তার মানে এই না যে, তিনি নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করেননি। যোহন ১০:৩০ পদে লেখা যীশুর কথা উদাহরণ হিসাবে নেওয়া যায়, “আমি ও পিতা, আমরা এক।” তাঁর বলা এই কথা - অর্থাৎ নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করার মধ্য দিয়ে যিহূদীদের যে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, তা আমাদের জানা দরকার। এই কারণে তারা তাঁকে পাথর মারতে উদ্যত হয়েছিল। “. . . কারণ তুমি মানুষ হইয়া আপনাকে ঈশ্বর করিয়া তুলিতেছ, এই জন্য” (যোহন ১০:৩৩খ পদ)। যিহূদীরা যীশুর ঈশ্বরত্বের অর্থাৎ ঈশ্বরের দাবি ঠিকই বুঝতে পেরেছিল। এখানে লক্ষণীয় যে, যীশু তাঁর ঈশ্বরত্বের অর্থাৎ নিজেকে ঈশ্বর দাবিকে অস্বীকার করেন নাই। তিনি যখন বলেছেন, “আমি ও পিতা, আমরা এক।” (যোহন ১০:৩০ পদ), তখন তিনি বলতে চেয়েছেন যে, তিনি ও পিতা স্বভাবে এবং মানে অভিন্ন। যোহন ৮:৫৮ পদ আরো একটি উদাহরণ। যীশু ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, “সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, অব্রাহামের জন্মের পূর্ববধি আমি আছি।” যে যিহূদীরা তাঁর এই কথা শুনেছিল, তারা ঈশ্বর নিন্দা বলে তাঁকে মারার জন্য পাথর তুলে নিয়েছিল, কারণ মোশির আইন-কানুনে সেই রকমই বলা হয়েছে (লেবীয় ২৪:১৫ পদ)। যীশু বলেন “আমি ও পিতা, আমরা এক” (যোহন ১০:৩০ পদ)। এতেই কি আরো স্পষ্ট হয় না?

যীশু ছিলেন “ঈশ্বরের আকার বা গঠন” যা-কিনা ফিলিপীয় ২:৬ পদে বলে, আর যা তিনি বিবেচনা করেছেন তা “ঈশ্বরের সহিত সমান থাকা . . . ” হওয়াটা বাদ যায় না।

নতুন নিয়মের যীশু খ্রীষ্ট ঈশ্বরের সাথে “এক” হওয়া দাবি করেন এবং ঈশ্বরের “সমান” হওয়া দাবি করেন।

প্রেরিত ২০:২৮খ পদ আমাদের বলেছে যে - পালক হিসাবে “ঈশ্বরের সেই মণ্ডলীকে পালন (দেখাশোনা) কর।” ঈশ্বর সেই মণ্ডলীকে নিজের রক্ত দিয়ে কিনেছেন - “যাহাকে  (সেই মণ্ডলীকে) তিনি নিজ রক্ত দ্বারা ক্রয় করিয়াছেন” - কে ঈশ্বরের মণ্ডলীকে তাঁর নিজের রক্ত দিয়ে কিনেছেন? তিনি কে? তিনি যীশু খ্রীষ্ট। প্রেরিত ২০:২৮ পদ স্পষ্টই বলেছে যে, ঈশ্বর তাঁর নিজ রক্ত দিয়ে তাঁর মণ্ডলী কিনেছেন। সেজন্য, যীশুই হলেন ঈশ্বর!

তীত ২:১৩ পদ আমাদের নিবেদন জানিয়েছে যেন আমরা আমাদের ঈশ্বর ও উদ্ধারকর্তা যীশুর অপেক্ষায় থাকি (২ পিতর ১:১ পদ দ্রষ্টব্য)। ইব্রীয় ১:৮ পদে পিতা ঈশ্বর যীশুর বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছেন, ‘কিন্তু পুত্রের বিষয়ে তিনি (ঈশ্বর) বলেন, “হে ঈশ্বর (O God), তোমার সিংহাসন অনন্তকালস্থায়ী; আর সারল্যের শাসনদণ্ডই তাঁহার রাজ্যের শাসনদণ্ড।” এখানে পিতা যীশুকে বলেছেন, “হে ঈশ্বর (O God)”, যা স্পষ্টই প্রকাশ করে যে যীশুই হলেন ঈশ্বর।

৫।    যীশু খ্রীষ্ট সর্বত্র বিরাজমান। 

একমাত্র ঈশ্বর-ই একই সময় সব স্থানে থাকার ক্ষমতা আছে, এমনকি যীশু খ্রীষ্টও এই একই ক্ষমতার দাবি করেন।

যীশু বলেন, “কেননা যেখানে দ্ইু কি তিন জন আমার নামে একত্র হয়, সেখানে আমি তাদের মধ্যে আছি” (মথি ১৮:২০ পদ)। কীকরে এমন হওয়া সম্ভব যদি যীশু ঐশ্বরিক (ঈশ্বরত্ব) না হতেন?

একই রকম সত্য কথা যীশু আবারো সেরকম ভাবে বলেছেন, “. . . আর দেখ, আমিই যুগান্ত পর্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।” (মথি ২৮:২০ পদ)। কীভাবে যীশু সব সময় তাঁর প্রত্যেকটা বিশ্বাসীদের সংগে থাকতে পারেন আবার একই সময়ে তিনি স্বর্গেও থাকতে পারেন? তিনি হলেন ঈশ্বর, কারণ একমাত্র ঈশ্বর-ই এইরকম হন বা এইরকম গুণ তাঁর থাকে!

৬।    যীশু খ্রীষ্ট সর্বশক্তিমান। 

যা-কিনা, তিনিই হলেন ক্ষমতাবান। তাঁর আছে সমস্ত শক্তি।

প্রকাশিত বাক্য ১৯:৬ পদে উল্লেখ আছে  “কেননা আমাদের ঈশ্বর প্রভু, যিনি সর্বশক্তিমান, তিনি রাজত্ব গ্রহণ করিলেন।” পরে ১তীমথিয় ৬:১৫ পদে বলে, যীশু খ্রীষ্ট তিনি নিজেই হলেন “. . . যাহা সেই পরমধন্য ও একমাত্র সম্রাট, রাজত্বকারীদের রাজা ও প্রভুত্বকারীদের প্রভু . . . ” যদি যীশু একমাত্র শাসনকর্তা হন, তাহলে অবশ্যই প্রকাশিত বাক্যের ১৯:৬ পদের অবশ্যই তিনিই সেই একজনই, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর!

আরো দেখুন কলসীয় ২:৯-১০ পদ, প্রকাশিত বাক্য ২:২৬ পদ এবং মথি ২৮:১৮ পদ।

৭।    যীশু খ্রীষ্ট সর্বজ্ঞ।

সর্বজ্ঞ হওয়া সবকিছুর জ্ঞান থাকা, সাধারণ মানুষ এ থেকে আলাদা। বাইবেল প্রকাশ করে যে যীশু সত্যিই সর্বজ্ঞ ছিলেন।

সাধারণ মানুষ ভিন্ন রকম, আলাদা, যীশু খ্রীষ্ট নিজের মৃত্যু সম্পর্কে বিস্তারিত তাঁর সব কিছুই জানা ছিল। মথি ১৬:২১ পদে যীশু বলেন যে তাঁর যিরূশালেমে যেতে হবে, প্রাচীন নেতাদের, প্রধান পুরোহিতদের ও ধর্ম-শিক্ষকদের থেকে অনেক দুঃখভোগ করতে হবে, মৃত্যুবরণ করতে হবে এবং তিন দিনে তাঁকে জীবিত হতে হবে। তিনি একই কথা পুনরায় মথি ২০:১৯ পদে বলেছেন।

মথি ১৭:২৭ পদে মাছ ধরার আগেই মাছটির মুখের ভিতরে থাকা একটা টাকা (রূপার মুদ্রা) থাকার কথা যীশু খ্রীষ্টের আগে থেকেই তাঁর জানা ছিল বলে তিনি জানান।

তিনি একজন মহিলার সম্পর্কে বিস্তারিত সব কিছুই জানতেন, যার সাথে তিনি আগে কখনই দেখা করেননি ও কথা বলেননি। (যোহন ৪:১৬-১৯ পদ)। তাঁর আবার নথনেল সম্পর্কে সব কিছুই জানা ছিল (যোহন ১:৪৭-৪৯ পদ)

তাহলে দেখুন, যীশু খ্রীষ্ট হলেন ঐশ্বরিক (ঈশ্বরত্ব) কারণ তিনি সর্বজ্ঞ।

৮।    যীশু খ্রীষ্টের সৃষ্টির ক্ষমতা আছে।

যীশুর ঈশ্বরত্ব (ঈশ্বরের দাবি) সম্পর্কে যোহন বারবার বলেছেন। যোহন ১:১-৩ পদে বলে, “. . . এবং বাক্য ঈশ্বর ছিলেন” এবং ১৪ পদে, “সেই বাক্য মাংসে মূর্তিমান হইলেন” (বাক্য মানুষ হয়ে জন্মগ্রহণ করলেন)। “আদিতে বাক্য ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বরের সহিত ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বর ছিলেন। তিনি আদিতে ঈশ্বরের কাছে ছিলেন। সকলই তাঁহার দ্বারা হইয়াছিল, যাহা হইয়াছে, তাহার কিছুই তাঁহা ব্যতিরেকে হয় নাই। “বাক্য” হলেন সেই প্রভু যীশু খ্রীষ্ট (যোহন ১:১৪ পদ; যোহন ১:১-৩; ৫:৭ পদ) এবং যোহন ১:৩ পদে বলে যে, সব কিছুই তাঁর দ্বারা হয়েছে! এই পদগুলো স্পষ্টভাবে বলে যে, যীশু মানুষ হয়ে আসা ঈশ্বর। “. . . ঈশ্বর মানুষ হিসাবে প্রকাশিত হলেন” (১তীমথিয় ৩:১৬ পদ কেজেভি বাইবেল)

কলসীয় ১:১৬ পদ বলে, “. . . সকলই তাঁহার দ্বারা ও তাঁহার নিমিত্ত সৃষ্টি হইয়াছে . . .” বিবেচনা করুন ইব্রীয় ১:১-৩ পদ “ঈশ্বর পূর্বকালে বহুভাগে ও বহুরূপে ভাববাদিগণে পিতৃলোকদিগকে কথা বলিয়া, এই শেষ কালে পুত্রেই আমাদিগকে বলিয়াছেন। তিনি ইঁহাকেই সর্বাধিকারী দায়াদ করিয়াছেন, এবং ইঁহারই দ্বারা যুগকলাপের রচনাও করিয়াছেন। ইনি তাঁহার প্রতাপের প্রভা ও তত্ত্বেও মুদ্রাঙ্ক, এবং আপন পরাক্রমের বাক্য ধারণকর্তা হইয়া পাপ ধৌত করিয়া ঊর্ধ্বলোকে মহিমার দক্ষিণে উপবিষ্ট হইলেন।” 

আপনি দেখুন, সমস্ত জগৎ যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে এবং যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা সব কিছুই তুলে ধরা হয়েছে ও বহাল হয়েছে। তাঁর সৃষ্টি করার ক্ষমতা আছে এবং বিশ্বব্রহ্মণ্ড ধারণ ও ধরে রাখার ক্ষমতাও তাঁর আছে।

৯।    যীশু খ্রীষ্টের উপাদান (মাটি, বায়ু, আগুন ও পানি) এবং প্রাকৃতির শক্তির (আবহাওয়ার) উপর তার ক্ষমতা আছে। 

মথি ১৪:২৫ পদে যীশু পানির উপর একেবারে সোজাসুজি হেটেছেন এবং লূক ৮:২৪ পদে তিনি ঝড়-বাতাশকে ধমক্ দিলেন আর এই বাতাশ তাঁর কথার বাধ্য হলো। কীভাবে এ ধরনের কাজ তিনি করতে পারলেন যদি তিনি ঈশ্বর না হতেন? এখানে বুঝতে হবে যে যীশু এই সাগর শান্ত হওয়ার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেননি; সাগরকে তিনি নিজেই শান্ত করেছেন।

১০।    যীশু খ্রীষ্টের প্রতি সশ্রদ্ধ অনুভূতি প্রকাশ করা হয়েছে। অত্যন্ত ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে তাঁর প্রতি বিশেষ ভক্তিশ্রদ্ধায় প্রণিপাত করা তিনি গ্রহণ করেছেন। তিনি আরাধ্য হয়েছেন।

শিক্ষায় যদি আমাদের ভুল হয় যে প্রভু যীশু খ্রীষ্ট হলেন ঈশ্বর, তাহলে লোকদের তাঁকে আরাধনা/প্রণিপাত করতে দেওয়াও তাঁর জন্য অবশ্যই ভুল হচ্ছে, “তোমার ঈশ্বর প্রভুকেই প্রনাম করিবে কেবল, কেবল তাঁহারই আরাধনা করিবে” (মথি ৪:১০ পদ)। তিনি কেন তাঁর পরিচর্যার শুরুতে এমন কথা বলতে পারলেন এবং তাঁর পরিচর্যা কাজের সময় লোকদের তাঁকে প্রণিপাত করা, ভক্তিশ্রদ্ধা করা, তাঁর আরাধনা ও ভজনা তিনি গ্রহণ করেছেন?

প্রেরিত ১০:২৫-২৬ পদ এবং প্রকাশিত বাক্য ১৯:১০ পদে ঈশ্বর শুধু তাঁর নিজেকে ছাড়া অন্য কাউকে ভজনা করা, প্রণিপাত করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তবুও যীশু ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর জন-পরিচর্যার সময় আরাধনা, প্রণিপাত, ভজনা ও ভক্তিশ্রদ্ধা গ্রহণ করেছেন (যোহন ২০:২৮ পদ; মথি ৮:২; ৯:১৮; ১৫:২৫; ২৮:৯ পদ; যোহন ৯:৩৮ পদ)। যদি তিনি ঐশ্বরিক (ঈশ্বরত্ব) না হতেন, তাহলে তিনি কেন তাদের সংশোধন করেননি যারা তাঁকে প্রণিপাত করেছেন, তাঁর আরাধনা করেছেন?

প্রকাশিত বাক্যে একজন স্বর্গদূত প্রেরিত যোহনকে একমাত্র ঈশ্বরকে উপাসনা/ভজনা করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন (প্রকাশিত বাক্য ১৯:১০ পদ)। শয়তান যখন যীশুকে বলেছিল “তুমি যদি ভূমিষ্ঠ হইয়া আমাকে প্রণাম/প্রণিপাত কর, এই সমস্তই আমি তোমাকে দিব” তখন যীশু শয়তানকে বললেন “দূর হও, শয়তান; কেননা শাস্ত্রে লেখা আছে, “তোমার ঈশ্বর প্রভুকেই প্রণাম করিবে, কেবল তাঁহারই আরাধনা করিবে।” আমরা শাস্ত্রে দেখতে পাই যে যীশুকে প্রণাম করা হয়েছে তাঁকে ভূমিষ্ট হয়ে প্রণিপাত/উপাসনা করা হয়েছে, যা যীশু কখনো কাউকে বারণ করেন নাই, কারণ তিনি জানেন যে তারা উপযুক্ত কাজটাই করছে, তারা ঈশ্বরকে প্রণাম করেছে, তাঁকে প্রণিপাত করেছে ও তাঁর আরাধনা করছে (মথি ২:১১, ১৪:৩৩, ২৮:৯ ও ১৭ পদ; লূক ২৪:৫২ পদ; যোহন ৯:৩৮ পদ)। তিনি কখনোই তাঁকে উপাসনা/প্রণিপাত করার জন্য লোকদের ধমক দেন নাই। যদি যীশু ঈশ্বর না হতেন, তাহলে প্রকাশিত বাক্যের স্বর্গদূতের মতো তিনি তো লোকদের বলতেন যেন তারা তাঁকে উপাসনা/প্রণিপাত না করে। শাস্ত্রে এমন অনেক পদ ও অংশ আছে যা-কিনা যীশুর ঈশ্বরত্বের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরছে।

১১।    যীশু খ্রীষ্ট পাপ ক্ষমা করেন। 

“. . . প্রত্যেকে আপন আপন প্রতিবাসীকে ও আপন আপন ভ্রাতাকে আর শিক্ষা দিবে না; কারণ তাহারা ক্ষুদ্র ও মহান সকলেই আমাকে জ্ঞাত হইবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন; কেননা আমি তাহাদের অপরাধ ক্ষমা করিব, এবং তাহাদের পাপ আর স্বরণে আনিব না।” (যিরমিয় ৩১:৩৪ পদ)। এই কথা অনুসারে, এই হলেন ঈশ্বর যার পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা এবং সেই অধিকার তাঁর আছে। যাহোক, নতুন নিয়ম বলে যে যীশু খ্রীষ্টের এই ক্ষমতা আছে।

মার্ক ২:৫-১১ পদ লক্ষ করুন : “তাহাদের বিশ্বাস দেখিয়া যীশু সেই পক্ষাঘাতগ্রস্থকে কহিলেন, বৎস তোমার পাপ সকল ক্ষমা হইল। কিন্তু সেখানে কয়েক জন অধ্যাপক বসিয়াছিল; তাহারা মনে মনে এইরূপ তর্ক করিতে লাগিল, এই ব্যক্তি এমন কথা কেন বলিতেছে? এ যে ঈশ্বরনিন্দা করিতেছে; সেই এক জন, অর্থাৎ ঈশ্বর, ব্যতিরেকে আর কে পাপ ক্ষমা করিতে পারে? তাহারা মনে মনে এইরূপ তর্ক করিতেছে, ইহা যীশু তৎক্ষণাৎ আপন আত্মাতে বুঝিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরা মনে মনে এমন তর্ক কেন করিতেছ? কোন্টা সহজ, পক্ষাঘাতগ্রস্থ লোককে ‘তোমার পাপ ক্ষমা হইল’ বলা, না ‘উঠ, তোমরা শয্যা তুলিয়া বেড়াও’ বলা? কিন্তু পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করিতে মনুষ্য-পুত্রের ক্ষমতা আছে, ইহা যেন তোমরা জানিতে পার, এই জন্য- তিনি সেই পক্ষাঘাতগ্রস্থ লোককে বলিলেন- তোমাকে বলিতেছি, উঠ, তোমার খাট তুলিয়া লইয়া তোমার ঘরে যাও।”

যীশু খ্রীষ্ট হলেন ঈশ্বর, কারণ ঈশ্বর পাপ ক্ষমা করতে পারেন। এটা সত্য যে তিনি এই পৃথিবীতে তেত্রিশ বছরের জন্য একজন মানুষের গঠনে মানুষ ধারণ করেছিলেন, কিন্তু তিনি একইভাবে ঈশ্বর ছিলেন। ঈশ্বর মানুষ হিসাবে প্রকাশিত হলেন  (১তীমথিয় ৩:১৬ পদ)।

যীশুই যে ঈশ্বর তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ, যদি তিনি ঈশ্বর না হতেন তাহলে তাঁর মৃত্যু জগতের পাপের বেতন অর্থাৎ পরিশোধোর জন্য মূল্য দেবার জন্য যথেষ্ট হোত না (১ যোহন ২:২ পদ)। যীশু যদি ঈশ্বর না হতেন, তাহলে তিনি তো একজন সৃষ্ট প্রাণী; তাঁর পক্ষে অনন্ত অসীম ঈশ্বরের কাছে প্রয়োজনীয় অনন্তকালীন বেতন অর্থাৎ পরিশোধের জন্য মূল্য দেওয়া সম্ভব হোত না। একমাত্র ঈশ্বরই এই অনন্তকালীন বেতন অর্থাৎ পরিশোধের জন্য মূল্য দিতে পারেন। একমাত্র ঈশ্বর জগতের পাপভার বহন করতে পারেন (২ করিন্থীয় ৫:২১ পদ), মৃত্যুবরণ করে এবং পুনরুত্থিত হয়ে পাপ ও মৃত্যুর উপরে নিজেকে বিজয়ী প্রমাণ করতে পারেন।

১২।    যীশু খ্রীষ্টের তাঁর নিজের জীবনের উপর ও তাঁর মৃত্যুর উপর ক্ষমতা ছিল

আপনি কতো লোককে জানেন যারা তাদের নিজের জীবন দিতে পেরেছেন এবং তারপর তারা আবার তাদের জীবন ফিরিয়ে এনেছেন? যীশুর এই ক্ষমতা ছিল।

যোহন ১০:১৭-১৮ পদ বিবেচনা করুন: “পিতা আমাকে এই জন্য প্রেম করেন, কারণ আমি আপন প্রাণ সমর্পণ করি, যেন পুনরায় তাহা গ্রহণ করি। কেহ আমা হইতে তাহা হরণ করে না, বরং আমি আপনা হইতেই তাহা সমর্পণ করি। তাহা সমর্পণ করিতে আমার ক্ষমতা আছে; এবং পুনরায় তাহা গ্রহণ করিতেও আমার ক্ষমতা আছে; এই আদেশ আমি আপন পিতা হইতে পাইয়াছি।” 

যীশুর তার নিজের জীবন এবং তাঁর মৃত্যুর উপর তাঁর ক্ষমতা ছিল! যখন তিনি মৃত্যুবরণ করেন, তিনি নিজের ইচ্ছায় তাঁর নিজের আত্মা তুলে দিলেন। (লূক ২৩:৪৬ পদ)।

প্রকাশিত বাক্য ১:১৮ পদে তাঁর নিজের কথা অনুসারে, যীশু খ্রীষ্ট বলেছেন “আর মৃত্যুর ও পাতালের চাবি আমার হস্তে আছে।” যদি তিনি ঈশ্বর না-ই হতেন তাহলে তার এসব কেমন করে হতে পারতো?

Comments

Popular posts from this blog

উপবাস - বাইবেলের আলোকে উপবাস

প্রতিমা পূজা এমনকি মূর্তি সম্পর্কে বাইবেল কী বলে? What does the Bible says about idolatry or even image?

ঈশ্বর কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?