রেভারেন্ড (Reverend) কখনো মানুষের খেতাব নয়, যা একমাত্র ঈশ্বরেরই!!


এই নাম বা খেতাব শুধু ঈশ্বরেরই, কোনো মানুষের নয়

আজ যদি কেউ বাইবেল অনুযায়ী সঠিকভাবে চলার চেষ্টা করেন তিনি নানা রকম বাধা-বিপত্তি এমনকি দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হতে পারেন বলে ধরা যায়। পুরাতন শয়তান যাকে কিনা এ জগতের দেবতা বলা হয়, সে আজ বহু ব্যাপ্টিস্ট পালক ও প্রচারকদের তার নমুনানুযায়ী চালানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, আর তার সুবিধা মতো সেরকম একটা পরিস্থিতিতে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রভু তাঁর আদর্শানুুযায়ী সমস্ত কিছুতে সঠিকভাবে তাঁর মান স্থাপন করে গেছেন যা আমাদের সকলের খ্রীষ্টিয় জীবনযাপনে একটি সঠিক মান ও আদর্শ। কিন্তু পুরাতন শয়তানের মতো অবস্থা প্রায় অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়। শয়তান তার মতো হওয়ার জন্য প্রত্যেকের উপর চেষ্টা চালায়। আর তার মতো গড়া ঐরকম অনেকের চরিত্রগত মান দেখতে খুব উপযুক্ত মনে হয়, আর মনে হয় তারা আসলেই সঠিক। আর এভাবে শয়তান তাদের আত্মিক অসারতায় ঘুম পাড়িয়ে রাখতে এখনো পর্যন্ত সক্ষম, আর সে এ কাজে ব্যস্ত সারাক্ষণ। এখনো পর্যন্ত আমরা ঐ শয়তানের গড়া ব্যক্তির মতো হয়ে চলছি আর চিন্তা করছি আমরা যীশুর আদেশে সঙ্কীর্ণ ও দুর্গম পথে চলছি।

কিন্তু আমরা যখন বাইবেলের আদর্শ অনুযায়ী চলতে ব্যর্থ হই আমরা প্রকাশ্যে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করি। বাইবেলে ১শমূয়েল ১৫ অধ্যায়ে দেখি যে ঈশ্বর শৌলকে অমালেকীয়দের ভোগদখলে যা-কিছু আছে তার সমস্ত কিছুই একেবারে ধ্বংস ও বধ করার কথা বলেছেন, কিন্তু শৌল আর তার লোকেরা মনে করলেন যে প্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদানের জন্য তাদের সবকিছু বধ ও ধ্বংস না করে এর থেকে পছন্দসই ভালো ভালো মেষ, গরু ও জিনিস রাখা তাদের জন্য ভালো। ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তাদের এই বলিদানের চিন্তাকে খুব শাস্ত্রসংগত আর খুব ভালো মনে হয়। শাস্ত্র যে সময়ই যেভাবে চলতে বলে আর আমরা যখনই সেভাবে না চলে যদি অন্যভাবে চলি, আমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করি। শৌল, ঈশ্বর ও তাঁর স্পষ্ট নির্দেশের অবাধ্য হলেন। শৌল ভুলে গেলেন যে পাপ স্বভাবের মধ্যে কোনো কিছুই ভালো নয় আর তা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। বরঞ্চ ধর্মের নামে এর সবকিছুই দূর করে দিতে হবে অর্থাৎ ঈশ্বরের আদেশে তা অবশ্যই ধ্বংস করে দিতে হবে। শৌল মনে প্রাণে ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন না। তিনি মনে করেছেন, ঈশ্বরের বাক্য ভালো হলেও এত পবিত্র নয় যে, তা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পালন করতে হবে। দ্বিতীয় বিবরণ ৩১:২৪-২৭ পদে আমাদের বলে যে ঈশ্বরের বাক্য ঠিক সেই সমস্ত লোকদের বিরুদ্ধে একটি সাক্ষী, যারা তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করে। শৌল নিজের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ কষ্ট পাওয়া থেকে শিখেছেন যে ঈশ্বর যা বলেন তার থেকে নিজের বিবেচনায় অন্য কিছু করাটা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণ করা হয়। ঈশ্বরের কথা বিবেচনা না করে আমাদের নিজেদের চিন্তায় থাকাটা কতটুকু সফল বা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত সেটাই খাঁটি কথা। “বলিদান অপেক্ষা আজ্ঞাপালন উত্তম” যে-কোনো রকম বাহ্যিক উপাসনা, ঈশ্বরের সেবা, ব্যক্তিগত দান ইত্যাদি উৎসর্গ করার চেয়ে মনে প্রাণে ঈশ্বরের বাক্য পালন করা উত্তম। “হে প্রভু, হে প্রভু” নাম জপ নয়, কিন্তু ঐশ-বাণী কার্যে রূপায়িত করাই হলো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। বড়দিন কিংবা গুড্-ফ্রাইডের উৎসব, সমাজসেবা কিংবা অন্য সেবা তাৎপর্যহীন, যদি না প্রথমে ঈশ্বরের আদেশ কার্যকর হয়ে থাকে। 
    
বিষয়টা আমাদের মনে রেখে আমরা এখন দেখি যে ঈশ্বর তাঁর বাক্যে তাঁর প্রচারকদের জন্য কী আখ্যা, কী পদ বা কী খেতাব ও উপাধি রেখেছেন। ঈশ্বরের আহ্বানপ্রাপ্ত একজন প্রচারককে অন্যেরা তাকে অনুসরণ করেন, আর সেজন্য তাকে তাদের কাছে একটা দৃষ্টান্তস্বরূপ হতে হয়। তার জীবন, তার কর্ম, তার চর্চা বাইবেলের সাথে একমত হওয়া উচিত। তার আখ্যা, পদ, খেতাব বা উপাধি এমনই হওয়া উচিত যা-কিনা শাস্ত্রানুযায়ী। কেউ যদি সেরকম ইচ্ছা পোষণ করেন যে একজন প্রচারক কী ধরনের আখ্যা পদ, উপাধি বা খেতাব নিয়ে চলতে পারেন, তাহলে তিনি তা ঈশ্বরের বাক্যে সহজেই পেয়ে যাবেন। প্রেরিত ১৪:২৩ পদ পাঠ করি, “আর তাঁহারা তাহাদের জন্য প্রত্যেক মণ্ডলীতে প্রাচীনবর্গ (elders) নিযুক্ত করিয়া. . .” এছাড়াও তীত ১:৫ পদে পৌল তীতকে ক্রীতী-এর প্রতিটা নগরে প্রাচীনদের (elders) নিযুক্ত করতে বলেন। আমরা নিশ্চিতভাবে ধরে নিতে পারি ক্রীতী দ্বীপের প্রতিটা নগরে মণ্ডলী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পৌল তীতকে এর প্রতিটা নগরে প্রাচীনদের (elders) নিযুক্ত করতে বললেন।

Elder গ্রিক শব্দ "Presbuteros" থেকে এসেছে। জীবনকালে কোনো বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি কিংবা এমন কোনো ব্যক্তি যিনি কি-না বিদ্যা, জ্ঞান, চিন্তাধারায় উন্নত হন তিনিই পদমর্যাদায় হন প্রবীণ এবং গুরুদায়িত্বে থাকেন। পরজাতির বা যিহূদী জাতির মধ্যেও এমন হতো। মণ্ডলীগুলোতেও সেই একই শব্দ বা একই পদমর্যাদা দেওয়া হয়েছে যারা আত্মিক পরিচর্যার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখেন বা আত্মিকতার প্রতি সতর্ক ও সতত পর্যবেক্ষণরত সেবায় থাকেন।

প্রথম শতাব্দির মণ্ডলীগুলোতে Elder-দের নিয়ন্ত্রণ, শাসন, তত্ত্বাবধান, আদেশ-নির্র্দেশ, খবরদারী তদারকের দক্ষতা বা ক্ষমতার উপর এবং তাদের সামাজিক বা উচ্চ/সমৃদ্ধ জীবন-যাপনের উপর বা জনসাধারণের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের উপর ভিত্তি করেই তাদের নিযুক্ত করা হতো না কখনো। তাদের আত্মিক গুণসম্পন্ন, আত্মিক যোগ্যতাসম্পন্নতার কারণে তাদের মনোনীত করা ও নিযুক্ত করা হতো।    

আমরা নতুন নিয়মে মণ্ডলীগুলোতে বিশপদের (bishop) পাই, কিন্তু একজন বিশপের অভিষেক বা নিযুক্ত হওয়ার কোনো উপলক্ষ্য আমি দেখি না। বিষয়টা এভাবে দেখা যেতে পারে যে যখন কোনো মণ্ডলী দ্বারা পালকরূপে একজনকে প্রাচীন বলা হয় তাকে সেই মণ্ডলীর অন্যান্য প্রাচীনদের মধ্যে থেকে চিহ্নিত বা স্বতন্ত্র করার উদ্দেশ্যে তাদের একজনকে বিশপ বলা হয় যিনি ঐ মণ্ডলীতে থাকেন। অর্থাৎ এই বিশপ আগেই ঐ মণ্ডলীর একজন প্রাচীন - পালক, প্রচারক। কিন্তু ঐ প্রাচীনেরা যারা ব্যাপ্টিস্ট প্রচারক (যারা তখন শুধুমাত্র ঐরকম প্রচারক ছিলেন) তাদের নিযুক্ত বা অভিষিক্ত হওয়া ছাড়া অন্য আর কোনো দৃষ্টান্ত আমি বাইবেলে পাই না। শোনা যায় আজকাল এই ‘প্রাচীন’ খেতাব বা উপাধি সম্পর্কে আপত্তি করা হচ্ছে, কারণ, এই উপাধিটা অচল, এসব আর এখন চলে না, back-dated, আগেকার পুরানো সেকেলে উপাধি। কিন্তু ‘রেভারেন্ড (Reverend)' উপাধির কোনো আপত্তি আজ নেই বরং দিনে দিনে এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজকাল যারা প্রচার করেন তাদের প্রায় প্রত্যেকেই “রেভারেন্ড/Reverend” পদবিতে সম্বোধন করা হচ্ছে। তবে ঈশ্বরের আশির্বাদে অনেক অনেক খ্রীষ্টের পরিচর্যাকারীরা এই “রেভারেন্ড” নাম, খেতাব/উপাধি বা এই পদবি ব্যবহার করতে প্রত্যখ্যান করেছেন। কারণ তারা জানেন যে পালক/প্রচারকদের, সমস্ত বিশ্বাসীদের এই “রেভারেন্ড” খেতাব বা পদবি/উপাধি ব্যবহার করতে বাইবেল কখনো অনুমোদন করে না। এই “রেভারেন্ড” খেতাব বা পদবির ব্যবহারে সমস্ত বিশ্বাসীদের কাছে যাজক/পুরোহিত সম্পর্কে বাইবেল শিক্ষায় একেবারে বিপরীত, আর এতে খ্রীষ্টের কারণেই বড় বিভেদের কারণ হয়ে দাড়ায়।

যিশাইয় ১৪:১৩-১৪ পদে আমরা দেখি যে লুসিফর যে সমস্ত অবাককাণ্ড করতে যাচ্ছিল তাতে সে গর্বে একেবারে ফুলে যাওয়ার কথাই আমাদের বলে। আর “আমি পরাৎপরের তুল্য হইব” এই সমস্ত কথায় তাকে চরম অবস্থার দিকে নিয়ে গিয়ে ছিল। এর ফলে পরাৎপরের তুল্য হওয়ার পরিবর্তে সে উল্টোটা হয়েছে। সে এখনো পর্যন্ত বাহ্যিক অবস্থায় চেহারাগতভাবে পরাৎপরের তুল্য হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থেমে নেই। আমরা এখনো পর্যন্ত সমস্ত ও সম্পূর্ণ বাইবেলে - এমনকি সমস্ত ইংরেজি অনুবাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় কিং জেমস্ এর ইংরেজিতে অনুবাদ করা বাইবেল "King James Bible" এর  সম্পূর্ণ বাইবেলে গীতসংহিতা ১১১:৯ পদে শুধুমাত্র এই একবারই reverend (রেভারেন্ড) নাম, উপাধি বা খেতাবটা দেখতে পাই। বাইবেলে লেখা আছে - "He sent redemption unto his people: he hath commanded his covenant for ever: holy and reverend is his name" আর বাংলা বাইবেলে “তিনি আপন প্রজাদের কাছে মুক্তি পাঠাইয়াছেন; তিনি চিরকাল তরে আপন নিয়ম স্থির করিয়াছেন; তাঁহার নাম পবিত্র ও ভয়াবহ/reverend।” আমরা শাস্ত্রের এই অংশে একবারই মাত্র, শুধুমাত্র ঈশ্বরকেই এই ‘রেভারেন্ড’ উপাধিতে উপযোগী হতে দেখি অর্থাৎ তিনি তাঁর নিজেকেই এই ‘রেভারেন্ড’ নামে বা খেতাবে উল্লেখ করেছেন। এখানে এর আবেদন ও বাস্তবক্ষেত্রে এর দাবি এক শর্তে ঈশ্বরের, কোনো মানুষের নয়। শব্দটি বাইবেলের মূল ভাষায় প্রায়ই ব্যবহার হতে দেখতে পাওয়া যায়, কিন্তু এটা সব সময়ই ঈশ্বরকে উদ্দেশ্য করে, আর মানুষকে উদ্দেশ্যে করে কখনো নয়। (বাংলা বাইবেলে রেভারেন্ড-এর অনুবাদে ভয়াবহ, ভয়ঙ্কর, ভয়, ভক্তি, শ্রদ্ধা/শ্রদ্ধেয় শব্দগুলো দেখা যায়)। শুধু ঈশ্বরের জন্যই এই reverend (রেভারেন্ড) নাম, পদ, আখ্যা, উপাধি বা খেতাব। পুরাতন এই শয়তান নিজেকে ঈশ্বরের এই নাম বা খেতাব/উপাধিতে কখনোই ধারণ করতে পারে না, কিন্তু প্রভুর আহ্বানপ্রাপ্ত নিজের কোনো প্রচারক যদি এই খেতাব/উপাধি পেয়ে থাকেন, তাহলে তিনি এতে সার্থক বোধ করতে পারেন। আমি ঠিক সেই ইঙ্গিতে এমন কথা বলছি না যে ব্যাপ্টিস্ট প্রচারকেরা যারা ‘রেভারেন্ড’ উপাধিতে বা খেতাবে আছেন তারা “পরাৎপরের তুল্য” হবার চিন্তায় আছেন। আজ অভিষিক্ত প্রচারকদের তাদের উপাধিরূপে এই ‘রেভারেন্ড’ বলে ডাকা হয়, কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি না যে এসব ঠিক। যাদের দ্বারা রোমান কাথলিক মণ্ডলী গঠন হয়েছে তারাই প্রথম তাদের জন্য এই আখ্যা, পদ, খেতাব বা উপাধি নিয়েছিলেন। এভাবে মানুষেরা priest, popes এবং তাদেরকে "holy," "most holy," "his holiness," "father," এবং "reverend" দাবি করায় তারা ইচ্ছকৃতভাবে খ্রীষ্টের স্থান জবরদখল করে আছেন। কিন্তু আমার নিজেকে যদি ঐ আখ্যা, পদ, খেতাব বা উপাধি ধারণ করতে হয়, আমি একেবারেই বিশ্বাস করি যে ঈশ্বর তা ঠিক করবেন আমার উপাধির বিষয়ে, কিন্তু আমার নিজের চিন্তায় বা কোনো মানুষের বিবেচনায় নয়।

আমার যতদূর জানার সুযোগ হয়েছে যে রেভারেন্ড (reverend) উপাধি নিছক মানুষের সম্পর্কে বাইবেলের নতুন নিয়মে প্রাচীনদের নিযুক্ত বা অভিষিক্ত হওয়ার বহু পরে, অনেক পরে, প্রায় চৌদ্দশত বছর পরে ছাড়া এর আগে কখনো ব্যবহার করা হয়নি। গীতসংহিতা ১১১:৯ পদে রেভারেন্ড (reverend) কথাটি হিব্রু শব্দ YARE থেকে এসেছে। এই YARE শব্দটা শাস্ত্রে ৩০০ বারেরও বেশি ব্যবহার হয়েছে, কিন্তু বাইবেলে (গীতসংহিতা ১১১:৯ পদে) এই একবারই মাত্র ঐ YARE শব্দের রেভারেন্ড (reverend) শব্দে অনুবাদ করা হয়েছে। এই YARE এর অন্যান্য অর্থ হলো "dreadful (ভয়াবহ), feared (ভয়শীল), terrible (ভয়ঙ্কর)” আর আমার মনে হয় ‘রেভারেন্ড (reverend)' এর চেয়ে terrible অর্থাৎ ভয়ঙ্কর উপাধিটা কিছু কিছু প্রচারকদের জন্য মানানসই বটে।

(মালাখি ১:১৪ - ভয়াবহ), (দ্বিতীয় বিবরণ ৭:২১, ১০:১৭ - ভয়ঙ্কর), (গীতসংহিতা ৭৬:৭ - ভয়াবহ)   

Oxford Universal Dictionary অনুসারে, ১৪৪৯ সালে সুপরিচিত খ্যাতিমান ব্যক্তির স্বভাব, চরিত্র, বৈশিষ্ট্য, কৃতিত্ব প্রসংসায় যোগ্য শ্রদ্ধার পাত্র, মানসিক নৈতিক গুণাবানে গুণবান এবং বয়সের ক্ষেত্রে বিবেচনা করে প্রথম ‘রেভারেন্ড (reverend)’ আখ্যা, খেতাব বা উপাধিটা উল্লেখ করা হয়েছে।  ডিকসনারিতে এভাবে বর্ণনা করে যে এই উপাধি গির্জার কোনো যাজক অর্থাৎ যারা ঈশ্বরের ও মণ্ডলীর সেবায় অভিষিক্ত হন - যেমন ডিকন, পুরোহিত ও বিশপ নামে আছেন তাদেরকে উচ্চ সম্মান ও শ্রদ্ধায় এই ‘রেভারেন্ড (reverend)' উপাধিটা দেওয়া হয়। ১৪৮৫ সালে কাথলিক মণ্ডলীর ডিনদের (Dean) অর্থাৎ কিছু কিছু যাজকদের মধ্যে প্রধান বা বয়োবৃদ্ধ যাজক; প্রধান পালপুরোহিতদের "Very Reverend" উপাধি দেওয়া হতো, আর বিশপদের বলা হতো "Right Reverend" ঈশ্বরের নাম ও উপাধি কেবলই রেভারেন্ড (reverend), সুতরাং যথাযথভাবে ঈশ্বরের চেয়ে ঐ ডিনদের আর বিশপদের আরো উচ্চ শ্রদ্ধা ও আরো বেশি সম্মান দেওয়া হয়। তারা ডিনদের জন্য "Very Reverend" আর বিশপদের জন্য "Right Reverend" ব্যবহার করতেন। এতে দেখা যেতো যে এই সময়ে মানুষ ঈশ্বরকে অনেক পেছনে রেখে, ঈশ্বরকে ছাড়িয়ে কি-না তারা সন্তুষ্ট থাকতে চেয়েছে। কিন্তু এতে দেখা যায় যে মানুষের মাংসিক/অনাত্মিক অর্থাৎ ভোগবাসনার কোনো সীমা নেই, শুধু পরাৎপরের তুল্য হওয়ার মতই নয়, কিন্তু ঈশ্বরকে একদম পিছনে রেখে, তাঁকে ছাড়িয়ে নিজেদের এগোনো। 

এভাবে ১৬৪২ সালে আর্চবিশপ, মহাধর্মপালকে "Most Right Reverend" বলে ডাকা শুরু হলো। আপনি এখন ঠিক এই Most Right এর চেয়েও আর কতো বেশি রেভারেন্ড (reverend) অর্থাৎ আর কত বেশি পবিত্র (ভয়াবহ, ভয়শীল, ভয়ঙ্কর) হতে পারেন? যেখানে ঈশ্বরের নাম ও উপাধি কেবলই রেভারেন্ড (reverend)। ১৬৫৬ সালের তিন বছর পরে ঠিক দুশো বছর পূর্বে Southern Baptist Convention-এর জন্ম হয়, সামগ্রিকভাবে দেখলে আর সবকিছু বিচারে দেখা যায় যে, clergy অর্থাৎ মণ্ডলীর সেবায় অভিষিক্ত পালক, প্রচারক, শিক্ষকের দায়িত্বে যারা আছেন তাদেরকে রেভারেন্ড (reverend) পদ বা উপাধি দেওয়া হয়েছে। কাথলিক মণ্ডলী ইতোমধ্যেই মানুষের রক্ষার দায়িত্ব নিজেরা নিয়েছেন। তারা মানুষের মাথায় কিছুটা জল ছিটিয়ে দেন আর এতেই আপনার সব হয়ে যায়। তারা পাপ ক্ষমা করার দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনার যদি টাকা-পয়সা থাকে, আর আপনার পাপ থেকে থাকলে তা স্বীকার করলেই ক্ষমা হয়, এমনকি আবার পরের সপ্তাহেও স্বীকার করার জন্য আবারো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে জগতের মধ্যে এটাই সবচেয়ে সুবিধাজনক ধর্ম। তাই তারা এখন মানুষের পরিত্রাণ ও তাদের পাপ ক্ষমার বিষয়ে ঈশ্বরের বিশেষ দায়িত্ব বা তাঁর কর্মটা এনারা নিজেরা করার জন্য নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছেন, আর তাদের জন্য এই ক্ষুদ্র কর্মে তারা শুধু ঈশ্বরের জন্য সেসব উপাধি, পদ ও খেতার ধারণ করে আছেন। ২থিষলনীকীয় ২:৩,৪ পদগুলো পাঠ করে দেখুন, পাপী মানুষের সর্বোচ্চ তুঙ্গে থাকার কথা, ঈশ্বরের সম্মান নিয়ে নিজেকে বড় করে দেখানোর কথা, এমনকি অনেকের নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করার কথা বলা আছে। কিন্তু আপনি যদি প্রকাশিত বাক্য ১৯:২০ পদ লক্ষ্য করেন, তাহলে দেখবেন যে আমাদের প্রভু ঐ পুরাতন অসৎ ও শঠ ব্যক্তিকে ও তার নমুনানুযায়ী চলার সমস্ত পাপীদের হত্যা করেই সব ঝামেলা শেষ করবেন না, কিন্তু তিনি তাদের জীবন্ত অবস্থায় জ্বলন্ত গন্ধকময় অগ্নিহ্রদে ছুড়ে ফেলবেন অনন্তকাল জ্বলবার জন্য, যে জ্বলনের কোনো শেষ নেই।

আজ এখনও পর্যন্ত “রেভারেন্ড” উপাধি বেশ জনপ্রিয়, তবে এটা স্মরণ করলে আশ্চর্য হতে হয় যে যীশুকে তো নয়-ই এমনকি তাঁর কোনো শিষ্যকেও এই উপাধি ব্যবহার করতে দেখা যায়নি, এমনকি মানুষের দেওয়া অন্য কোনো উপাধিও তারা ব্যবহার করেনি। কখনো “রেভারেন্ড পৌল” বলে উল্লেখ করা হয়নি; “রাইট রেভারেন্ড যোহন” বলেও না বা “রেভারেন্ড মি: পিতর” বলেও না। “রেভারেন্ড” এর মতো এই উপাধি ব্যবহার করায় খ্রীষ্টের বিনয় নম্র সেবকদের তাদের খ্রীষ্টের সেবা ও পরিচর্যার মনোভাবকে বিপরীত দিকে একেবারে উল্টো দিকে নিয়ে যায়, তাদেরকে মনোভাবকে অন্যদিকে সড়িয়ে যায়।

পৌল বলেছেন, “কিন্তু আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ক্রুশ ছাড়া আমি যে আর কোনো বিষয়ে শ্লাঘা (গর্ব) করি, তাহা দূরে থাকুক; তাহারই দ্বারা আমার জন্য জগৎ এবং জগতের জন্য আমি ক্রুশারোপিত।” (গালাতীয় ৫:১৪ পদ)। অন্য কথায় পৌল বলেছেন যে তিনি প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ক্রুশ ছাড়া অন্য কিছুতেই যেন গর্ব না করেন। তিনি তার পত্রগুলোতে বহুবার খ্রীষ্টের সেবায় তিনি নম্র মনোভাব দেখিয়েছেন। পৌল সুশিক্ষিত ছিলেন তিনি মানবীয় উপাধি/পদ ও খেতাব দাবি করতে পারতেন, কিন্তু তিনি ঐসবের সমস্ত কিছু একমাত্র খ্রীষ্টের জন্য দিতে পছন্দ করেছেন (দেখুন: ফিলীপিয় ৩:১-৭ পদ)। তিনি তার লেখা কিছু কিছু পত্রে লিখেছেন, “পৌল, যীশু খ্রীষ্টের দাস”। অনেক বার তিনি নিজেকে সাদামাটাভাবে “একজন দাস” বা “দাসত্বে আবদ্ধ” হিসাবে উল্লেখ করেছেন। প্রভুর এই দাস ১থিষলনীকীয় ২:৬ পদে কী বলেছেন তা মনোযোগ দিয়ে পাঠ করুন “কিন্তু ঈশ্বর যেমন আমাদিগকে পরীক্ষাসিদ্ধ করিয়া আমাদের উপরে সুসমাচারের ভার রাখিয়াছেন, তেমনি কথা কহিতেছি; মনুষ্যকে সন্তুষ্ট করিব বলিয়া নয়, কিন্তু ঈশ্বর, যিনি আমাদের অন্তঃকরণ পরীক্ষা করেন, তাঁহাকে সন্তুষ্ট করিব বলিয়াই কহিতেছি। কারণ, তোমরা জান, আমরা কখনও চাটুবাদে কিম্বা লোভের জন্য ছলে লিপ্ত হই নাই, ঈশ্বর ইহার সাক্ষী; আর মনুষ্যদের হইতে সম্মান পাইতে চেষ্টা করি নাই, তোমাদের হইতেও নয়, অন্যদের হইতেও নয় . . . ” মানুষের তৈরি ধর্মে “রেভারেন্ড” এর মতন পদ/উপাধি চাওয়া নিজের পদোন্নতি বা উচ্চপ্রশংসার মতো মর্যাদা পাওয়ার ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা থেকেই আসে। আমাদের অবশ্যই খ্রীষ্টের কথা স্বরণ করা উচিৎ: “তোমাদের মধ্যে সেইরূপ হইবে না; কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেহ মহান হইতে চায়, সে তোমাদের পরিচারক হইবে; এবং তোমাদের মধ্যে যে কেহ প্রধান হইতে চায়, সে তোমাদের দাস হইবে; যেমন মনুষ্যপুত্র পরিচর্যা পাইতে আইসেন নাই, কিন্তু পরিচর্যা করিতে, এবং অনেকের পরিবর্তে আপন প্রাণ মুক্তির মূল্যরূপে দিতে আসিয়াছেন” (মথি ২০:২৬-২৮ পদ)।

যারা খ্রীষ্টের পরিচর্যা করেন তাদের বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে যারা কি-না “রেভারেন্ড” এর মতো পদ/উপাধি ব্যবহার করেন তারা ঐ খ্রীষ্টের পরিচর্যাকারীদেরকে ভ্রান্ত ধারনা দিয়েই যাচ্ছেন। পিতর সমস্ত খ্রীস্টিয়ানদের উল্লেখ করেছেন যেন কোনো Clergy অর্থাৎ ডিকন, প্রচারক, পাস্টর, শিক্ষক ও বিশপকে “পবিত্র যাজকবর্গ”-রূপে (১পিতর ২:৫) বিবেচনা না করে। এই ধর্মীয় জগতে যাজক/সাধারণ খ্রীষ্টবিশ্বাসীদের মধ্যে মানুষের তৈরি একটা বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। যদিও অনেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নেওয়ার কারণে এবং প্রভুর সেবার জন্য বিশেষ আকাক্সক্ষায় পরিচর্যা করেন কিংবা প্রচারক হয়েছেন (কোনো খেতাবে নয় বরং সেবার আগ্রহের শর্তে) আর হয়তো তাদের পরিচর্যাকারী (সেবক) বলা যেতে পারে। প্রকৃতপক্ষে প্রতিটা খ্রীষ্টিয়ান-ই হলেন একজন পরিচর্যাকারী, কিংবা সেবক, যখন ঈশ্বরের সেবা করেন। আমাদের প্রয়োজন প্রত্যেক বিশ্বাসীদের খ্রীষ্টের সেবার জন্য যাজকত্বর ধারণা পুনস্থাপন করা। আমরা প্রত্যেক খ্রীষ্টবিশ্বাসীরই এক একজন যাজক। যীশ বলেছেন “কিন্তু তোমরা ‘রব্বি’ বলিয়া সম্ভোষিত হইও না, কারণ তোমাদের গুরু এক জন, এবং তোমরা সকলে ভ্রাতা। আর পৃথিবীতে কাহাকেও ‘পিতা’ বলিয়া সম্ভোধন করিও না, কারণ তোমাদের পিতা এক জন, তিনি সেই স্বর্গীয়। তোমরা ‘আচার্য’ বলিয়া সম্ভোষিত হইও না, কারণ তোমাদের আচার্য এক জন, তিনি খ্রীষ্ট।” (মথি ২৩:৮-১০ পদ) 

একজন প্রচারকের জন্য পদ, উপাধি বা খেতাব সম্পর্কে নতুন নিয়মে দুইটা প্রমাণ ও সঠিক তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটা শাস্ত্রানুযায়ী হলো ‘প্রাচীন (elder)'। অন্যগুলো ঈশ্বর তাঁর প্রচারকদের বাইবেলভিত্তিক বিকল্পস্বরূপ পদ, আখ্যা, খেতাব/উপাধি দিয়েছেন। তাই এ বিষয়ে আমার কাছে মনে হয় যে, ব্যাপ্টিস্ট প্রচারকেরা যদি তাদের আসল পদ বা উপাধির খোঁজ করেন, তারা তাদের জন্য কাথলিক মণ্ডলীর থেকে পাওয়ার চেয়ে বরঞ্চ তারা তাদের জন্য ঈশ্বরের বাক্যে দেওয়া উপাধি শ্রেয় মনে করবেন। ব্যাপ্টিস্টরা যদি কাথলিকদের ঐ সমস্ত কিছু অপ্রয়োজনীয় বলে ছুড়ে ফেলে দেন যা তারা শত শত বছর ধরে যুগিয়ে আসছে, তাহলে বাইবেলে সত্যের যে বহু সুযোগ রয়েছে তা তারা পেয়ে যাবেন।

Pastor (পাস্টর/পালক) হলেন স্থানীয় মণ্ডলীর নেতৃত্বের মহা পদাধিকারে দায়িত্ববান ব্যক্তি। পালক বা পাস্টর (Pastor) হলো তার আখ্যা বা পদ। নতুন নিয়মে একই পরিচর্যার জন্য তিনটা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে: পালক (Pastor), প্রাচীন (elder) এবং বিশপ (bishop) পদ, আর এই পদগুলো মণ্ডলীর পরিচর্যায় তিনটা আলাদায় একই পদ বা দায়িত্ব উল্লেখ করা হয়েছে, তীত ১:৫,৭; ১পিতর ৫:১,২,৪; প্রেরিত ২০:১৭,২৮ পদগুলোর তুলনা করলে দেখা যায় ঐ নামগুলো একই পদের অদলবদল হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে অথচ এই পদের ভিন্ন ভিন্ন বিষয় আলাদা আলাদাভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। একটা নতুন নিয়ম মণ্ডলী হচ্ছে বাপ্তাইজিত বিশ্বাসীদের একটা সংঘবদ্ধ দল। তীত ১:৫ পদ অনুসারে এই দল বা মণ্ডলীর শৃঙ্খলার জন্য প্রয়োজন নেতৃত্বের আর নেতৃত্ব আসে পালকের মাধ্যমে। পালক (Pastor-পাস্টর)-কে মণ্ডলীর নেতারূপে দলের মেষপালক (shepherd) উল্লেখ করা হয়েছে যেন শিক্ষা দেওয়াই তার কাজ হয়, আর মণ্ডলীকে শিক্ষাদানে প্রতিপালন এবং সুরক্ষা করে রাখেন। পালক হচ্ছেন “রক্ষাকারী ছাতা” যার অধীনে একটা মণ্ডলী থাকে বিপদমুক্ত। ভ্রান্ত শিক্ষক ও শিক্ষা, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও শয়তানের আক্রমণ থেকে মণ্ডলীর সদস্যদের রক্ষা করার জন্য সব সময় সজাগ থাকতে হবে। একজন পালক একনায়ক হবেন না - ১পিতর ৫:৩ক, কিন্তু মণ্ডলীর সব রকম পরিচর্যায়, প্রতিটা সিদ্ধান্তে স্পষ্ট নেতৃত্ব দান করতে হবে। গ্রিক শব্দ poimen থেকে Pastor অনুবাদ, যা নতুন নিয়মে ১৬বার “মেষপালক (shepherd)” বলে উল্লেখ আছে (মথি ৯:৩৬; ২৫:৩২; ২৬:৩১; মার্ক ৬:৩৪; ১৪:২৭; লূক ২:৮, ১৫, ১৮, ২০; যোহন ১০:২, ১১, ১২, ১৪, ১৬; ইব্রীয় ১৩:২০)। নতুন নিয়মে গ্রিক ভাষায়, “পাল চড়ানোকে” আক্ষরিক অর্থে “পালের পালক” (প্রেরিত ২০:২৮; ১পিতর ৫:২) এটা একই মূল শব্দ থেকে পালক (Pastor) এবং মেষপালক (shepherd) অনুবাদ। প্রাচীন (elder)-কে পরিপক্বতায় ও দায়িত্বে মণ্ডলীর নেতায় নির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং সত্য সত্যই তাকে মণ্ডলীর একজন আদর্শবান হতে হয়। বিশপ (bishop)-কে মণ্ডলীর কর্তৃত্বে নেতায় নির্দিষ্ট করা হয়েছে, প্রকৃত অবস্থায় তিনি মণ্ডলীকে পরিচালনা দেন। গ্রিক শব্দ অনুবাদ “বিশপ (bishop)" ছাড়াও “অধ্যক্ষ (oversee)" হয়েছে (প্রেরিত ২০:২৮; ১পিতর ৫:২)। ব্যাপ্টিস্টরা সাধারণত ‘পাস্টর/পালক’ শব্দটা ব্যবহার করেন, কারণ খ্রীস্টান সমাজে অন্য দুইটার অপব্যবহার হচ্ছে।

ঐসব আখ্যায় তাদের আচরণের ধরণ অনুযায়ী মণ্ডলীতে তাদের একই পদ বা দায়িত্বে থাকতে দেখা যায়। তীত ১:৫,৭ পদে “প্রাচীনেরা (elders)" এবং  “বিশপেরা (bishops)" একে অপরের স্থলে কার্যকর হয়েছে। প্রেরিত ২০ অধ্যায়ে এসব পদ বা আখ্যা একই পদ বা দায়িত্বে প্রয়োগ হয়েছে। ১৭ পদে ম-লীর নেতাদের প্রাচীন (বষফবৎ) বলা হয়েছে। ২৮ পদে বিশপ (bishop) এবং পালক (Pastor) এর জন্য গ্রিক শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ১পিতর ৫ অধ্যায়েও এসব পদ, দায়িত্ব মণ্ডলীতে একই পদ ও দায়িত্বে উল্লেখ করা হয়েছে। ১পদে “প্রাচীনবর্গ (elders)" বলে, আর ২ পদে এসব অধ্যক্ষদের (bishops) আর মেষপালকদেরও সেভাবে প্রাচীনদের (elders) বলে। সত্য সত্যই এসব পদ বা দায়িত্ব বিশেষ ইঙ্গিতে একে অপরের স্থলে ব্যবহৃত হয়েছে। একজন পালক-ই (pastor) হলেন প্রাচীন (elder) আর হলেন অধ্যক্ষ (bishop) এখানে আলাদা কোনো সেবা, পরিচর্যা বা পদাধিকার নেই।

আমরা নতুন নিয়ম-এ পরিত্রাণের কথা পাই, অনন্ত জীবনের কথা পাই, পাই নতুন জীবনের কথা। বিশ্বাসীদের মণ্ডলীর গঠনের কথা পাই যা আমরা আজও অনুসরণ করছি। আমরা পাই পালক ও প্রচারকের আহ্বানের কথা, তাদের গড়ে উঠার কথা ও তাদের দায়িত্বের কথা। নতুন নিয়মে কখনো কোনো শিষ্যকে এমনকি প্রেরিত পৌলকেও কখনো ‘রেভারেন্ড’ ব্যবহার করতে দেখা যায় নাই বা কেউ কাউকে এই উপাধিতে সম্বোধন করেছেন বলেও দেখতে পাওয়া যায় না। বাইবেলের ঈশ্বরভক্ত পবিত্র ব্যক্তিরা শাস্ত্র জানতেন। তারা জানতেন এই রেভারেন্ড - পবিত্র (ভয়াবহ, ভয়ঙ্কর, ভয়শীল) তিনি কে, আর এনারা তাঁরই ভজনা করতেন আর তাদেরই একজনের কথা “আর মনুষ্যদের হইতে সম্মান পাইতে চেষ্টা করি নাই, তোমাদের হইতেও নয়, অন্যদের হইতেও নয়” ১থিষলনীকীয় ২:৬ পদ।

‘তোমরা ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম অনর্থক লইও না . .’  যাত্রাপুস্তক ২০:৭ পদ।
‘হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক’ আমেন।

Comments

Popular posts from this blog

উপবাস - বাইবেলের আলোকে উপবাস

প্রতিমা পূজা এমনকি মূর্তি সম্পর্কে বাইবেল কী বলে? What does the Bible says about idolatry or even image?

ঈশ্বর কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?